থানার আইসি-কে উলঙ্গ করার হুমকি দিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন বিজেপি নেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক:- সম্প্রতি বাঁকুড়ার ছাতনা থানার আইসি-কে উলঙ্গ করার হুমকি দিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন বিজেপি নেতা জীবন চক্রবর্তী। এ বার নাম না করে তৃণমূল নেতাদের রাস্তায় বিবস্ত্র করে দাঁড় করানোর হুঁশিয়ারি দিলেন বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নিলাদ্রীশেখর দানা। বুধবার বাঁকুড়ার ১ নম্বর ব্লকে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি কল্যাণীর এমসে নিলাদ্রীর মেয়ের নিয়োগে যে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, তার প্রেক্ষিতেই প্রকাশ্যে মাইক হাতে বিধায়ক বললেন, ‘‘আপনারাও শয়ে শয়ে লোক ঢুকিয়েছেন। যে দিন সেই তালিকা আনব, সে দিন রাস্তায় আপনাদের উলঙ্গ দাঁড় করাব।’’ এই মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই নিলাদ্রীশেখর জানান, তাঁর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। বিজেপি বিধায়ককে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল।বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে স্বজনপোষণ বন্ধ-সহ একাধিক দাবিতে বুধবার বাঁকুড়া এক নম্বর ব্লকে বিডিওর কাছে ডেপুটেশন জমা দিতে গিয়েছিলেন জেলা বিজেপির নেতৃত্ব। তাঁদের নেতৃত্বে ছিলেন বিধায়ক নিলাদ্রীশেখর। জোর করে বিজেপির নেতা-কর্মীরা বিডিও অফিসে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। দু’পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কিও হয়। এর পরেই বিডিও অফিসের মূল দরজা ঘেরাও করে রেখে মাইক হাতে তুলে নেন নিলাদ্রী। মেয়ে মৈত্রী দানার বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে চাকরি পাওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, সেই প্রসঙ্গে নিলাদ্রীশেখর বলেন, ‘‘এ রাজ্যে চাকরি নেই। সৎ ভাবে চাকরি মিলছে না। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ফর্ম ফিলাপ করে নো ওয়ার্ক নো পে-র ভিত্তিতে কাজ পেয়েছে। তা নিয়ে এমন করছে যেন বিশাল অপরাধ করে ফেলেছে।’’এর পরেই নাম না করে শাসকদলের নেতাদের উদ্দেশে বিজেপি বিধায়ক বলেন, ‘‘জেনে রাখবেন, বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ, বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয় ও পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ-সহ সর্বত্র শয়ে শয়ে লোক ঢুকিয়েছেন আপনারা। এগুলোর তালিকা যে দিন তুলে ধরব, সে দিন রাস্তায় আপনাদের উলঙ্গ করে দাঁড় করাব।’’এই মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধতেই উল্টো সুর শোনা গেল বিজেপি বিধায়কের গলায়। সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আপনারা শুনতে ভুল করেছেন। আমি বলেছি যে ভাবে গণতন্ত্রকে উলঙ্গ করে রাস্তায় নামানো হচ্ছে, আমরা তার শেষ দেখে ছাড়ব।’’ নিলাদ্রীর এই বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছে তৃণমূল। রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের প্রাক্তন রাষ্ট্রমন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা বলেন, ‘‘বিধায়ক-কন্যার চাকরি সংক্রান্ত বিষয়ে সিআইডি ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে। বিধায়ক কন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে সিআইডি। বিধায়ক এখন জেলের দরজা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেন। তাই এই ধরনের কুরুচিকর কথা বলছেন।’’প্রসঙ্গত, কল্যাণী এমসে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বেআইনি ভাবে নিজেদের লোককে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির কয়েক জন সাংসদ ও বিধায়কের বিরুদ্ধে। এই তদন্তে নেমে গত সোমবার নিলাদ্রীর মেয়ে মৈত্রীকে তলব করেছিল সিআইডি। যদিও ওই দিন তদন্তকারীদের মুখোমুখি হননি মৈত্রী। মৈত্রীর মতো বিজেপির আর এক বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষের পুত্রবধূর বিরুদ্ধেও বেআইনি ভাবে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিধায়কের বাড়িতে হানা দিয়েছিলেন তাঁরা।