নারী অধিকার ও ইসলাম – দ্বিতীয় পর্ব

 আসিফ আলম, নতুন গতি, বহরমপুর – নারীর অধিকার কী? নারীর অধিকার হলো সেই সমস্ত অধিকার যা-নারীকে আইনগত ও সামাজিক অবস্থান আদায় করে দেয় যেগুলো পুরুষ ভোগ করছে এবং তাতে পুরুষের অধিকার রয়েছে। অর্থাৎ আমরা এ কথা বলতে পারি যে, পুরুষেরা যে সমস্ত অধিকার ভোগ করে নারীদেরকেও অনুরূপ সুযোগ সুবিধা দেয়াকে নারী অধিকার বলে। ইসলাম নারী-পুরুষের অধিকারসমূহ সমান্তরালভাবে দিয়েছে। ইহা সমান বটে কিন্তু একই রকম নয়। ইসলামী শিক্ষার দৃষ্টিকোণ থেকে নারী-পুরুষ একে অপরের পরিপূরক।নিম্মে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নারী অধিকার আলোচনা করা হলোঃ-

    ১. নারীর ধর্মীয় অধিকার – ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে বোঝা যায় যে, ইসলাম নারী ও পুরুষের সমান অধিকার নির্ধারণ করেছে। ইবাদত-বন্দেগি, নামাজ, রোজা, হজ, যাকত, জিকির-আযকার, দান-খয়রাত সকল ক্ষেত্রে সমান ঘোষণা করেছে।

    যেমনঃ ৩।আল্লাহতায়ালা সূরা নিসার ১২৪ নম্বর আয়াতে ঘোষণা করেছেন, “যে ব্যক্তি কোন ভালো কাজ করবে পুরুষ হোক বা নারী হোক সে যদি ঈমানদার হয় অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে এতে বিন্দুমাত্র বঞ্চিত করা হবে না।” এ আয়াতের আল্লাহতায়ালা নারী ও পুরুষের জন্য জান্নাত লাভের ক্ষেত্রে জেন্ডার বা লিঙ্গের কোন শর্তারোপ করেননি বরং তিনি কর্মের কথা বলে নারী-পুরুষের সমান অধিকারের কথা উল্লেখ করেছেন।

     

    ২. নারীর সামাজিক অধিকার ইসলাম নারীকে যে সামাজিক মর্যাদা দিয়েছে তা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। সামাজিক ক্ষেত্রে নারীদেরকে ইসলাম শুধু পুরুষের সমান অধিকারই দেয়নি বরং অনেক অনেক বেশি অধিকার দিয়েছে। ইসলাম-পূর্ব আরব সমাজে কন্যাসন্তানকে জীবন্ত কবর দিয়ে নিজেদেরকে গর্বিত মনে করত। জাহিলিয়াত এখনও নির্মূল হয়নি  ভারত সহ বিভিন্ন দেশে  গর্ভে ভ্রƒণ সনাক্ত করে কন্যাসন্তান হলে তাকে পৃথিবীতে আগমনের পূর্বেই মাতৃগর্ভে হত্যা করা হয়।

    ইসলাম শুধু কন্যাসন্তান হত্যা হারামই করেনি বরং পুত্রসন্তান হলে আনন্দ অনুষ্ঠান আর কন্যা সন্তান হলে মুখ কালো হওয়াকে ঘৃণার সাথে প্রত্যাখ্যান করেছে। উপরন্তু ইসলাম কন্যাসন্তানকে উত্তমভাবে লালন পালনের জন্য নির্দেশ দিয়েছে। মুসনাদে আহমদ এ-বর্র্ণিত হয়েছে যে, রাসূল (সা) বলেছেন, যে ব্যক্তির দু’টি কন্যাসন্তান জন্মলাভ করবে আর তাকে ভালোভাবে লালন পালন করবে সে ও আমি জান্নাতে এমনভাবে পাশাপাশি অবস্থান করব।”