|
---|
মালদা: বৃহস্পতিবার ভোর রাত্রে অতর্কিতে শেয়ালের দলের হানার জেরে আহত ৪০ জন গ্রামবাসী। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ২০ জন। ঘটনা ঘিরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকাজুড়ে। ঘটনাটি ঘটেছে হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক এলাকার হরদম নগর গ্রামে। বেশ কয়েকদিন যাবৎ হরিশ্চন্দ্রপুর জুড়ে একের পর এক শিয়ালের হানায় আতঙ্ক ছড়িয়ে ছিল এলাকায়। আর এরই মধ্যে ভোররাত্রে এক সঙ্গে এত জন গ্রামবাসী শিয়ালের হাতে আক্রান্ত হওয়ায় থমথমে হয়ে রয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর। এদিকে গ্রামবাসীদের রশের মুখ থেকে ছাড়া পায়নি শিয়ালের দল। ঘটনাস্থলেই দুই শিয়ালকে গ্রামবাসীরা পিটিয়ে মেরে ফেলে বলে খবর।
স্থানীয় সূত্রে খবর হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার হরদম নগর গ্রামে ভোররাত্রে ১৫ থেকে ২০ টি শিয়ালের দল একসাথে অতর্কিতে গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে হানা দেয়।
সে সময় গ্রামের লোকেরা সবে মাত্র ঘুম থেকে উঠেছে। কেউ বেরিয়েছে মর্নিংওয়াকে, কেউবা মন্দিরে কীর্তন করতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, কেউবা সবেমাত্র উঠোন পরিষ্কার করছেন। এই সময় একসাথে গ্রামবাসীদের ওপর বিভিন্ন বাড়িতে ঝাঁপিয়ে পড়ে শিয়ালের দল। অতর্কিত শিয়ালের দলের হামলায় হতভম্ব হয়ে যায় গ্রামবাসী। আতঙ্কে গ্রামবাসীরা চিৎকার শুরু করে দেন। এরই মধ্যে কয়েক জন গ্রামবাসীকে মুখে করে জঙ্গলের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে শিয়ালের দল। শিয়ালের আক্রমণে ঘটনাস্থলে প্রায় ৪০ জন গ্রামবাসী কমবেশি আহত হন। গ্রামবাসীর আঙ্গুল খোয়া যায় শিয়ালের কামড়ে। আর গ্রামবাসীর মুখের মাংস পর্যন্ত খুবলে নেয় হিংস শিয়াল। ঘটনার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা গ্রামে। গ্রামবাসী লাঠি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে শিয়ালের খোঁজে। ধরা পড়ে দু’টি শেয়াল। গ্রামবাসীর গণ-পিটুনিতে মারা যায় দুটি শিয়াল। এদিকে আহত ৪০ জন গ্রামবাসীকে তড়িঘড়ি হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক ছোটন মন্ডলের নেতৃত্বে একদল চিকিৎসক ও নার্স তড়িঘড়ি হাসপাতাল ক্যাম্পাসে বিশেষ ভাবে চিকিৎসা শুরু করেন আহত গ্রামবাসীদের। ইতিমধ্যে গ্রামে গিয়ে দেখা গেলো থমথমে পরিবেশ। লাঠি হাতে গ্রামবাসীরা পাড়ায় পাড়ায় পাহারায় নেমেছেন। আতঙ্কে ঘরের বাইরে বেরোতে চাইছে না শিশু ও বৃদ্ধ এবং বাড়ির বউরা।
একদিকে করোনা পরিস্থিতির তৃতীয় ঢেউ শিওরে কড়া নাড়ছে অন্যদিকে রাত নামলেই বাড়ছে শেয়ালের আতঙ্ক এই পরিস্থিতিতে আজ থেকে রাত জেগে কাটাবেন হরদমনগরবাসী।