মহরম মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বিষয়ে ফারহাদ এর নেতৃত্বে আলোচনা ও দোয়ার মাহফিল

বিশেষ প্রতিবেদন,বারাসাত : ইসলামিক বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস এবং পবিত্র মাসগুলির মধ্যে অন্যতম মুহরম। বিশ্বের মুসলিমরা কারবালার যুদ্ধে হুসেনের মৃত্যুর শোকপালন করার পাশাপাশি রোজা পালন করেন।

    বলাবাহুল্য ইসলামী ধর্মবিশ্বাসী এই দিনে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাদ্রাসা টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি তথা রাজারহাট নিউটাউন মাঝেরআইট পীরডাঙ্গা দরবার শরীফের পীরজাদা আলহাজ্ব একেএম ফারহাদ এর উপস্থিতিতে সংগঠনের শিক্ষকদের উপস্থিতিতে মহররম এর গুরুত্ব বিষয়ে আলোচনা ও দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। পীরজাদা ফারহাদ মহরমের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন মহরম যুগ যুগান্তরের অনেকগুলো ঘটনার ভার বহন করে। আরবি বর্ষ-পরিক্রমার এটি প্রথম মাস। এটি ‘আশহারুল হুরুম’ হারামকৃত চরটি মাসের অন্যতম। মহরম মানে সম্মানিত। ইসলামিক ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ও বহুল আলোচিত ঘটনাগুলি এই মাসেই সংঘটিত হয়েছে।মহরমের গুরুত্ব মনে করা হয় এটি সমগ্র জগৎ সৃষ্টির দিন।এদিনই কেয়ামত অনুষ্ঠিত হবে বলে মুসলিম ধর্মবিশ্বাস।এদিনে হযরত আইয়ুব (আঃ) কঠিন রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। হযরত ঈসা (আঃ) মহরমের দিনেই জন্মগ্রহন করেছিলেন।হযরত দাউদ (আঃ) আল্লাহর কাছ থেকে এদিনই ক্ষমা লাভ করেছিলেন। হযতর সোলেমান (আঃ) তাঁর হারানো রাজত্ব পুনরুদ্ধারে সক্ষম হয়েছিলেন এদিন।হযরত ইউনুস (আঃ) মাছের পেট থেকে মহরমের দিনই মুক্তি লাভ করেছিলেন।হযরত ইয়াকুব (আঃ) তাঁর হারানো পুত্র হযরত ইউসুফকে (আঃ) ৪০ বছর পর ফিরে পেয়েছিলেন।ফেরাউনের স্ত্রী বিবি আছিয়া শিশু মুসাকে এদিন গ্রহন করেছিলেন।মহা প্লাবনের সময় হযরত নূহ (আঃ) এর নৌকা তাঁর অনুসারীদের নিয়ে জুদি পাহাড়ের পাদদেশে এসে থেমেছিল। স্বৈরাচারী ইয়াজিদ বাহিনী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর প্রাণাধিক দৌহিত্র সৈনিক হযতর ইমাম হোসাই (রাঃ) কে একজন ব্যতিত সপরিবারে কারবালার মরু প্রান্তরে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল।হযরত মুহাম্মদ (সঃ) বলেন, যে ব্যক্তি আশুরার দিন নিজ পরিবার-পরিজনদের জন্য মুক্ত হাতে ব্যয় করবে, আল্লাহ তাঁকে সারা বছর সচ্ছলতা দান করবেন
    ১৪০০ বছর আগে আরব দেশের কারবালা প্রান্তরে হজরত মহম্মদের নাতি ইমাম হোসেনকে হঠাৎই এক অসম লড়াইয়ের সম্মুখীন হতে হয়।মরুপ্রান্তরে অবরুদ্ধ অবস্থায় তৃষ্ণায় কাতর হয়ে বেশ কয়েকজন শিশু ও মহিলা-সহ সপরিবারে সপার্ষদে তিনি প্রাণ হারান। সেই দিনটি ছিল হিজরি মহরম মাসের ১০ তারিখ। মুসলিম সম্প্রদায় প্রতি বছর এই তারিখে মহরম পালনের মধ্যে দিয়ে সেদিনের ওই নির্মম ও হৃদয়বিদারক ঘটনাকে স্মরণ করে।
    অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান যেমন ইদলফেতর (ইদ) ও ইদুজ্জোহা (কোরবানী)-র মতো মহরম কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়। নতুন কাপড় পরা, খাওয়া-দাওয়া, সমবেত নামাজ পাঠ বা পাড়ায় পাড়ায় বড়দের মালা দেওয়ার মধ্যে দিয়ে এর সমাপ্তি হয় না। তথাকথিত শিক্ষিত ও ধর্মপ্রাণ মুসলিমগণ নামাজ পাঠ, কোরান পাঠ, দরিদ্র অসহায়দের দান দক্ষিণার মধ্যে দিয়ে নীরব শ্রদ্ধা পালন করে থাকেন।
    বলাবাহুল্য শনিবার পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাদ্রাসা টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি তথা রাজারহাট নিউটাউন মাঝেরআইট পীরডাঙ্গা দরবার শরীফের পীরজাদা আলহাজ্ব একেএম ফারহাদ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উঃ চব্বিশ পরগনা জেলা কমিটির সভাপতি মোঃ কুতুব আকতার, রাজ্য কমিটির অন্যতম সদস্য নূরুল হক, সওকাত হোসেন পিয়াদা, মাওঃ আসরাফ উদ্দিন,মাওঃ রেজানুল,সাহাবুদ্দিন চৌধুরী,হাসিবুর রহমান,আব্দুল খালেক খান,রেজাউল ইসলাম, হাফিজুল ইসলাম, মিনজারুল, প্রমুখ।