জোরালো হয়ে উঠছে কৃষক আন্দোলন, আন্দোলন বন্ধ করার নির্দেশ কেন্দ্র সরকারের

নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক:পঞ্জাবের কৃষক সংগঠনগুলির ডাকা ‘দিল্লি চলো’ অভিযানে ব্যাপক সাড়া মিলছে। শুধু পঞ্জাব বা হরিয়ানার গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নেই এই আন্দোলন। অন্যান্য রাজ্যের কৃষকরাও ধীরে ধীরে এই আন্দোলনের শরিক হচ্ছেন। ফলে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্রের নয়া কৃষি আইন বিরোধী জনমত জোরদার হচ্ছে। সেইসঙ্গে আন্দোলনের ব্যাপকতাও বিস্তৃত হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশে এই আন্দোলনের আঁচ লেগেছে। উল্লিখিত রাজ্যগুলি থেকেও কৃষকরা ট্রাক্টরে চেপে দিল্লি অভিমুখে রওনা দিয়েছেন এই আন্দোলনে শরিক হতে। উত্তরপ্রদেশ হয়েই তাঁরা দিল্লিতে ঢুকবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

     

    আন্দোলনে যোগ দিচ্ছে একাধিক রাজ্য হরিয়ানা ও দিল্লি পুলিশের একাধিক বাধ অতিক্রম করে, সংঘাতের মধ্য দিয়ে শেষ পর্যন্ত দিল্লির নানা পয়েন্টে পৌঁছতে সক্ষম হন পঞ্জাব ও হরিয়ানা থেকে আসা হাজারে হাজারে কৃষক। প্রতিবাদীদের অনড় মনোভাবের সামনে শুক্রবার রাতে দিল্লি পুলিশ তাদের দিল্লিতে ঢুকতে দিতে বাধ্য হয়। তার আগে সিঙ্ঘু বর্ডারে (দিল্লি-হরিয়ানা সীমানা) গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোডের উপর হাজারে হাজারে ট্রাক্টর দাঁড়িয়ে পড়ে। তাতে কৃষকদের থিকথিকে ভিড়। হরিয়ানা পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক জানান, ট্রাক্টরের পাশাপাশি বাস, প্রাইভেট কার, ট্রলি করেও হরিয়ানার বিভিন্ন হাইরোড ধরে লোকজন দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। কৃষক সংগঠনগুলির দাবি, কেন্দ্রকে এই কৃষি আইন অবিলম্বে প্রত্যাহার করে নতুন করে আইন পাস করাতে হবে। সেখানে যাতে কৃষকদের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের ব্যবস্থা থাকে।

    শুক্রবার রাতে টিকরি বর্ডার দিয়ে কৃষকদের দিল্লিত ঢোকার অনুমতি দেওয়ার আগে দিল্লি-হরিয়ানা সীমানার সোনিপত ও ঝজ্জরে কয়েক দফায় উত্তেজনা তৈরি হয়। জলকামান, টিয়ার শেল ছুড়ে প্রতিবাদীদের ফেরাতে চেয়েছিল দিল্লি পুলিশ। কিন্তু, চাষিদের একরোখা মনোভাবের কাছে হার মেনে শেষ পর্যন্ত দিল্লিতে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়। উত্তর-পশ্চিম দিল্লির বুরারি ময়দানে অবস্থান করার অনুমতি দেওয়া হয়। শনিবার ভোররাত পর্যন্ত কৃষকরা দলে দলে সেখানে জড়ো হয়েছেন।

     

    এদিকে, উত্তরপ্রদেশের কমপক্ষে ১২টি জেলার কৃষক সংগঠন নয়া কৃষি আইনের বিরোধিতা করে শনিবার সকালে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। হাইওয়েগুলিতে অবরোধ করা হয়। পরে পরে ইউপির এই কৃষকরাও দলে দলে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন অভিযানে শামিল হতে।

    কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের প্রতিবাদে ওডিশায় আগুনে আত্মহত্যার চেষ্টা তিন কৃষকের ভারতীয় কিষান সংঘের মুখপাত্র ধর্মেন্দ্র মালিক জানান, ১৯৮৮ সালে মহেন্দ্র সিং তিকাইতের নেতৃত্বে ৫ লক্ষ কৃষকের সমাবেশ হয়েছিল দিল্লিতে। কেন্দ্রে তখন ছিল রাজীব গান্ধীর সরকার। এ বার মোদী সরকারকেও তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে হবে। জলকামান বন্ধ করায় কৃষক নেতার ছেলের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা

    মধ্যপ্রদেশ থেকেও দল দলে কষক আসছেন দিল্লির উদ্দেশে। অভিযোগ, আগ্রায় ন্যাশনাল হাইওয়ের উপর উত্তরপ্রদেশ পুলিশ শুক্রবার তাঁদের আটকে দিয়েছে। আর এগোতে দেওয়া হচ্ছে না। কৃষকরা সেখানেই বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন। মধ্যপ্রদেশ কিষান সংঘের সাধারণ সম্পাদক অখিলেশ সিং বলেন, বুধবার রাত থেকেই তাঁরা শান্তিপূর্ণ ভাবে সমাবেশে যোগ দিতে চাইছেন। কিন্তু, উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বাধায় সম্ভব হচ্ছে না। সূত্রের খবর, পরে তাঁদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। দিল্লি-মথুরা-আগ্রা হাইওয়ে ধরে তাঁরা দিল্লি আসছেন। অল ইন্ডিয়া কিষান সভা সূত্রে খবর, রাজস্থানের কৃষকরাও সমাবেশ যোগ দেবেন।