কাটোয়ার ভূমিপুত্র কালিদাস মল্লিক বিজয়ার অনুষ্ঠানে শতাধিক মেহগিনি দিলেন।

লুতুব আলি, বর্ধমান, ৭ অক্টোবর : কাটোয়ার ১নং ব্লকের আউরিয়ার কলসা এক অখ্যাত প্রত্যন্ত গ্রাম। গ্রামের নব্বই শতাংশ মানুষই দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেন। তারা সকলেই ক্ষেতমজুর শ্রেণীর। তাদের প্রাণের উৎসব দুর্গাপূজাকে নিজেরাই কালেকশন করে স্বমহিমায় আরাধনা করলেন। বিজয়ার অনুষ্ঠানে শতাধিক মেহগিনি বৃক্ষ শিশু নিয়ে বর্ধমান শহর থেকে হাজির হয়েছিলেন ভান্ডারডিহি পাঁচ করি বালা বিদ্যামন্দিরের শিক্ষক কালিদাস মল্লিক। তাঁর ও এই গ্রামেই জন্ম। শৈশব, কৈশোর, ছত্রাবস্থা কাটাতে গিয়ে দারিদ্রতা যে কি ভয়ংকর তা তিনি নিজের জীবন দিয়ে উপলব্ধি করেছিলেন। সবজির দোকানে পার্ট টাইম হিসাব রক্ষকের কাজ করে পড়াশোনা চালাতেন। এই গ্রামের সন্তান কালিদাস মল্লিক ই প্রথম চাকুরীজীবী। বিজয়ের অনুষ্ঠানে গ্রামের প্রাণের প্রিয় সন্তানের গাছ নিয়ে হাজির হওয়া দেখে সকলে আহ্লাদে আটখানা। পৃথিবীটা রুক্ষ মরুভূমিতে রূপান্তরিত হয়ে এক ভয়াবহ প্রাকৃতিক অক্সিজেনের ঘাটতি ও দূষণের মাত্রাতিরিক্ত হওয়ায় তিনি বিশেষভাবে ভাবিত। সবুজায়ন করতে যেকোনো অনুষ্ঠানে কালিদাসবাবু গাছ নিয়ে হাজির হয়ে যান। এই বিজয়ের অনুষ্ঠানেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তিনি তাঁর মা পূর্ণিমা মল্লিকের হাত দিয়ে মেহগিনি বৃক্ষ শিশুগুলি বিজয়ার গাছ বিতরণের অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। যাদের হাতে এই বৃক্ষ শিশুগুলি তুলে দেওয়া হয় তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন তাঁর ছাত্র বর্তমানে শিক্ষক দীনেশ সাঁতরা, দীনেশ বাবুর মা অন্নপূর্ণা সাঁতরা, সন্তোষ মালিক, ধানু মালিক, বিপদ সাঁতরা, রবি সাঁতরা, ভাস্কর মাঝি, বর্ষীয়ান মেঘল সাঁতরা প্রমুখ।উল্লেখ্য, বিজয়ের অনুষ্ঠানে এই গ্রামের তিন হাজার লোকের বিনামূল্যে দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কালিদাস বাবু দুপুরের অন্ন ভোগের আয়োজকদের হাতে কিছু নগদ অর্থ তুলে দেন তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকেও সহযোগিতা করা হয়। কালিদাস বাবু জানান তাঁর জীবদ্দশায় ১৫ হাজার গাছ লাগানো মনোবাসনা আছে। যেকোনো মূল্যে তিনি তাঁর এই আশা কে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে বদ্ধপরিকর।