|
---|
নতুনগতি, আজিজুর রহমান,পূর্ব বর্ধমান : কিছুদিন আগেও ধান গাছে শিষ ছিল। শিষে ধানও ছিল বেশ ভালো। কয়েকবছর ক্ষতির পর এবারের বোরো চাষে ধানের ফলন দেখে মুখে হাসি ফুটেছিল গলসির বিভিন্ন মাঠের চাষিদের। সোনার ফসল তুলতে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু জায়গায় তোড়জোড় শুরুও হয়েছিল। তবে সেই হাসির আর শেষ রক্ষা হলনা। দুদিন আগে আচমকা ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে মাঠের জমিতেই ঝড়ে গেল পাকা ধান। মাঠ জুড়ে এখন শুধু হা হা কার। ধান জমিতে দাড়িয়ে আছে শুধু ফসলবিহীন গাছ। যা দেখে একপ্রকার হতাশ গলসির চাষিরা। বর্তমানে ওই ফসল কাটলে তাতে যা ধান বের হবে সেইদিয়ে কাটার খরচও বের হবেনা এমনই দাবী চাষিদের। তারা জানাই, আচমকা শিলাবৃষ্টির ফলে গলসি ১ নং ব্লকের হরিপুর, রামপুর গলিগ্রাম এবং গলসি ২ নং ব্লকের ইরকোনা মৌজার অধিকাংশ চাষি সর্বশান্ত হয়ে গেছে। মাঠেই ঝড়ে গেছে তাদের গাছপাকা সোনার ফসল। তাছাড়াও জমিতে এখনও দাঁড়িয়ে রয়েছে জল। স্থানীয় চাষি দেবাশীষ ঘোষ, সেখ মহসিন বলেন, শুক্রবার দুপুর নাগাদ শিলাবৃষ্টি হওয়ায় জমিতে ঝড়ে গেছে পাকা ধানের নব্বই শতাংশ। আমরা বেশিরভাগ চাষি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে চাষ করেছি। কেউ বা মহাজনের কাছে সার কীটনাশক ধার নিয়েছি। কেউ স্থানীয় সমবায় থেকে লোন নিয়েছি। সারের অধিক দাম মেটাতে একপ্রকার পকেট ফাঁকা হয়ে গেছে। তারপর জমিচষা, রোপন, নিরেন ও কীটনাশক প্রয়োগের খরচ হয়েছে। এমন হওয়ায় আমাদের সবকিছু শেষ হয়ে গেল। সেখ ইউসুফ নামে আর এক চাষি বলেন, গতবারও ক্ষতি হয়েছিল। সরকার কোন সাহায্য করেনি। এবারেও শিলাবৃষ্টিতে ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। যার জন্য আমরা ব্যপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তিনি বলেন, বাড়িতে সরকারি চাকরি নেই। বাড়তি কোন উপার্জনও নেই। চাষ করেই আমরা রুজির ব্যবস্থা ও ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ চালাই। চাষ করতে অনেক টাকা ঋন নিয়েছি যা আর পরিশোধ করতে পারবো না। আমদের সেই ঋন মকুপ করুক সরকার। মুন্শী সাইমুর হোসেন বলেন, বারো বিঘা চাষ করেছি। একটাও ধান নাই। সব শেষ হয়ে গেছে। আড়াই লক্ষ টাকা ঋন নিয়েছি। কৃষি বীমাও করছে সরকার। এই অবস্থায় আমাদের সব কৃষি ঋন মকুপ করুক সরকার। নাহলে আমাদের বিষ খেতে হবে বা গলায় দড়ি দিতে হবে। কারন একদিকে ব্যাংকের ও মহাজনের ঋণ ওন্যদিকে বাড়িতে খাবারের চিন্তা। কি করবো ভেবে কুল পাচ্ছি না। তার সাথে সাথে সকল ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের দাবী ব্যাংকের ঋণ মকুপ করে তাদের পাশে থাকুক সরকার।