|
---|
নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক: তিনটি কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের তীব্র আন্দোলনের মাঝে দেশের বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দল কেন্দ্রের কাছে আইনের পুর্নবিবেচনার আর্জি জানিয়েছে শুক্রবার। গতকালই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আইন প্রত্যাহার না করলে লাগাতার আন্দোলনের হুমকি দিয়ে রেখেছেন। এরই মাঝে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করে শীঘ্রই কৃষি আইন সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানের আবেদন জানিয়েছেন। তবে সমিল্লিতভাবে বিরোধী দলনেতারা কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানিয়েছেন সংসদের শীতকালীন অধিবেশন অল্প সময়ের জন্য ডাকা হোক। এই অধিবেশনে কৃষক আন্দোলন এবং তার জন্য উদ্ভ(ত পরিস্থিতি নিয়ে সেখানে আলোচনা করুক সরকার। শুক্রবার ৪ ডিসেম্বর অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের বৈঠক ডেকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সেই বৈঠকে এই আইন কীভাবে সাধারণ মানুষের জীবনে বিরুপ প্রভাব ফেলছে তা নিয়েও আলোচনা হয়। এর ফলে যে খাদ্যপণ্যের দাম হু-হু করে বাড়তে শুরু করেছে, সে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। জনবিরোধী এই আইন অবিলম্বে বাতিল করার দাবিও জানানো হয়েছে।
অপরদিকে, কংগ্রেস দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরি লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লাকে চিঠি লিখে সদস্যদের অধিবেশন ডাকার অনুরোধ করেছেন। তিনি চিঠিতে লিখেছেন, বর্তমানে দেশের সামনে বহু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে আলোচনার জন্য। যেমন,কৃষক আন্দোলন,করোনার টিকা সংক্রান্ত পরিস্থিতি, চিনের সঙ্গে সীমান্তে উত্তেজনা ইত্যাদি। এই সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে এখনই আলোচনার প্রয়োজন বলে মনে করেন অধীর চৌধুরি।
কংগ্রেসের লোকসভা সাংসদ শশী থারুর অধীরবাবুর প্রশংসা করে বলেছেন, এটা সত্যি খুব ভালো প্রস্তাব। সংসদের অধিবেশন ডেকে যেখানে দেশের সামনে বর্তমান সমস্যাগুলি নিয়ে আলোচনা করুক সরকার। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি মনে করেন, কালা কৃষি কানুন অবিলম্বে প্রত্যাহার করা ছাড়া অন্য কোনও পথ নেই। সরকার এর চেয়ে কমে রাজি হলেও কোনও লাভ নেই। যেটা কৃষকদের সঙ্গে বেইমানি হবে। কংগ্রেসের অপর এক নেতা অশ্বিনী কুমার বলেছেন, দেওয়াল লিখন স্পষ্ট। কৃষকদের দাবি যদি না পূরণ করা হয় তাহলে বর্তমান কৃষি আন্দোলন আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে। যার ফলে দেশের নিরাপত্তা এবং অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা নষ্ট হবে।
এরই মধ্যে শুক্রবার ৪০ জন কৃষক সংগঠন গঠনের নেতা দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্তে আলোচনায় বসেছেন। শনিবার কেন্দ্রের সঙ্গে কৃষক সংগঠনগুলির তৃতীয় দফার বৈঠক হতে চলেছে। কৃষক নেতারা শনিবারের বৈঠক নিয়ে আলোচনায় তাদের কৌশল ঠিক করবেন। এ দিনও কৃষক সংগঠনগুলি ৩টি বিতর্কিত কৃষি আইন সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবিতে অনড় রয়েছেন। সরকারের সঙ্গে শুধু ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বা এমএসপি নিয়ে আলোচনা বৃথা বলে মনে করছে কৃষক সংগঠনগুলি। কৃষকদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফার বৈঠকের পরও কৃষক সংগঠনগুলি শুক্রবারও তাদের অবস্থান পালটায়নি। বৃহস্পতিবার কৃষক সংগঠনগুলি বিতর্কিত আইনে ৩৯টি বিষয়ে আপত্তির তালিকা জমা দিয়েছিলেন কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমারের কাছে। শুক্রবার তোমার আশাপ্রকাশ করেছেন যে শনিবার কৃষক সংগঠনগুলির সঙ্গে তৃতীয় দফার আলোচনায় সমস্যা মিটে যাবে। তবে কি সরকার বিতর্কিত আইন নিয়ে পিছিয়ে আসতে শুরু করেছে? উত্তর জানা যাবে শনিবার।