কার্তিক পুজোর শোভাযাত্রায় 'ডিজের' আওয়াজ কমাতে বলায় মারের অভিযোগের পাল্টা মাইক-লাইট সংগঠনের পথসভা শান্তিপুরে

শরিফুল ইসলাম (শান্তিপুর) নতুন গতি: কার্তিক পুজোর ভাসানের শোভাযাত্রায় মাইক-বাজানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিবেশ কর্মী ও লাইট মাইক ব্যবসায়ীদের মধ্যে গণ্ডগোলের জেরে চরম অস্বস্তির পরিবেশ তৈরি হয়েছে মাধ্যমিক টেস্ট চলাকালীন শান্তিপুরে।
গতকাল, মঙ্গলবার, পরিবেশ ভাবনা মঞ্চের উদ্যোগে বাসস্ট্যান্ডে ছিল কার্তিক পুজোর শোভা যাত্রায় উচ্চ স্বরে ডিজে বক্স বাজানোয় পরিবেশ কর্মীদের মারধরের অভিযোগে এক প্রতিবাদী সভা।
প্রতিবাদী সেই শোভার পাল্টা হিসাবে আজ, বুধবার , একই স্থানে শান্তিপুরের মাইক ও লাইট সংগঠনের পক্ষ থেকে ডাকা হয় পাল্টা ধিক্কার সভা।
উল্লেখ্য, সোমবার কার্তিক পুজোর ভাসান চলাকালীন তারস্বরে মাইক বাজনোর অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ করলে শান্তিপুরের কয়েকজন পরিবেশ কর্মী ও পুজোর উদ্যোক্তাদের মধ্যে ধুন্ধুমার বাঁধে । পুজো কমিটি ও পরিবেশ কর্মীদের বচসার জেরে মাইক বক্স ও তার যন্ত্রাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আক্রান্ত হন পরিবেশ কর্মী। ঘটনায় মাইকম‍্যান গ্রেফতার হ’ন পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আক্রান্ত পরিবেশ কর্মীকেও হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।
পরিবেশ কর্মীর আক্রান্তের প্রতিবাদ ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তারস্বরে ডিজে সহ একাধিক শব্দ যন্ত্রের দানবীয় আচরণের বিরুদ্ধে জনসচেতনার উদ্দেশ্যে শান্তিপুর পরিবেষ ভাবনা মঞ্চের পরিচালনায় একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে শান্তিপুর ডাকঘর বাসস্ট্যান্ড সন্নিকটে পৌরবাজারে এক পথসভা সংগঠিত হয়।
শান্তিপুর থানা অঞ্চল মাইক ও লাইট ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে আজকের সভা ছিল পাল্টা ।
সভায় মাইক ব্যবসায়ী সমিতির বক্তারা বলেন, ডিজে বক্স বলে যা দাবি করা হচ্ছে তা আদতে মাথায় ফ্লাশিং আলো দিয়ে ম্যানুয়ালি তৈরি ১২/ ১৫ সাউন্ডবক্স । একটা ডিজে বক্স’র মূল্য কমপক্ষে ১৫ লক্ষ এবং তার একদিনের ভাড়া ৩০ থেকে চল্লিশ হাজার যা শান্তিপুরে চালানো সম্ভব নয়। পরিবেশ কারো পৈতৃক সম্পত্তি নয় , পরিবেশ নিয়ে আমরাও ভাবিত। এই পরিবেশেই বেড়ে উঠছে আমাদের ছেলে-মেয়েরাও। আমরা চাই ভুলবোঝাবুঝির অবসান হউক। সবাই মিলে-মিশে চলি। কিন্তু, আমাদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে আক্রমণ এলে আমরা সংগঠিত হবো শুধু নয় প্রয়োজনে রাস্তায় নামবো। আন্দোলন করবো। সভায় উপস্থিত বক্তাদের মধ্যে অশোক ভট্টাচার্য পরিবেশ আন্দোলন নিয়ে দ্বিচারিতা না করার কথা
বলেন । অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে সুকুমার কুন্ডু, গৌতম হালদার, সুকান্ত ভৌমিক বলেন, গতকাল যাঁরা এখানে (বাসস্ট্যান্ড) পথ সভা করে বক্তৃতা করলেন তাঁরাই অন্য একটি অনুষ্ঠানে মাত্রাধিক শব্দ ব্যবহার করে রাস-উৎসবের পুরস্কার বিতরণ ও বিচিত্রা-অনুষ্ঠান করলেন।
পুজো-পার্বন,আনন্দানুষ্ঠান-বিরহ উদযাপন অথবা রাজনীতি বা পিকনিকস্পটে সবার আগে মাইক্রোফোনে মুখ দিয়ে হ্যালো চেক বলে শুরু করাটাই দস্তুর।
সর্বঘটের কাঁঠালিকলা হিসাবে ব্যবহৃত তড়িৎ বাহিত সেই শব্দ যন্ত্রটির যন্ত্রণায়ই যত বিড়ম্বনা। খুব নিচু বা খুব উঁচু নয় —সুস্থ এবং সঠিক মাত্রায় নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নিয়ে চলুক তার যাত্রা । ব্যবহারকারী ও শ্রোতা উভয়- পক্ষই যেন শব্দের সহনশীল মাত্রা নিয়ে অসহিষ্ণু না হ’ন আপাতত এটাই কাম্য মনে করছেন শান্তিপুরের আম জনতা।