|
---|
মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ, নতুন গতি ডেস্ক:
আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর জীবনের চরম উৎকর্ষের এবং অফুরন্ত ঐশ্বর্যের মূলে রয়েছে বিজ্ঞান ।বিজ্ঞান ছাড়া মানুষ এতো ঐশ্বর্যের সাগরে ডুব দিতে পারতো না।প্রতিনিয়ত বিজ্ঞানের উদ্ভাবনের ঘন্টা বেজেই চলেছে। সকালের ঘুম ভাঙ্গানি এলার্ম ঘড়ি থেকে শুরু করে, রাতে বিছানা যাওয়া পর্যন্ত বিজ্ঞানের অগণিত অবদান পরিলক্ষিত হয় । রান্নাঘরের গ্যাস ওভেন, ইলেকট্রিক কেটলি থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনের প্রতিটি সাজ সরঞ্জাম সবই বিজ্ঞানের অবদান । এছাড়াও বিনোদন ও বার্তা-বহন সামগ্রী যেমন মোবাইল,রেডিও, টেলিভিশন, খবরের কাগজ, টেলিফোন থেকে শুরু করে টেপরেকর্ডার, ক্যালকুলেটর, কম্পিউটার ইত্যাদি সবই বিজ্ঞানের আশীর্বাদ-যেগুলো মানুষের কাজকে করেছে সহজ-সরল ও তাৎক্ষণিক। আধুনিক নানান যানবাহনের আবিষ্কারের ফলে মানব জীবনে এনে দিয়েছে গতি যেমন দ্রুতগামী বাস, মোটর, ট্রেন, বুলেট ট্রেন, এরোপ্লেন, হেলিকপ্টার ইত্যাদি আসার পরবর্তী সময়ে মানুষ স্বল্প সময়ে শারীরিক শক্তির ব্যয় ছাড়াই অনেক কাজ হাতিয়ে নিচ্ছে। আজকের কর্মব্যস্ত মানুষ বিজ্ঞান ছাড়া একপাও এগোতে পারে না ।মানুষ্য ইতিহাসে বিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞান একটি বৈপ্লবিক অধ্যায়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এতো নাটকীয় অগ্রগতি আগেকার কোনও শতাব্দীতে দেখা যায়নি। বিংশ শতাব্দীর কিছু আবিষ্কার(ডিসকভার) ও কিছু (ইনভেনশন) । কিছু কিছু ঘটনা এই শতাব্দীতেই মানুষের জীবনে গভীর রেখাপাত করেছে; অসংখ্য ভাবে বিশ্বের সমস্ত দেশের মানুষ ও জীবের জীবনযাত্রায় ছাপ ফেলেছে।
কিছু কিছু আবিষ্কার ও উদ্ভাবন যা পৃথিবীকে নিজের বৈশিষ্ট্য দিয়ে নাড়িয়ে দিয়েছে; যেমন মাক্স প্লাঙ্কের ১৯০০ খ্রিস্টাব্দে কোয়ান্টাম তত্ত্ব,পল ভিলার্ডের গামারশ্মি ,খ্রিসচিয়ান বার্কল্যান্ড-এর সুমেরুজ্যোতি (অরোরা বোরিয়ালিস) । এছাড়াও
মিখাইল সোয়েটের ক্রোমাটোগ্রাফির কৃত্কৌশল ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে- যা রাশিয়ার পাশা-পাশি সারা বিশ্বে সাড়া ফেলে ছিল। কার্ল ল্যান্ডস্টিনের ১৯০১ সালে মনুষ্য-রক্তের শ্রেণির আবিষ্কার চিকিৎসা বিজ্ঞানে আমূল পরিবর্তন এনে দিয়েছে।বিজ্ঞানের সর্ব শেষ আবিস্কার যা ধনী-দারিদ্রতার উপরে উঠে সবার প্রিয় পাত্র হয়েছে তা হল চার্লস ব্যাবেজ আবিষ্কৃত কম্পিউটার এবং মার্টিন কুপার আবিষ্কৃত সেল ফোন।
তবে বিজ্ঞানের সর্ব শেষ আবিস্কার যা এতোদিন সায়েন্স ফিকশন সিনেমার পর্দায় দেখেছে তা বাস্তবে দেখবে, বিশেষ করে হলিউড সায়েন্স ফিকশন মুভিতে দেখেছে উড়ন্ত গাড়ি যা রাস্তার উপর দূরত্ব বজায় রেখে উড়ে।ব্রিটেনের ডাচ সংস্থা পিএএল-ভি ইন্টারন্যাশনাল দাবি করেছে তাঁরা ২০২০ সাল নাগাদ উড়ন্ত গাড়ি( ফ্লায়িং কার) বাজারজাত করবে।দাবি করা হচ্ছে যে যানজটের মতো অনাক্ষিত বিষয় থেকে রেহাই পাওয়া যাবে এই উড়ন্ত গাড়ি আসার পরে। সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে প্রথমত ২০২০ সাল নাগাদ এই গাড়ি শুধুমাত্র আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র,ব্রিটেন ও ইউরোপে পাওয়া যাবে।পরবতীতে উন্নয়নশীল দেশ গুলোতেও বাজারজাত করা হবে। সংস্থাটি এরই মধ্যে ব্রিটেনে প্রি-বুকিং শুরু করে দিয়েছে। সংস্থার পক্ষ থেকে জানা যাচ্ছে তিন চক্র বিশিষ্ট এই গাড়িটি পেট্রোলে চলবে।১০০ লিটারে এই উড়ন্ত গাড়ি রাস্তায় সর্বোচ্চ ১৩১৫ কিমি ও আকাশ পথে প্রায় ৪৮২ কিমি পর্যন্ত চলবে।এই উড়ন্ত গাড়ির ওজন ৬৬৪ কেজি মতো।সর্বমোট আসন সংখ্যা দুইটি ও ২০ কেজি ওজনের বস্তু বহনের ক্যাপাসিটি সমৃদ্ধ। নির্মাতাদের দাবি উড়ন্ত অবস্থায় এই গাড়ির গতিবেগ হবে ১৮০কিমি/ঘন্টা ও সড়ক পথে সর্বোচ্চ গতি হবে ১৬০ কিমি/ঘন্টা।গাড়িটি সাড়ে এগারো হাজার ফুট উঁচু দিয়ে উড়তে সক্ষম। গাড়িটি টেক- অফ করার জন্য মাত্র ৩৩০ মিটার জায়গার প্রয়োজন হয়।গাড়িটি-কে সড়ক মুড থেকে হেলিকপ্টার মুডে পরিবর্তন করতে মাত্র ১০ মিনিট সময় লাগবে। নির্মাতা প্রতিষ্ঠান পি এ এল-ভি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে,এই উড়ন্ত গাড়ি (ফ্লায়িং কার) যুক্তরাষ্ট্রে ও ইউরোপে চলবে ইউরোপীয় বিমান সুরক্ষা এজেন্সির নিয়ম অনুসরণ করে।কিন্তু ব্রিটেনে এই গাড়ি চালানোর অন্য নিয়ম থাকবে। ভারতীয় রুপিতে এই গাড়ির মূল্য হবে প্রায় আড়াই কোটি মতো।এই উড়ন্ত গাড়ি যেন বিজ্ঞানের আশ্চর্য নিদর্শন।