|
---|
মুহাম্মদ রাইহানুল হক,নতুন গতি : ২০১৬ সালের ৮ই নভেম্বর রাত ৮টা ৮ মিনিট। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটা ছোট্ট ঘোষণার ফলে সারাদেশে তৈরি হয়েছিলো অর্থনৈতিক জরুরী অবস্থা। দেশের আবালবৃদ্ধবনিতাকে ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড় করিয়েছিলো।হাহাকার ক্রন্দনরোলে ভেসে উঠেছিলো কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারিকা। সেই দগদগে ক্ষত দেশবাসী আজো ভোলেনি। প্রধানমন্ত্রী সেদিন এক চুটকিতে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটকে সাদা কাগজে পরিণত করেছিলেন। দেশবাসীকে আশার আলো দেখিয়েছিলেন এই বলে যে, নোটবন্দীর মাধ্যমে দেশের কালোটাকা নির্মূল করবেন, সীমান্তপারের সন্ত্রাসবাদীদের আর্থিকভাবে কোণঠাসা করবেন, মাওবাদীদের কোমর ভেঙে দেবেন, ট্যাক্স ফাঁকি রোধ করে দুর্নীতি মুক্ত দেশ গড়বেন। এজন্য দেশবাসীর কাছে ৫০ দিন সময়ও চেয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু এরপরে গঙ্গা দিয়ে অনেক জল গড়ালেও দেশের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ। প্রধানমন্ত্রীর সেদিনের দাবি যে অন্তঃসারশূন্য তা আজ দেশবাসীর কাছে প্রমাণিত। বাতিল নোটের প্রায় ৯৯.২ শতাংশ টাকা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে জমা পড়েছে। কালোটাকা উদ্ধার দূর অস্ত, বাজারে আসা নতুন টাকার নকলে ছয়লাপ হয়েছে দেশের অর্থনীতি। বড় বড় ব্যাঙ্ক দুর্নীতির ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে এই দুবছরেই।সন্ত্রাসবাদীদের দৌরাত্ম্য আজো সমানে। মাঝখান থেকে নোটবদলের লাইনে দাঁড়িয়ে অকালে প্রাণ হারিয়েছেন শতাধিক মানুষ।
এরই প্রতিবাদে ওয়েলফেয়ার পার্টি অফ ইন্ডিয়ার জঙ্গিপুর মহকুমা কমিটি আজ বিকেলে শহরের প্রাণকেন্দ্র রঘুনাথগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে ‘প্রতারণা দিবস ও পালন ও ধিক্কার সমাবেশে’র আয়োজন করলো। শতাধিক পার্টিকর্মী সহ উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সহসভাপতি শাহজাহান আলী, জেলা কমিটির সদস্য শাহরিয়ার কবির চৌধুরী,রঘুনাথগঞ্জ ১ নং ব্লক সভাপতি মজিবুর রহমান, বিশিষ্ট লেখক – মুর্শিদাবাদে জেলা কমিটির সদস্য এম এ হান্নান, মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক হাবিবুর রহমান সাহেব, কোষাধ্যক্ষ সামসুল হক সাহেব, ফ্র্যাটারনিটি মুভমেন্ট অফ ইন্ডিয়া রাজ্য ক্যাম্পাস সেক্রেটারি আবু তাহের আনসারী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
‘মোদি হটাও, দেশ বাঁচাও’, ‘নোটবাতিলের হয়রানি, ভারতবাসী ভোলেনি’ ইত্যাদি স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন উপস্থিত নেতা ও কর্মীবৃন্দ। যোগদানকারী নেতৃবৃন্দের মতে নোটবাতিলের নামে ভারতের অর্থনীতিকে ধ্বংসের চক্রান্তে মেতে উঠেছিলেন কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি। দেশের জনগণের সঙ্গে ধাপ্পাবাজির অনন্য নজির তৈরি করেছেন প্রধানমন্ত্রী। দেশ দুর্নীতি, কালোবাজারিতে ছেয়ে গেছে।দুবছর আগের আজকের দিনে যে হয়রানি ও প্রতারণার সূচনা হয়েছিলো তার রেশ আজো কাটিয়ে উঠতে পারেনি দেশবাসী। রাজ্য সহসভাপতির প্রশ্ন,নোটবন্দীর সুফল কেনো অধরা?