প্রান্তিক চাষির ঘরের মেয়ে হেদায়তুননেসা সংগীত রচনা করে নজর কেড়েছেন ভাতার এলাকায় কাপশোর গ্রামে

লুতুব আলি : দুই বাংলায় গীতিকার হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন রিমু। প্রান্তিক চাষির ঘরের মেয়ে হেদায়তুননেসা ওরফে রিমু সংগীত রচনা করেছেন তাদের নজর কেড়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার এর কাপশোর গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করেছেন। রিমুর লেখনীতে দুই বাংলার শিল্পীদের মেলবন্ধন ঘটেছে। ১৯৯৩ সালের ৫ জানুয়ারির রিমুর জন্ম। প্রত্যন্ত গ্রামের কৃষক পরিবারের সাহিত্য-সংস্কৃতির কোন পরিবেশে ছিল না। সমাজের হাসি-কান্না,সুখ, দুঃখ কৈশোর অবস্থা থেকেই রিমুর কিশোরী মনটাকে ছুঁয়ে যেত। একটি মৃত্যু রিমুর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। রিমুর খুব কাছের মানুষ নদীয়ার মামণির অকালপ্রয়াণ ঘটে। সালটা ছিলো ২০১৯. দুটি কিডনিই নষ্ট হওয়ায় তার মৃত্যু হয়। রিমু তার স্বরচিত কবিতার মাধ্যমে তাকে চির বিদায় জানান। এরপর একের পর এক কবিতা লিখে রিমুর মন ভরল না। তিনি ছুটে গেলেন তার আধ্যাত্মিক গুরু আবু বক্কর সিদ্দিক চিশতির কাছে। গান লিখে মানুষের মন জয় করবেন। তিনি গুরুদেবের কাছে এই আর্জি জানান। গুরুদেব তাকে একটি পেনো নতুন একটি ডায়েরি দিয়ে আশীর্বাদ করলেন। ইতিমধ্যে এ বাংলার কবি ভাস্বতী দাস শম্পা ব্যানার্জি, শুভ্রা বাড়ৈ প্রমুখদের মাধ্যমে আর এস মিউজিক এর কর্ণধার কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক এর সঙ্গে যোগাযোগ ঘটে। এপার বাংলার স্বনামধন্য সঙ্গীতশিল্পী জি বাংলা খ্যাত সহজ মা, বিজয় দাস, জয়ন্তী দাস প্রমুখ শিল্পীরা রিমুর লেখা গান গাইছেন। রিমুর লেখা গান বুক পাজরে গানটিকে সহজ মা প্রশংসিত হয়েছেন। বাংলাদেশের রিয়ালিটি শো থেকে যারা চ্যাম্পিয়ন হচ্ছেন তাদের অধিকাংশই রিমুর লেখা গান গাইছেন। উল্লেখযোগ্য শিল্পীরা হলেন, প্রিন্স হাবিব, শাহরিয়ার রনি গেয়েছেন, দুঃখের বালুচর। বাংলাদেশের ভাইরাল সিঙ্গার আতিফ আহমদ নিলয় গেয়েছেন, দুই বন্ধু আকাশের চাঁদ। দেওয়ান জসিম গিয়েছেন নীরব প্রতিবাদ গানটি। জসিম কিশোর তোরে ছাড়া দোযখ লাগে গানটি গেয়ে বাংলাদেশের সাড়া ফেলেছেন। অপু আমান এর গাওয়া রিমুর আট খানি গান খুব তাড়াতাড়ি রিলিজ হবে। এই তালিকায় রাজু মন্ডল ও আছেন। বাংলাদেশের প্রখ্যাত কামরুল মিডিয়ার কর্ণধার কামরুল ইসলাম আপন ও সেখানকার বিশিষ্ট শিল্পী ও কম্পোজার প্রকাশ কুমার রিমুর লেখা গান নিয়ে কাজ করছেন। বাংলাদেশের জনপ্রিয় আধ্যাত্মিক গুরু সফিমন্ডলের শিষ্য রাজু মন্ডল রিমুর দেহতরী গানটি খুব শীঘ্রই রিলিজ করবেন। একান্ত সাক্ষাৎকারে রিমু বলেন, রবীন্দ্রনাথের লেখা প্রেম ও নজরুলের প্রতিবাদী লেখা মনকে অনুরণন করে। রবীন্দ্র-নজরুল উত্তর গীতিকার পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়, জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায় প্রমুখ দের লেখা গান তাকে ভীষণভাবে নাড়া দেয়। বর্তমান প্রজন্মের বাস্তবতাকে গানের মাধ্যমে তুলে ধরায় তার একমাত্র উদ্দেশ্য। রিমু এখন প্রত্যন্ত গ্রামের এক প্রত্যন্ত চাষির গৃহবধূ। দেড় বছরের শিশুকন্যা আয়াত জাহান কে নিয়ে তিনি ব্যস্ত। সমস্ত প্রতিকূলতাকে তিনি উপেক্ষা করে তার লেখনির মাধ্যমে নিজেকে জয় করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। এ ব্যাপারে তার স্বামী হাসিবুল মল্লিক ও তাকে সমানভাবে সহায়তা করা করে চলেছেন। হাসিবুল সাহেবও একজন প্রান্তিক চাষী। চাষির ঘরের বউ রিমু একজন নামী গীতিকারের স্বীকৃতি আদায় করুন মনে প্রানে প্রানে তিনি তা চান।