|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা : এবার দুয়ারে রক্তের পরিষেবা নিয়ে হাজির বীরভূম জেলা স্বাস্থ্য দফতর । পথ দেখাচ্ছে বীরভূমের গ্রামীণ পরিকাঠামোর সুলতানপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র । এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র বীরভূমের সিউড়ি ২ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত । এখানে রক্তের চাহিদা সম্পন্ন রোগীদের রক্ত দেওয়া হচ্ছে । বাড়ির কাছেই এই পরিষেবা পেয়ে ভোগান্তি কমেছে রোগী ও রোগীর বাড়ির আত্মীয়ের । কারণ বীরভূমে শুধুমাত্র রক্ত দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে মহকুমা হাসপাতাল ও জেলা হাসপাতালে । তার ফলে গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই বাড়ির কাছেই এই পরিষেবা পেয়ে সুবিধে হবে রোগীর ।
নির্ধারিত অস্ত্রোপচারের আগে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ঠিক রাখা, রক্তাল্পতা বা থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জেলা বা মহকুমা হাসপাতালে বেড দিতে হয় রক্ত নেওয়ার জন্য। বীরভূমে সিউড়ি জেলা হাসপাতাল, রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ ও বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ব্লাডব্যাঙ্ক আছে। তার ফলে এই জায়গাগুলিতেই রোগীদের এসে রক্তের চাহিদাসম্পন্ন রোগীদের রক্ত নিতে যেতে হত । যেহেতু বীরভূম কোনও বেসরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক নেই তাই সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকেই রক্ত সংগ্রহ করতে হয় রোগীদের ।রিকিউজিশন স্লিপের মাধ্যমে প্রোটোকল মেনে সেই রক্ত ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে সংগ্রহ করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সুলতানপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে । সেখানেই দেওয়া হচ্ছে রোগীকে রক্ত ৷ রক্ত শরীরে চলার সময় ওই গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ডাক্তার সবসময়ই থাকছেন রোগীর কাছে । কোনও রোগীর রক্ত চলার সময় শরীরে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে সেই সংক্রান্ত আপতকালীন ওষুধেরও ব্যাবস্থা রাখা হয়েছে ।এই উদ্যোগ প্রশংসা পেয়েছে হয়েছে বীরভূম জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে ৷ ইতিমধ্যেই প্রায় ২০ জন রোগীকে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রক্ত দেওয়া হয়েছে । আগামিদিনে বীরভূমের সমস্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই পরিষেবা চালুর ব্যাপারে ইতিমধ্যেই চিন্তা ভাবনা শুরু করেছে বীরভূম জেলা স্বাস্থ্য দফতর । স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে রক্তের প্রয়োজন সংক্রান্ত রেফার কমানো যাবে কারণ গত ১ বছরে রক্তের চাহিদাসম্পন্ন রোগীদের ক্ষেত্রে বীরভূম জেলায় স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে জেলা ও মহকুমা হাসপাতালে রেফারের সংখ্যা প্রায় ৩০২০ জন ।
মনে করা হচ্ছে, এই ভাবে এই পরিষেবা বীরভূমের প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চালু হলে চাপ কমবে জেলা হাসপাতাল ও মহকুমা হাসপাতালগুলিতে ৷ বাড়ির কাছে রক্তের পরিষেবা পেয়ে হয়রানি ও যাতায়াতের খরচ কমবে রোগী ও রোগীর বাড়ির লোকদের । রোগীর আত্মীয় সেখ মহরম আলি ও সানেহা বিবি জানিয়েছেন বাড়ির কাছেই এই পরিষেবা পেয়ে খুব সুবিধা হল৷সুলতানপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেফিক্যাল অফিসার ডাঃ সামিম আরিফ জানিয়েছেন তিনি আগে থেকেই রোগীদের জন্য এই পরিষেবা শুরু করেছেন ৷ তার জন্য সাহায্য পেয়েছেন বিএমওএইচ-এর কাছে । সব রকমের প্রোটোকল অনুসরণ করে রোগীর শরীরে রক্ত দেওয়া হচ্ছে । জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আরি বলেছেন, ‘‘এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংশাজনক ৷ আগামী দিনে জেলার সমস্ত গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই পরিষেবা চালু করা যায় কি না তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে।’’