|
---|
নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক: নারদা-কাণ্ডে চাঞ্চল্যকর মোড়। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই সকাল সকাল রাজ্যের দুই মন্ত্রীর বাড়িতে পৌঁছে গেল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকরা। গ্রেফতার করা হল রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে।
একই সঙ্গে গ্রেফতার করা হল বিধায়ক মদন মিত্র। গ্রেফতার শোভন চট্টোপাধ্যায়ও। আর তা নিয়ে উত্তাল রাজ্যের রাজনীতি। অভিযোগ, কোনও নোটিশ ছাড়া মাত্র ঘণ্টা দেড়েকের ব্যবধানে চার জনকে তুলে আনা হয়। পরে গ্রেফতার করা হয় তাঁদের।
একদিকে যখন চার নেতাকে আদালতে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে অন্যদিকে নিজাম প্যালেসে পৌঁছে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে সাংবাদিকরা মমতাকে জিজ্ঞেস করেন তাঁর আসার কারণের বিষয়ে। তিনি বলেন, ”ওদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি।”
এরপরেই নিজাম প্যালেসের ১৫ তলার অফিসে চলে যান। কথা বলেন তৃণমূলের আইনজীবীদের সঙ্গে। আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সহ অনিন্দ রাউতকে নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পরে অনিন্দ রাউত বাইরে বেরিয়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এই গ্রেফতারিকে বেআইনি বলে মমতা বলেছেন। যত ক্ষণ না তাঁকে গ্রেফতার করা হচ্ছে, তিনি নিজাম প্যালেস ছাড়ছেন না। কার্যত সিবিআই দফতরে ধর্ণায় বসেছেন তিনি।
সূত্রের খবর, দফতরে বসেই ডিআইজি সিবিআইয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন মমতা বন্দ্যপাধ্যায়।
অন্যদিকে, নিজাম প্যালেসে বাড়ানো হল নিরাপত্তা। আরও বাড়ানো হল নিরাপত্তা। গোটা নিজাম প্যালেস ঘিরে ফেলা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে। দফতরের গেট আটকে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, তৃণমূলের তিন বিধায়ক গ্রেফতারের পরেই বিভিন্ন জায়গা থেকে অশান্তির খবর সামনে আসছে। অনুগামীরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। বিভিন্ন জায়গাতে চলছে অবরোধ। অন্যদিকে নিজাম প্যালেসের বাইরেও ভিড় বাড়ছে অনুগামীদের। চলছে দফায় দফায় বিক্ষোভ। এরপরে বেড়েছে নিরাপত্তা।
জানা গিয়েছে। সোমবার সকালে কলকাতার প্রাক্তন মেয়র, তৃণমূলের বিধায়ক এবং মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের চেতলার বাড়ি ঘিরে ফেলে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সকাল ন’টা নাগাদ তাঁকে বাড়ি থেকে নিয়ে যায় সিবিআই।
বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় ফিরহাদ বলেন, ”নারদ মামলায় আমাকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। বিনা নোটিসে আমাকে গ্রেফতার করা হল।” ফিরহাদ আরও বলেন, ”স্পিকারের অনুমতি ছাড়াই আমায় গ্রেফতার করা হল। আদালতে দেখে নেব।”
সোমবার সকালেই মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নিজাম প্যালেসে নিয়ে যাওয়া হয়। নিজাম প্যালেসে আনা হয় রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কেও। সেখানে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে সিবিআই সূত্রের খবর।
সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ নিজাম প্যালেসে অ্যারেস্ট মেমোয় সই করানো হয় এই চারজনকে। তার পরই নিজাম প্যালাসে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী।
অন্যদিকে, এই গ্রেপ্তারি আইন অনুমোদন করে না। আইন না মেনেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে ফিরহাদ হাকিমকে। বিধায়কদের গ্রেফতারের পরেই মন্তব্য করেছেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। নিয়ম অনুযায়ী, কোনও বিধায়ককে গ্রেপ্তার বা তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত চালাতে স্পিকারের অনুমতি প্রয়োজন।
এক্ষেত্রে তা নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে ম্যাথু স্যামুয়েল জানিয়েছেন, তিনি সকালেই শুনেছেন, তৃণমূলের সিনিয়র মন্ত্রী ববি হাকিম এবং সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে সিবিআই গ্রেফতার করেছে। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পরে বিচার পাওয়া গেল বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। যে কাজ তিনি করেছিলেন, তা জনগণের সামনে আসে ২০১৬-তে।
প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি, বলেছেন, তিনি অপেক্ষা করতে তৈরি। ফলের জন্য অপেক্ষা করতে তিনি তৈরি। এটা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই। মন্তব্য করেছেন ম্যাথু স্যামুয়েল। শেষ পর্যন্ত তা হল।