|
---|
উজির আলী,চাঁচলঃ ০১ লা অক্টোবর
নদীর জলস্তর বেড়ে গিয়ে গ্রামে বাজারে জল ঢুকেছে। ভেসে গেছে চাষেরজমি, পুকুর, বসতবাড়ি।
বুধবার সেই ছবি ধরা পড়ল মালদহের চাঁচল ১ নং ব্লকের মহানন্দা নদী সংলগ্নে। গালিমপুর বাজার এলাকাতেও জল ঢুকছে। দোকানে জল ঢুকলে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে বলে ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন। জল না নামলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে
আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। বুধবার দুপুর নাগাদ জল ঢুকে যায় গালিমপুর ফুটবল মাঠেও। কোথাও এক হাঁটু জল, আবার কোথাও জলের পরিমাণ কোমর ছুঁই ছুঁই। এ অবস্থায় জল আরও বাড়লে কী হবে তা নিয়ে আতঙ্কে ভুগছেন এলাকাবাসী।
আমাদের খবরের জেরে মহানন্দার জলে প্লাবিত এলাকা বুধবার পরিদর্শন করেছে প্রশাসন।
উল্লেখ্য, মহানন্দা নদী ফুঁসে চাঁচল থানার গালিমপুর,মথুরাপুর সহ বিস্তীর্ন গ্রামে জল ঢুকে পড়ে। প্লাবিত হয় বাগান সহ ঘরবাড়ি। এবং চাষের জমি আগেই ডুবেছে। গ্রামে জল ঢুকতেই নিরাপদ হিসেবে বাঁধরোডের উপরে অস্থায়ীভাবে তাবুতে বসবাস শুরু করেছে গ্রামবাসী।
বুধবার বন্যা কবলিত এলাকা পরদির্শনে যান, চাঁচল ১ নং ব্লকের বিডিও সমীরণ ভট্টাচার্য, চাঁচল থানার আইসি সুকুমার ঘোষ, জেলা কৃষি সেচ ও সমবায় দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ রফিকুল হোসেন, চাঁচল ১ নং ব্লক কৃষি অধিকর্তা দীপঙ্কর দেব সহ স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রশাসন।
এদিন মথুরাপুর ও গালিমপুরের প্রায় ৩০ টি পরিবার বাঁধরোডে আশ্রয় নিয়েছে মতিহারপুরের উপপ্রধান পিঙ্কি খাতুন জানিয়েছে। তাদের ত্রিপল সহ ত্রান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন।জলে প্লাবিত হয়েছে গালিমপুরের উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। ফলে বন্ধ রয়েছে সেগুলিও।
পরিদর্শনে গিয়ে বিডিও সমীরণ ভট্টাচার্য জানান, গ্রামে জল প্রবেশ করেছে। নিরাপদের জন্য বাসস্থান ছেড়ে উঁচুতে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে বাসিন্দাদের। প্রশাসন ত্রান শিবিরের জন্য উদ্যোগী হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
জল না কমলে চাষের ব্যাপক ক্ষতি হবে বলে জানাচ্ছেন কৃষকরা।পরিদর্শনে এসে কৃষি অধিকর্তা দীপঙ্কর দেব জানান, মহানন্দা নদী সংলগ্নমথুরাপুর,ইসলামপুর,তারাপুর,জগন্নাথপুর বিভিন্ন মৌজার প্রায় তিন হাজার বিঘা জমির ফসল জলের তলায় রয়েছে।
জল না কমলে চাঁচল ১ নং ব্লক এলাকার নদী সংলগ্নের কৃষিজমির প্রায় এক কোটি টাকার বেশী ফসল নষ্ট হবে বলে তিনি জানিয়েছে।
এর মধ্যে বেশিরভাগই আমন ধান চাষ হয়েছে। পাশাপাশি সব্জী চাষ ডুবে গেয়ে কৃষকদের মাথায় হাত পরেছে।
কৃষি অধিকর্তা জানান, ক্ষতিপূরনের জন্য বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তবে বাংলা শস্য বিমা যোজনার আওতায় অনেকেই রয়েছেন, ক্ষতিপূরন পেতে বিপাকে পড়তে হবে না কৃষকদের।
সেচ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে এদিন মহানন্দার জলস্তর দাড়িয়েছে ২১.৪৮ মিটার। যা বিপদসীমায় রয়েছে।
তবে জল বাড়তেই রয়েছে। কমবে সম্ভাবনা নেই দাবী করে বলেছেন গালিমপুরের বাসিন্দা হারুন অল রশিদ।এমতাবস্থায় প্রশাসনের পূর্ণ সহযোগীতার আবেদন জানাচ্ছেন কবলিতরা।