এবার ভারতে বোরখা নিষিদ্ধের দাবি জানালো শিবসেনা

নিজস্ব সংবাদদাতা:  শ্রীলংকার সন্ত্রাসবাদি হামলায় প্রায় 200 জন মানুষ নিহত হয় এবং তার পরে নড়েচড়ে বসে গোটা দেশে প্রশাসন। ইতিমধ্যে ওখানকার মুসলিম নাগরিকদের উপরে ক্ষিপ্ত বিক্ষিপ্ত হামলার ঘটনা ঘুরতে শুরু করেছে। তাই দেশের সরকার এবং শ্রীলংকার সুরক্ষা সচিব এবং প্রধানমন্ত্রী জানায় যে মুখ ঢাকা কোন পোশাক বা বোরখা পড়া যাবে না।

    ইস্টারের সকালে সন্ত্রাসবাদি হামলার পর, জাতীয় নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে সম্প্রতি বোরখা নিষিদ্ধ করেছে পড়শি দেশ শ্রীলঙ্কা। ভারতকেও এ বার তেমন পদক্ষেপ করতে হবে বলে দাবি শিবসেনার। তাদের যুক্তি, রাবণের লঙ্কায় বোরখা নিষিদ্ধ হলে, রামের অযোধ্যায় কেন নয়?
    বুধবার নির্বাচনী প্রচারে অযোধ্যা যাওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । তার আগেই তাঁর কাছে বোরখা নিষিদ্ধ করতে আর্জি জানিয়েছে শিবসেনা। দলের মুখপত্র ‘সামনা’ এবং ‘দোপহর কা সামনা’ লিখেছে, ‘‘রাবণে লঙ্কায় বোরখা নিষিদ্ধ হয়েছে। রামের অযোধ্যায় কবে হবে? অযোধ্যা সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। তার আগে ওঁকে এই করে রাখলাম।’’

    বোরখা, নকাব-সহ মুখ ঢাকার যাবতীয় জামা-কাপড় নিষিদ্ধ করার পক্ষপাতি শিবসেনা। তাদের দাবি, ‘‘বোরখা পরে, মুখ ঢেকে যাঁরা ঘুরে বেড়ান, জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে তাঁরা বিপজ্জনক। তাই কাউকে শনাক্ত করতে নিরাপত্তা বাহিনীর যাতে সমস্যা না হয়, তার জন্য অবিলম্বে এই পদক্ষেপ করা উচিত।’’

    অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, ফ্রান্স-সহ এই মুহূর্তে বিশ্বের ১৫টি দেশে বোরখা নিষিদ্ধ। ইউরোপের দেশগুলির মধ্যে ২০১১ সালে ফ্রান্সই প্রথম বোরখা নিষিদ্ধ করে। ব্রিটেনে বোরখা নিষিদ্ধ করার দাবি উঠলে ২০১৭-তে তা খারিজ করে দেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। অস্ট্রেলিয়াতেও বোরখা নিষিদ্ধ করা নিয়ে বাদানুবাদ জারি। কিন্তু শিবসেনার কথায়, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স এবং ব্রিটেনে রাস্তায় মুখ ঢেকে বেরনো নিষিদ্ধ। ভারতেও তেমন নির্দেশ জারি করতে হবে।

    যদিও বিজেপির তরফে ইতিমধ্যেই শিবসেনার প্রস্তাবের বিরোধিতা করা হয়েছে। দলের জাতীয় মুখপাত্র তথা রাজ্যসভা সাংসদ ডিভিএল নরসিংহ রাও এবং  কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামদাস আটওয়াল শিবসেনার প্রস্তাব খারিজ করেছেন। আটওয়াল বলেন, ‘‘মানছি কিছু লোক বোরখার অপব্যহার করছে। কিন্তু বোরখা পরিহিত সব মহিলাকে সন্ত্রাসবাদী বলা ঠিক নয়।  প্রথামাফিক বোরখা পরার অধিকার রয়েছে ওঁদের। তাই মহারাষ্ট্র বা ভারতে কোনও জায়গাতেই বোরখা নিষিদ্ধ করা উচিত নয়।’’
    তবে দলীয় নেতাদের সঙ্গে একমত নন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া সাধ্বী প্রজ্ঞা। তাঁর মতে, ‘‘দেশের নিরাপত্তার প্রশ্ন যেখানে জড়িয়ে, সেখানে এমন প্রথায় কিছুটা বদল আনা যেতেই পারে। তবে আইনি পথে বোরখা নিষিদ্ধ করার চেয়ে মুসলিমদের নিজেদেরই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। কারণ কেউ বোরখার অপব্যবহার করলে ওদেরই বদনাম হবে।’’

    এর আগে, সোমবার বোরখা, নকাব এবং মুখ ছাকার যাবতীয় পোশাকের উপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি দিয়েছিল হিন্দু সেনা সংগঠনও।