|
---|
মালদা ১২ আগস্ট ঃ নিজের হাতে রান্না করেছেন মৌসম। পাঁঠার মাংস, পোলাও, বেশ কয়েক রকমের পছন্দের সবজি। ইদের দুপুরে তাই সাজিয়েই লাঞ্চ সারলেন কোতোয়ালি ভবনের সদস্যরা। লাঞ্চ টেবিলে যেমন ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি ডালুবাবু আর তাঁর স্ত্রী রুথ খান চৌধুরী, তেমনই ছিলেন ডালুবাবুর ছেলে সুজাপুরের কংগ্রেস বিধায়ক ইশা খান চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী সায়েদা সালেহা নুর খানচৌধুরী। কলকাতা থেকে ইদের ছুটিতে মায়ের কাছে যাওয়া মৌসমের দুই ছেলে দশ বছরের আইমান নুর ও ছ বছরের আমাইরা নুরও সামিল ছিল ভোজের টেবিলে।
রাজনীতিতে মামা-ভাগ্নির কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলেন না। এমনকি লড়াইয়ের ময়দানে ভাই-বোনের সম্পর্কও যেন সাপে-নেউলে। কিন্তু আজ ইদ উৎসবে সব ভেদাভেদ ধুয়ে গেল কোতোয়ালি ভবনে। দলের সীমারেখা মুছে ফের পরিবার হয়ে উঠল গনিখান চৌধুরীর স্বজনরা।
ইদের সকালে হল শুভেচ্ছা বিনিময়। একসঙ্গে নমাজ পাঠ, আল্লাহর কাছে দোয়া সেরে খানাপিনায় সামিল হলেন সবাই। সেই প্রাতরাশ থেকেই আজ একসঙ্গে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা। সকালের ব্যস্ততা কিছুটা সামাল দিয়েই মৌসম ছুটলেন হেঁসেলে। পোলাও- মাংস রান্নায় তিনি বরাবরই দড়। উৎসবের দিনে সবাইকে রেঁধে খাওয়ানোর নজিরও বহু। আজও ব্যতিক্রম হয়নি তার। রান্নাবান্না সেরে রীতিমতো পটু হাতে সাজিয়ে ফেললেন টেবিল। রকমারি মিষ্টি আর মালদার আমও ছিল ইদের স্পেশাল খাওয়াদাওয়ার মেনুতে। রীতিমতো কবজি ডুবিয়ে হল মধ্যাহ্নভোজ।
এ বারের লোকসভা নির্বাচনে মামা আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালুবাবু) এবং মামাতো ভাই ঈশা খান চৌধুরীর সঙ্গে রাজনৈতিক লড়াই চরমে উঠেছিল তৃণমূল জেলা সভানেত্রী মৌসম নুরের। উত্তর মালদার তৃণমূল প্রার্থী মৌসম নুরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় তাঁর দাদা কংগ্রেস প্রার্থী ঈশা খান চৌধুরীর। এক ইঞ্চিও জমিও ছাড়েননি কেউ কাউকে। যদিও ভাই বোনের এই লড়াইয়ে আখের জিতে যান বিজেপির প্রার্থী খগেন মুর্মু ।কংগ্রেস বিধায়ক ইশা খান চৌধুরী বললেন, “রাজনীতি-রাজনীতির জায়গায়। ভাইবোনের সম্পর্ক তাতে চিড় ধরবে কেন? আবার ভোট আসবে, আবার লড়াই হবে। দলের আদর্শকে সামনে রেখে লড়াই করবো। তাই বলে ইদের দুপুরে বোনের হাতে পোলাও-মাংস খাবো না ? এটাই আমাদের পরিবারের দস্তুর।”ডালুবাবুর কথায়, “প্রতি বছরই ইদের দিনটা এভাবেই পালন করি আমরা। এ আর নতুন কি ? রাজনীতির প্রসঙ্গ এ দিন তোলা থাকে। একসঙ্গে নমাজ পড়া থেকে খানাপিনা সবই চলে। এ বারও ছোট দুই নাতির সঙ্গে দারুন সময় কাটালাম।”আর মৌসম বললেন, “আমাদের রাজনৈতিক পরিবার। তাই আদর্শের লড়াই তো থাকবেই। কিন্তু দল আর পরিবারকে কখনও মিশিয়ে ফেলি না আমরা। মতাদর্শ যাই হোক আমাদের পারিবারিক বন্ধন মজবুত। উৎসবের দিনে সেটাই নতুন করে সামনে আসে।”