|
---|
শরীফুলইসলাম,নতুনগতিঃ ঠিক যেন সেই চতুরাশ্রম -এর মতন পঞ্চমাশ্রমিক জীবনে কল্পতরু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শৈশব – বাল্য- কৈশোর-যৌবন এবং বার্ধক্য। সমাজ ও ব্যাক্তি জীবনে আক্ষরিক অর্থেই সব কটি পর্য্যায় সর্বস্তরের আলপিন টু এলিফেন্ট সার্বিক বিকাশের ক্ষেত্রে তাঁর সরকারের প্রকল্প সর্বব্যাপীত। নতুন নতুন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ইতিমধ্য গৃহীত ও বাস্তবায়িত একটার পর একটা প্রকল্পের নাম ও তার রুপায়নের প্রায়োগিক দিক ব্যাখ্যা করে মুখ্যমন্ত্রী বোঝালেন তিনিই পারেন এবং এক মাত্র তাঁর সরকারের প্রশাসনের পক্ষেই সম্ভব।
মূখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রারম্ভে তাঁর সরকারের পক্ষে সংখ্যালঘু ছাত্রাবাস , আই টি আই হাব , কর্মতীর্থ, নতুন হাসপাতাল কক্ষ, বাসস্ট্যান্ড, বৈদ্যুতিক চুল্লি, ধান সংরক্ষণ কেন্দ্র, অঙ্গনওয়ারী কেন্দ্র , তাঁত সাথী সহ এক গুচ্ছ সরকারি প্রকল্প ঘোষণা করেন জেলা শাসক রূপেশ গুপ্ত। এর মধ্যে বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া বিষয় ভিত্তিক বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের উপভোক্তাদের হাতে পুরস্কার ও শংসাপত্র তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। কৃষকের জমি মিউটেশন অবৈতনিক করেন । একর পিছু চাষীকে অর্থ অনুদান এবং ভাগ চাষী মারা গেলে দুলক্ষ টাকা আর্থিক অনুদানের কথা ঘোষণা করেন। কৃষাণ ক্রেডিট কার্ড এর সুবিধা পাচ্ছেন তাঁর রাজ্যের সমস্ত চাষী। তিনি জানান সবুজ সাথী প্রকল্পে ইতিমধ্যে এক কোটি সাইকেল রাজ্যে ছাত্র-ছাত্রী দের মধ্যে বিলি করা হয়েছে। ‘জলতরঙ্গ’ ক্রীড়া উৎসব এ বেস্ট পারফরমারদের টিভি, ফ্রিজ, মোটর সাইকেল দিয়ে পুরস্কৃত ও চ্যাম্পিয়ন -রানার্স ‘দের সিভিক পুলিশের কাজ দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের শুরু হয় তাঁর বিশ্ববন্দিত প্রকল্প কন্যাশ্রী দিয়ে। তিনি তাঁর রাজ্যে জাতি – ধর্ম- বর্ণ এবং আর্থিক দিক নির্বিশেষে সমস্ত স্কুল -কলেজের ছাত্রীদের এই প্রকল্পের অংশীদার করেছেন। তাঁর স্বপ্নের এই প্রকল্পের কন্যারা তাঁর খুবই আদরের। তিনি প্রত্যাশা করেন এরাই আগামী দিনে উন্নত দেশ নির্মাণের কান্ডারী হবে। পরিবার, সমাজ , দেশের মান বিশ্বস্তরে নিয়ে যাবে। শুধু কন্যাশ্রীর ছাত্রী নয়। তাঁর প্রিয় পাত্র ছাত্রদের জন্যও তাঁর ভাবনা সমান। তাই তিনি জানান, আগামীকাল , ‘রঘুচাঁদগুরু -হরিচাঁদ-কৃষ্ণচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ উদ্বোধন করবেন। কৃষ্ণনগর কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি তিনি ছাত্রদের জন্য