|
---|
লুতুব আলি : আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রাণের উৎসব করম। তারা অবশ্য কারাম উৎসব হিসাবেই আখ্যা দেন। আদিকাল থেকে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ কারাম গাছকে বৃক্ষ দেবতা হিসেবে মেনে আসছে। পূর্ব বর্ধমানের মেমারির পাল্লা পশ্চিম আদিবাসী পাড়ার বাসিন্দারা তাদের কারাম উৎসবকে নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করলেন। এই গ্রামের ১০ জন আদিবাসী কুমারী মেয়েরা পাঁচ দিন ধরে একটি ধামায় দানা শস্য নিয়ে নাচ গানের মধ্য দিয়ে ব্রত পালন করলেন। এই ব্রত লক্ষীর আরাধনা। উল্লেখ্য, যে সম্প্রদায়ের অধিকাংশ এর বাড়িতে ধন নাই সেই আদিবাসী সম্প্রদায়ের কুমারী মেয়েরা সমগ্র পৃথিবী যেন ধনধান্যে পুষ্পে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে তার জন্য ছিল তাদের সার্বিক প্রার্থনা। একইসঙ্গে সম্প্রীতির বাতাবরণ যেন অটুট থাকে তার জন্য ও তাদের কাতর প্রার্থনা ছিল। এই উৎসবে নাইকে বাবার চরিত্রে ব্রত পালন করেন গুরুদাস হেমরম, গুরু বাবা রাধানাথ মুরমু, মাঝি বাবা শিবন হাঁসদা, গজে বাবা কালীচরণ হেমব্রম, জগ মাঝি লাল সরেন প্রমুখরা উৎসবের দিনগুলিতে পাড়ার সকলকে আনন্দ দিতে নিষ্ঠা সহকারে ব্রত পালন করলেন। এখানকার বাসিন্দা বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী লক্ষীরাম বাস্কে বলেন, কারাম গাছ ই এই উৎসবের প্রধান আরাধ্য দেবতা। আদিবাসী সম্প্রদায় মূলত প্রকৃতির পূজারী। প্রকৃতির সৃষ্ট কারাম গাছ কে পুজো অর্চনা করে তাকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করা হয়। প্রকৃতিকে বিনষ্ট করার জন্য যথেচ্ছ ভাবে বৃক্ষ নিধন হচ্ছে তা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে আদিবাসী নৃত্য ও মনোজ্ঞ সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।