|
---|
বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা : সাল ১৯৯৩,তখন পশ্চিমবঙ্গ যুব কংগ্রেসের ‘আগুনে নেত্রী’ তথা সভাপতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের ক্ষমতায় রয়েছে জ্যোতি বসুর সরকার। এ সময় সিপিএমের বিরুদ্ধে ছাপ্পা-রিগিং-এর অভিযোগ নিয়মিত শোনা যায় বিরোধিদের মুখে। এমন আবহেই নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার জন্য সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্রের দাবিতে ২১ জুলাই মহাকরণ অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন তৎকালীন যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই মমতার ডাকে মহাকরণ অভিযানের জন্য কলকাতার রাজপথে নামেন কয়েক হাজার যুব কংগ্রেসকর্মী। রাজ্যের প্রধান প্রশাসনিক সচিবালয়ে এই অভিযান রুখতে তৎপর হয় পুলিশ। বিভিন্ন ক্রসিং-এ গড়া হয় ব্যারিকেড। এরপরই হঠাৎ চলতে থাকে গুলি। সেই গুলিতে নিহত হন ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মী। এই ১৩ যুবকংগ্রেসকর্মীর মৃত্যুতে রীতিমতো উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। কার নির্দেশে গুলি চালাল পুলিশ, এই প্রশ্নের আজও মীমাংসা হয়নি। উল্লেখ্য, সেসময় রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।১৯৯৩ সালের এই ঘটনার পর থেকেই প্রতিবছর এই দিনটিকে ‘শহিদ দিবস’ হিসেবে পালন করে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস। পরবর্তীকালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল তৈরি করেন এবং ২১ জুলাইকে ‘শহিদ দিবসে’র মর্যাদা দেওয়া হয়। আজও এই দিনে পৃথকভাবে সমাবেশ করে কংগ্রে। কিন্তু, তৃণমূল রাজনৈতিকভাবে এ রাজ্যে প্রশ্নাতীতভাবে বৃহত্তর শক্তি হয়ে ওঠায় তৃণমূলের ‘শহিদ দিবস’ই যাবতীয় আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।বিধানসভা নির্বাচনে জিতে রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। তবে সেই পরীক্ষায় তিনি এবং তাঁর দল সসম্মানে উত্তীর্ণ। বিজেপি দুই অঙ্ক পেরোতে পারেনি। ৭৭-এই আটকে যায় গেরুয়া শিবির। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনেও ব্যাপক সাফল্য এসেছে।এবার সামনে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচন। একুশের মঞ্চ থেকে দলকে আগামী দিনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে। উল্লেখ্য শহীদ দিবসে তৃণমূল কংগ্রেস দল অনুমোদিত একমাত্র মাদ্রাসা শিক্ষক সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাদ্রাসা টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি একেএম ফারহাদ এর নেতৃত্বে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও শিয়ালদহ স্টেশন থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সহযোগে ধর্মতলায় উপস্থিত ছিল। একুশের সকালে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের নজরকাড়ে মাদ্রাসা শিক্ষকদের প্লাকাড,ব্যানারে লেখা নানা স্লোগান। সেখানে দেখা যায় অমর শহীদ তেরো জনের নাম,শহীদের রক্ত হবে নাকো ব্যার্থ, সাম্প্রতিক বিজেপি নিপাত যাক, পাশাপাশি নজরকাড়ে দলনেত্রী মমতা ব্যানার্জি, সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, ফিরহাদ হাকিম সহ অন্যান্যদের ছবি। লক্ষণীয় বিষয় NO VOTE TO BJP,২০২৪ বিজেপি ফিনিস,স্লোগান নজরকাড়ে। দেখা যায় রাজ্য সরকারের জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলোর প্রচার কর্মসূচির বার্তা রাখা হয়।একথায় বলা যায় অত্যন্ত গোছানো শোভাযাত্রা, শিক্ষক শিক্ষিকাদের উপস্থিত, নেতৃবৃন্দের প্রশংসার পাশাপাশি মিডিয়ার নজর কাড়লো। উক্ত দিনের সফল কর্মসূচি প্রসঙ্গে মাদ্রাসা শিক্ষা আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা সংগঠনের রাজ্য সভাপতি তথা উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ একেএম ফারহাদ বলেন ছাত্র অবস্থায় দেখেছিলাম ১৯৯৩ সালের ২১ শে জুলাই ধর্মতলায় তদানীন্তন বামফ্রন্ট সরকারের পুলিশ কিভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর হামলা চালিয়েছিল। সেদিন মৃত্যু হয়েছিল আমাদের তেরো জন সহকর্মীর। সেদিন থেকে প্রতিঞ্জা করি যেকোন প্রকারে হার্মাদ সরকার কে হঠাতে গেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেত্রীর অতি প্রয়োজন।তাই তাঁর মতো দেশনেত্রী বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশের জন্য উপযুক্ত। মাদ্রাসার সার্বিক উন্নয়নে রাজ্য সরকারের কর্মসূচি অত্যন্ত প্রশংসনীয়। শিক্ষকদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ একুশে জুলাই এর মিছিল সফল ভাবে শেষ করতে সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন মাদ্রাসার শিক্ষকরা সরকারের পরিষেবা গুলো যথাযথ ভাবে প্রচার কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার পাশাপাশি সবরকমের প্রচারাভিযানে নামে। শুক্রবারের কর্মসূচিতে রাজ্য সভাপতি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চম্পক নাগ,সাকিলুর রহমান, মনিরুল মোল্লা,সওকাত হোসেন, নূরুল হক,মনজুর আহমেদ,আবু সুফিয়ান পাইক, জার্জিস হোসেন,শম্পা পাত্র, নামদার শেখ,সৈয়দ কামার নাসির, আব্দুললাহিল মামুন,আব্দুল খালেক, সুরজিৎ ঘোষ, মিনজারুল, অভিষেক দাস,জেসমিনা খাতুন, শর্মিষ্ঠা ঘোষ প্রমুখ।