সেখানে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ক্যাম্পাস তৈরির ব্যাবস্থা রাখবেন। শস্য বীমার কৃতিত্ব নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের মিথ্যা দাবির তুলোধনা করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় বলেন , “প্রধানমন্ত্রী নোংরা রাজনীতি করছেন। সরকারি অর্থে নিজের নাম প্রচার করে ধান্দাবাজির খেলায় মেতে উঠেছেন তিনি। প্রতিবছর রাজ্য থেকে ৪০ / ৫০ হাজার কোটি টাকা ট্যাক্স বাবদ তুলে নিয়ে যাচ্ছেন । অথচ দেওয়ার বেলাই ‘না।’ উল্টে রাজ্যের বিরুদ্ধে চক্রান্ত। মাছের তেলে মাছ ভেজে ধান্দাবাজি।” আরো বলেন ,
সেন্ট্রাল-এ বসে একটা প্যারালাল স্টেট গভর্মেন্ট চালাচ্ছেন। স্টেট এডমিনিষ্ট্রেশনে হাত দিচ্ছেন। দেশের ইতিহাস ঐতিহ্য নষ্ট । এসব বরদাস্ত করবো না । ” এর পর , খানিক টা উপদেশের সুরে সতর্ক করে বলেন , ” অতিলোভ ভালো নয় দেশের আম জনতা আপনাদের হিসাব নেবে।
আগুন নিয়ে খেলবেন না । রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ক্ষতি করছেন। নোট-ঘট পাকিয়ে ক্ষতি করলেন দেশের । সিবিআই এর ও বারোটা বাজিয়ে ছাড়লেন।”
এদিন তিনি সিপিএম কেউ ছেড়ে কথা বলেন নি। মুখ্যমন্ত্রী ঘৃণার সুরেই বলেন, “নেতা গিরি ছাড়া ৩৪ বছরে সিপিএম কিছুই করেনি। ৪৮ হাজার কোটির দেনা বাঁধিয়ে গিয়েছে। ওরা আবার বড় বড় কথা বলে । স্কুলের বাসে বোমা ছোড়ে।”সংরক্ষণের নাম করে প্রধানমন্ত্রী আসলে সাধারণ শ্রেণীর বেকার যুবক যুবতীদের ক্যাটাগরিক্যলই চরম ক্ষতি করলেন। এর সুবিধা সাধারণ মানুষ পাবেন না । হোম ওয়ার্ক না করে , সংবিধানে বেঁধে দেওয়া ৫০ শতাংশ এর উর্দ্ধে হটাৎ প্রধান মন্ত্রীর এই সংরক্ষণ যা সংবিধান বিরোধী এবং গরিব ঘরের ছেলে – মেয়েদের সঙ্গে ভোটের আগে প্রবঞ্চনা ছাড়া আর কিছু নয় , সে বিষয়েও বিষদ ব্যাখ্যা করেন মুখ্যমন্ত্রী। কৃষ্ণনগর সভায় শান্তিপুরের জন্য ছিল আশীর্বাদ। বুধবার, এদিনের সভায় শান্তিপুরের বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রীর স্নেহ ধন্য অরিন্দম ভট্টাচার্য কে মঞ্চে রেখে ঘোষণা করেন ‘শান্তিপুর -কালনাঘাট ‘ ১১ হাজার কোটি টাকা মূল্যের ভাগীরথীর উপর ব্রীজ নির্মাণের কথা । ‘শান্তিপুর-কালনাঘাট’ সেতু নিয়ে বিরোধী ও নিন্দুকেরা বহু টিকা-টিপপুনি কেটেছিল। কেউ কেউ অতি মস্করা করে বলেছিল “মাসির গালে দাঁড়ি-গোপ হবে , তবু শান্তিপুর -কালনাঘাট ব্রীজ নির্মাণ হবেনা। ‘শান্তিপুর – কালনা সেতু’ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর এদিন, নিজের মুখের ঘোষণা , শাসক দল তথা বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য বিরোধী নিন্দুকদের মুখে ঝামা ঘষে দিলো বলে মনে করছেন শান্তিপুরের আম জনতা।