|
---|
নতুন গতি ডিজিটাল ডেস্কঃ মৃত্যু হয়েছে মায়ের। সম্ভবত মাথায় আঘাত করে খুন করা হয়েছে তাঁকে। কিন্তু তার দুই শিশু বুঝতে পারেনি তাদের মা আর বেঁচে নেই। আর তাই খিদের জ্বালায় মায়ের স্তনবৃন্তে মুখ রেখেছিল এক শিশু। কিন্তু সন্তানকে স্তন্যদানের ক্ষমতাই ছিল না মায়ের। কারণ, মৃত্যু হয়েছে মায়ের। মর্মান্তিক এই ঘটনার সাক্ষী থাকল পুরুলিয়ার বলরামপুরের জুরাডি গ্রামের মানুষেরা।
জানা গিয়েছে, পুরুলিয়ার বলরামপুরের জুরাডি গ্রামের রাস্তার ধারে পড়েছিল স্থানীয় বাসিন্দা টুম্পা সিং সর্দারের মৃতদেহ। শিশুদের কান্নার আওয়াজ শুনে সেখানে ছুটে যায় গ্রামবাসীরা। তাঁরা দেখেন, দুই বছরের মেয়েটি মায়ের দুধ না পেয়ে কাঁদছে। তার পাশে চার বছরের আর একটি শিশু। দেহটি নাড়াচাড়া করে স্থানীয় মানুষজন বুঝতে পারেন, টুম্পা বেঁচে নেই। কয়েক মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন টুম্পা। ওই ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, মাথার পিছনে ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয়েছে মহিলাকে। মৃতদেহের পাশে পড়েছিল একটি রক্তমাখা ইঁট। বলরামপুরে আমরু গ্রামে বাপের বাড়ি টুম্পার। জুরাডি গ্রামের শ্রাবণ সিং সর্দারের সঙ্গে টুম্পা ঘাসির বিয়ে হয়। হতদরিদ্র দিনমজুর শ্রাবণ বিভিন্ন গ্রামে কাজে যেতেন। কোনও রকমে সংসার চলত তাদের। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, ভিন্ন জাতের শ্রাবণকে বিয়ে করেছিলেন টুম্পা। তাই তাঁর সঙ্গে বাপের বাড়ির সম্পর্ক ছিল না। স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক কেমন ছিল, তা স্পষ্ট নয়। পর পর দু’টি কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার পর ফের অন্তঃসত্ত্বা হয়েছিলেন ওই মহিলা। টুম্পার হত্যার সঙ্গে এর কোনও যোগ আছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মৃতার স্বামীর খোঁজ মেলেনি। তার খোঁজে নেমেছে পুলিশ।
দু’টি শিশুকে কে মৃতদেহের পাশে আনল, না কি তাদের সামনেই টুম্পাকে খুন করা হয়েছে, এ নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, খুব শান্ত স্বভাবের ছিলেন টুম্পা। তাঁর এমন পরিণতি দেখে সকলেই বিস্মিত। জেলা পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঘটনা সম্পর্কে কিছুই বলা যাবে না। শ্রাবণকে ধরলে রহস্যের সমাধান হবে বলে মনে করা হচ্ছে।