পার্শ্বশিক্ষকদের উপর পুলিশের গুন্ডা রাজ, আলো নিভিয়ে লাঠি মেরে অনশন উঠিয়ে দেওয়া হলো

সাইফুদ্দিন মল্লিক : গতকাল ১৬ আগস্ট শুক্রুবার বিকাশ ভবন অভিযান এবং অনশন কর্মসূচি ছিল পার্শ্বশিক্ষকদের। কলকাতা অনশন কর্মসূচিতে বাঁধা পেয়ে কল্যাণীতে লাগাতার অনশন  আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা করা হয় পার্শ্বশিক্ষক ঐক্যমঞ্চের তরফে৷ আজ শনিবার কল্যাণী বাস টার্মিনালে অনশন শুরু হয়। অনশনের সাত ঘণ্টা পর তাণ্ডব চালায় পুলিশ৷ অনশন মঞ্চ ফাঁকা করতে বেপরোয়া লাঠিচার্জ করা হয়৷ লাঠি চার্জে বাদ যায়নি শিক্ষিকারাও।

    সন্ধ্যার পরবর্তীতে আলো বন্ধ করে লাঠি চার্জ হয়। পুলিশ টর্চ লাইট মেরে বসে থাকা অনশন কারীদের উপর বর্বর অত্যাচার করেন। পুলিশ-শিক্ষকদের খণ্ডযুদ্ধে কয়েকজন শিকার শিক্ষিকার পোশাক ছিঁড়ে যায় বা ছিঁড়ে দেওয়া হয়। মহিলা শিক্ষকদের উপর লাঠিচার্জে ছিলনা কোন মহিলা পুলিশ। কিছু মহিলা শিক্ষক ভয়ে কাঁদতে শুরু করেন। সাংবাদিকদের উপরেও চলে লাঠিচার্জ

    পুলিশি তাণ্ডবের প্রতিবাদে কল্যাণী স্টেশন লাগোয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবরোধ করে রেখেছেন ক্ষুব্ধ শিক্ষকরা৷ এই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার ক্লাস বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছে৷ পুলিশের দাবি, আগাম কোনও অনুমতি না নিয়ে অনশন বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন পার্শ্বশিক্ষকরা৷ অনুমতি না নিয়ে জমায়েত করার অভিযোগে তাঁদের এলাকা ফাঁকা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়৷

    দীর্ঘ বঞ্চনার দাবিতে পথে নামার ডাক। নিজেদের অধিকার বুঝে নিতে পথে নেমেছিলেন প্রায় কয়েক হাজার শিক্ষক। জাতীয় পতাকা বুকে আগলে রাজপথেই গেয়ে ওঠেন ‘উই শ্যাল ওভার কাম।’ জাতীয় সংগীত গেয়ে শিক্ষকেরা জানিয়ে দিলেন, তাঁরা চান তাঁদের পূর্ণ অধিকার৷ বিকাশ ভবন অভিযানে বাঁধা পাওয়ার দুর্যোগ মাথায় নিয়ে খোল আকাশের নীচে রাত কাটানোর পর এবার শনিবার নদিয়ার কল্যাণীতে অনশন শুরু হয়। মূলত , মাইনের বৃদ্ধি এবং পূর্নশিক্ষক রূপে পুনর্বহালের দাবি নিয়ে এই অনশন আন্দোলন ছিল। সম কাজ করে কেনো আমরা পূর্ন শিক্ষকদের কয়েক গুন কম মাইনাতে কাজ করবো। বহু বছর চাকরি করেও নয় – দশ – বারো এবং কেহ চোদ্দ হাজার মাইনাতে কাজ করেন।

    ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সম্পাদক কিংকর অধিকারী৷ তিনি জানিয়েছেন, ‘‘ছিঃ, পুলিশের এই বর্বরতা, তাণ্ডব আচরণের তীব্র ধিক্কার জানাই। এইভাবে কোনদিন আন্দোলন দমন করা যায় না। দোষী পুলিশ অফিসারদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে হবে।’’ মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা সম্পাদক অনিমেষ হালদার বলেন, ‘‘রাতের অন্ধকারে পার্শ্বশিক্ষকদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে এভাবে পুলিশি বর্বরতার তীব্র নিন্দা জানাই। পার্শ্বশিক্ষকদের সম্মানজনক ভাতা ও মর্যাদার ব্যাপারে পূর্বতন সরকারের মত বর্তমান সরকারও চরম বঞ্চিত করছে। দলমত নির্বিশেষে প্রত্যেকটি পার্শ্ব শিক্ষককে এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ভাবে প্রতিবাদে সামিল হওয়া উচিত৷’’

    শান্তিপূর্ন অনশনের পুলিশের লাঠিচার্জ এটা কোন গনতন্ত্রের নিদর্শন!