মিরাট জেলার মুসলিমরা এবার বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে

নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক: অকারণেই নাগাড়ে হেনস্থা করে চলেছে হিন্দু গুজ্জররা। তাতে অতিষ্ঠ হয়ে এবার পাকাপাকিভাবে মিরাট ছাড়তে চলেছেন বহু মুসলিম পরিবার। বলা ভালো, বাড়ি-ঘর ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। মিরাট জেলার দউরালা থানার মাভি মীরা গ্রামের প্রায় ৪০টি মুসলিম পরিবার গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। নিজেদের ঘর-বাড়িও বিক্রি করে দিচ্ছেন তাঁরা। বাড়ির দরজার সামনে তাঁরা বিক্রির নোটিশও ঝুলিয়ে দিয়েছেন। তাতে লেখা আছে, ‘এই বাড়ি দ্রুত বিক্রি হবে। শীঘ্রই যোগাযোগ করুন। মাভি মীরা গ্রামের এমনই একজন শামসেদ। জানালেন, ‘সামান্য ছোটখাট বিষয় নিয়েই গ্রামের গুজ্জররা আমাদের লাগাতার হেনস্থা করছে। পুলিশে অভিযোগ দায়ের করতে গেলে পুলিশ অভিযোগ নেয় না।

    আলোচনা করে সমস্যা মিটিয়ে নিতে বলে। জেলা প্রশাসন কর্তা থেকে শুরু করে রাজ্যস্তরেও পর্যন্ত তাঁরা অভিযোগ জানিয়েছেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। দু-একদিন সবকিছু ঠিকঠাক চললেও তারপর ফের শুরু হয় হেনস্থা। আমরা অত্যন্ত মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে রয়েছি। ঠিক কীভাবে হেনস্থা করছে গুজ্জরা? স্থানীয় এক বাসিন্দা জানালেন, ক’দিন আগেই গুজ্জরদের এক ছেলে এক মুসলিমের দোকান থেকে ২০ টাকার মাল কেনে। দোকানদার টাকা চাইলে সে টাকা দিতে অস্বীকার করে। শুধু তাই নয়, দোকানদারকে উদ্দেশ্য করে অশ্লীল গালিগালাজও দেয়। বিষয়টি নিয়ে দু’তরফের মধ্যে বচসা হয়। এর কিছুক্ষণ পর ওই গুজ্জর যুবক দলবল নিয়ে ফিরে আসে। ওই মুসলিমের দোকান ভাঙচুর করে এবং গুলি চালায়। যদিও এই ঘটনায় স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। শুধু তাই নয়, স্টেশন হাউজ অফিসার কিরণপাল সিং আবার দাবি করেছেন, ‘একটি সিগারেট নিয়ে দু-পক্ষের মধ্যে গণ্ডগোল হয়েছিল। যা নিয়ে দু’তরফে পাথর নিক্ষেপও হয়। যদিও তাতে আহত হওয়ার মতো কোনও ঘটনা ঘটেনি। খুব ছোট্ট একটা ঘটনা। তাছাড়া সেই সংস্যাও এখন মিটে গিয়েছে। আর মুসলিমদের গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ার ঘটনাও সত্য নয়।’ স্থানীয় আর এক বাসিন্দা বলেন,২০১৩ সালে একটি কবরস্থানকে কেন্দ্র করে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। পরে তা মিটেও যায়। কিন্তু তারপর থেকে গুজ্জরা অকারণে বা সামান্য অজুহাতে মুসলিমদের হেনস্থা করতে শুরু করে। গ্রামের আর এক বাসিন্দা মুহাম্মদ শরিফ বলেন, আমরা অন্তত তিনটি থানায় অভিযোগ দায়ের করার চেষ্টা করেছিলাম গুজ্জরদের বিরুদ্ধে। কিন্তু প্রতি ক্ষেত্রেই পুলিশ আমাদের ফিরিয়ে দিয়ে বলে এগুলো খুব ছোটখাট ঘটনা। গ্রামে এইসব ঘটনা আকচার ঘটেই থাকে। আসলে, প্রশাসন আমাদের কথা শুনতেই চায় না। আমরা প্রবল মানসিক কষ্টে ভুগছি। সে কারণেই আমরা গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।