ধর্মের ভেদাভেদ ভুলে এক মুসলিম ভাইয়ের প্রাণ বাঁচালেন সুমিত

মোহাঃ কামরুজ্জামান, কালিয়াচক মালদা, নতুন গতি:

    মানুষ এর মনুষ্যত্ব থাকে মানুষের ব্যবহারে এবং মানুষের গুণে। ঠিক মানুষত্বের পরিচয় দিয়ে এক মুসলিম ভাইয়ের প্রাণ বাঁচিয়ে অনন্য নজির গড়লেন মালদা জেলার এক বেসরকারি সংস্থা ‘স্বপ্ন উড়ান’-এর সহ সভাপতি সুমিত।

    তিনি নিজ গাড়ি করে শিলিগুড়ি থেকে কাজ সেরে মালদার দিকে রওয়ানা দেন। ইসলামপুর নয়াহাট এসে পৌঁছাতেই রোডে এক বিশাল আকারে জ্যাম দেখতে পান। তিনি গাড়ি থেকে বেড়িয়ে একটু আগে এসে দেখেন এক ভদ্রলোক রক্তাক্ত অবস্থায় রোডে পড়ে রয়েছে। জানতে চান কি হয়েছে? জানা গেল পেছন থেকে গাড়ি থাক্কা মেরে পালিয়েছে। পুলিশ কেসে জড়াতে হবে তার ভয়ে তাঁকে কেউ কোনো হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইছেন না। কিন্তু এটা হয়তো এখনো অনেকেরই অজানা যে, এখন আর সেই আইন নেই আগে

    ব্যক্তিকে কোনো হাসপাতালে ভর্তি করানো হোক সে যেন আগে প্রাণে বাঁচে। সুমিতের কিন্তু মেডিক্যাল বিষয়ে অনেক কিছু জানা। রাস্তায় খালি এম্বুলেন্স আসতে দেখে সুমিত তাকে হাত দেখায় কিন্তু সে দাঁড়াই নি। তারপর সুমিত আর সেখানে দেরি না করে পাশের কয়েকজনের সাহায্য চেয়ে তার গাড়ির পেছন সিটে শুইয়ে দিয়ে গাড়িকে এইদিক সেইদিক কাটিয়ে নিয়ে যান হাসপাতালে। এইভাবে লাল কাপড় দেখাতে দেখাতে প্রায় ১৫ কিমি পথ অতিক্রম করে সোজা এম.জি.এম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পৌঁছান। হাসপাতালে ইমারজেন্সি থেকে সোজা সিটি স্ক্যানের জন্য পাঠানো হয়। মাথায় গুরুতর আঘাত হওয়ার কারণে ও.টি রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। কারণ লোকটির কান দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে,পায়েও গুরুতর আঘাত লেগেছে এবং সেন্স হারিয়ে ফেলেছে।

    আগের থেকে একটু সুস্থ হতেই ব্যক্তিটির পরিচয় জানা যায়। তার নাম – মোহাঃ রহিমুদ্দিন। বয়স -৩৬ বৎসর।
    বাড়ি -কাঁঠালবাড়ি, ইসলামপুর। তিনি একজন কৃষক। কৃষিকাজের কিছু জিনিষ নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন।
    তার বাড়ির লোকজন এসে পৌছিয়েছেন হাসপাতালে। তাদের সেই ভিজে গলার কান্নাই সুমিতকে জড়িয়ে বলেছেন আপনি মানুষ নয় ভগবানের দূত। আপনাকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাই।

    ইমারজেন্সি বিভাগের ডাক্তার সায়ানিকা উনার ট্রিটমেন্ট করতে একটুও সময় নষ্ট করেননি। উনি বলেন যদি ১০মিনিট এর মধ্যে পেসেন্টকে না নিয়ে আসা হত তাহলে খারাপ কিছু খবর শুনতে হত তার পরিবারকে।