|
---|
নতুন গতি, মালদা: সারা রাজ্য জুড়ে চলছিলো পরীক্ষার মরশুম৷ আর সেই সঙ্গেই মাধ্যমিক পরিক্ষার ছোঁয়া লেগেছে মালদা জেলার নাজিরপুর গ্রামে। তবে এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষাটা গ্রামবাসীদের কাছে একটু অন্যরকম, বলা যায় পরীক্ষা উৎসবের আনন্দে মেতে উঠেছে এলাকাবাসী। মালদা জেলার কালিয়াচক ব্লকের নাজিরপুর হাইস্কুলে এবছর ২০২০ সালের প্রথমবারের মতো মাধ্যমিক পরীক্ষার ভেন্যু পাওয়া গিয়েছে। বছর তিনেক আগে পর্যন্ত এই স্কুল উচ্চমাধ্যমিক স্তরে উন্নীত ছিলো না। তাছাড়া জাতীয় সড়ক থেকে আড়াই কিমি দুরত্বের কারনে জেলাবাসীর কাছে অনেকটাই অপরিচিত ছিলো এই হাইস্কুল। সুষ্ঠ পরিকাঠামোর অভাবের কারনে দীর্ঘদিন ধরেই ধুঁকছিলো স্কুলটা। প্রায় পাঁচ বছর আগে রাজ্য সরকারের নিয়মানুযায়ী গ্রামের শিক্ষিত যুবক হালিম হক এই স্কুলের সভাপতির দায়িত্বে আসীন হন। তারপর থেকে ধীরে ধীরে স্কুলের রুপরেখার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। শিক্ষার মান উন্নতের পাশাপাশি স্কুল বিল্ডিং, লাইব্রেরি, উচ্চমাধ্যমিক করন, উন্নত মানের ভুগোল পরিক্ষাগার, সুউচ্চ বাউন্ডারি ওয়াল সহ সকল প্রকার সুষ্ঠ পরিকাঠামো দিয়ে স্কুলকে মুড়ে দিয়ে চমক সৃষ্টি করেন স্কুলের সভাপতি হালিম হক৷ জানা যায় গতবছর এই স্কুলের কম্পিউটার ল্যাব মালদা জেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে।
গ্রামের স্বপ্নকে পুরন করে এইবছর ২০২০ সালে মাধ্যমিক পরিক্ষা কেন্দ্র হিসেবে নাজিরপুর হাইস্কুলকে মনোনীত করা হলে আনন্দের জোয়ার আছড়ে পড়ে গোটা গ্রামে। গ্রামের প্রতিনিধিত্ব থেকে শুরু করে স্থানীয় যুবকেরা এগিয়ে আসেন পরিক্ষার্থী ও সকল অভিভাবকদের সাহায্যার্থে। বাকি দিনগুলোর মতো গতকাল জীবন বিজ্ঞান পরিক্ষাও অত্যন্ত সুন্দর পরিবেশের মধ্যেই কেটে যায়। স্কুলের বাইরে অভিভাবকদের বসার ও জলপানের ব্যবস্থায় এগিয়ে আসেন স্থানীয় মহিলারা। সকল বাড়ি থেকেই অভিভাবকদের মাঁদুর, চেয়ার, জলের বোতল দিয়ে সহযোগিতা করেন গ্রামবাসীরা। তাছাড়া রাস্তাঘাটের যানজট এড়াতে গ্রামের যুবকেরা অগ্রনী ভুমিকা পালন করে।
স্কুল সভাপতি হালিম হক জানান, ” আমার ও গ্রামের অনেকদিনের স্বপ্ন ছিলো আমাদের নাজিরপুর হাইস্কুলে পরিক্ষার ভেন্যু হবে। আমরা পেয়েছি এবং সেটাকে সুন্দরভাবে সফল করিয়ে দেখানোটা আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জের বিষয়। পরিক্ষার্থীদের অভিভাবক সহ শিক্ষা দফতরের বিভিন্ন অফিসার, কালিয়াচক ১ ব্লকের জয়েন্ট বিডিও শ্রী সোমনাথ ঘোষ মহাশয় আমাদের স্কুলে এসেছিলেন পর্যবেক্ষণ করতে। পাশাপাশি মালদা জেলার M.P(S.E) 2020 কনভেনার বিপ্লব গুপ্ত মহাশয়, কালিয়াচক চক্রের S.I ভাস্কর পাড়িয়াল ও কালিয়াচক থানার আইসি আশীষ দাস মহাশয়ও এসেছিলেন এবং উনারা খুব খুশি হয়েছেন স্কুলের পরিকাঠামো দেখে। পরবর্তীতে যতদিন সুযোগ পাবো ততদিন আমরা সকলে সহযোগিতার মাধ্যমে স্কুলকে এক উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যাবো।”