বাৎসরিক উৎসব উপলক্ষ্যে রাজবেশে সাজিয়ে পুজো করা হল বীরভূমের মা নলাটেশ্বরীকে

নিজস্ব সংবাদদাতা : বাৎসরিক উৎসব উপলক্ষ্যে রাজবেশে সাজিয়ে পুজো করা হল বীরভূমের মা নলাটেশ্বরীকে । ঢাক-ঢোল বাজিয়ে নলহাটির রামমন্দির পুকুর থেকে পুজোর জল নিয়ে আসেন ১৫১ জন মহিলা। ৫১ সতীপীঠের অন্যতম বীরভূমের নলহাটির নলাটেশ্বরী। কথিত আছে নলহাটিতে পড়েছিল দেবীর কণ্ঠনালি। সেই থেকেই দেবী নলাটেশ্বরী রূপে এখানে পূজিতা হচ্ছেন মা কালী। বাৎসরিক উৎসব উপলক্ষ্যে শুক্রবার রাজবেশে সাজিয়ে পুজো করা হল মা নলাটেশ্বরীকে। ভোরের আলো ফোটার পরই মঙ্গল আরতি করা হয়। ঢাক-ঢোল বাজিয়ে নলহাটির রামমন্দির পুকুর থেকে পুজোর জল নিয়ে আসেন ১৫১জন মহিলা। দিনভর হোমযজ্ঞের পাশাপাশি ছিল বিশেষ ভোগের আয়োজন। নলাটেশ্বরী মন্দিরের এক সেবায়েত সমীর পণ্ডিত বলছেন, নাটোরের রানী ভবানী তাঁর বংশধর আষাড় মাসের শুক্লা চতুর্দশীতে মাকে প্রথম অন্নভোগ দেয়। সেই থেকে আজও মাকে ৫ রকম ভাজা, গোবিন্দভোগ চালের অন্ন, পায়েস,মাছের ঝোল দিয়ে ভোগ দেওয়া হয়। পুজো উপলক্ষ্যে সকাল থেকেই মন্দির ছিল পুণ্যার্থীদের ঢল। কালীপুজোতেও মহা ধুমধাম হয় এই নলাটেশ্বরীতে। গোটা বছর এই কালীপুজোরই অপেক্ষায় থাকে বীরভূমের মুরারইয়ের জাজিগ্রাম। এখানে সাধারণ মানুষ অন্যান্য পুজোতে এত আনন্দ করেন না, যতটা কালীপুজোতে মেতে ওঠেন। যেখানে বীরভূম শেষ হয়ে মুর্শিদাবাদ শুরু হয়েছে, সেখানেই বৃদ্ধামাতা, ইচ্ছাময়ী কালীর পুজো হয়। ওই গ্রামে প্রায় শতাধিক পুজো হয়। প্রত্যেক বাড়িতে কালীপুজো হয়। কোনও কোনও বাড়িতে আবার একাধিক পুজো হয়। শুধু কি পুজো? তিন ধরে মেলাও চলে। এই কারণে এই গ্রাম ‘মেলা তলা’ নামেও পরিচিত।পুজোর পরের দিন জাজিগ্রামের সমস্ত ঠাকুর পার্শবর্তী হিড়লা গ্রামজুড়ে পরিক্রমা করানো হয়। এরপর প্রতিমা বিসর্জন করা হয়। অন্যদিকে হিড়লা গ্রামের ঠাকুর জাজিগ্রামের বৃদ্ধামাতা প্রদক্ষিণ করে বিসর্জন করা হত। বিভিন্ন জেলার মানুষজন এই বিসর্জন দেখতে জাজিগ্রামে ভিড় জমাতেন। জাজিগ্রামে বেশ কয়েকটি প্ৰাচীন পুজোর মধ্যে ইচ্ছাময়ী কালী, নিত্যকালী, দিগম্বরী কালী, বৃদ্ধাকালী অন্যতম। গ্রামবাসীরা জানান, ওই অঞ্চলে শতাধিক কালী মূর্তির পুজো হয়। কালীপুজোর দিন বাইরে থেকে বহু মানুষ আসেন এখানে। খুব ধুমধাম করে পুজো হয় ওই অঞ্চলে। এখানে সকলেই মনস্কামনা পূরণের জন্য আসেন। এখানে ইচ্ছাময়ী, বৃদ্ধমাতার তন্ত্র সাধনা মতে পুজো হয়। বিশ্বনাথ মজুমদার বলেন, ‘বৃদ্ধামাতা কালী প্রায় দু’শো বছরের পুরনো। অনেক দূরদূরান্ত থেকে প্রচুর মানুষ আসেন। তাঁরা সারারাত ধরে জেগে থাকেন। অনেকে মানতও করেন। এখানে ছাগ বলি করা হয়।’ তাপস মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘আমাদের কালীর নাম ইচ্ছাময়ী কালী। প্রায় আড়াইশো বছর আগের এই পুজো। মা সকলের ইচ্ছা পূরণ করেন তাই এই মায়ের নাম ইচ্ছাময়ী। ছাগ বলি দিয়ে মায়ের ভোগ হয়।