অনাস্থায় হার, ভাটপাড়া পুরসভা থেকে অপসারিত অর্জুন সিং

    জাকির হোসেন সেখ, ৮ এপ্রিল, নতুন গতি, বারাকপুর: প্রত্যাশা মত‌ই ভাটপাড়া পুরসভার অনাস্থা ভোটে হার হল অর্জুন সিংয়ের৷ অত‌এব ২২-১১ ভোটে হেরে পুর প্রধানের পদ থেকে অপসারিত হতে হল অর্জুন সিংকে৷

    ভাটপাড়া পৌরসভার দলত্যাগী চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে হাইকোর্টে করা অর্জুন সিংয়ের আবেদন খারিজ সংক্রান্ত এই প্রতিবেদকের করা সবিস্তার খবর গতসপ্তাহের ২রা এপ্রিল সাপ্তাহিক নতুন গতি পত্রিকার অনলাইন নিউজ পোর্টাল‌ই প্রথম প্রকাশ করে। সেদিন কলকাতা হাইকোর্ট তৃণমূল কাউন্সিলরদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষেই রায় দিয়ে, একসপ্তাহের মধ্যে নতুন বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। হাইকোর্টের সেই নির্দেশ মোতাবেক আজ ছিল ভাটপাড়া পুরসভায় অনাস্থা ভোট৷ সেই অনাস্থা ভোটেই পরাজিত হলেন চেয়ারম্যান অর্জুন সিং৷

    ভোট ঘিরে আজ সকাল থেকেই ছিল উত্তেজনা। পুরসভার সামনে এখনও মোতায়েন রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ, ব়্যাফ।
    হেরে যাওয়ার পর এদিন পুরসভা ছেড়ে বেরিয়ে যান অর্জুন সিং৷ এই সময় তাঁকে ঘিরে ‘চৌকিদার চোর’ স্লোগান দিতে থাকেন তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা৷ ফলে পরিস্থিতি কিছুটা ঘোরাল হয়ে ওঠে৷
    পরাজিত অর্জুন সিং সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘অবৈধভাবে এই ভোটে তাঁকে হারানো হয়েছে৷ অনেক কাউন্সিলর তাঁর পাশে থাকলেও শাসক দল অন্যায়ভাবে মামলা দিয়ে দিতে পারে এই ভয়ে তাঁরা আমার বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন৷’’
    তৃনমূল শিবির থেকে তাঁর সব অভিযোগ মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
    তবে হারলেও যে দমবার পাত্র নন তিনি সেকথা তাঁর মন্তব্য থেকেই বোঝা যায়। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের আটজন কাউন্সিলর ছাড়া বাকিরা শাসক দলের সঙ্গে নেই৷ পরে তার প্রমাণ মিলবে৷ নিরপেক্ষ ভোট হলে ভাটপাড়াপুরসভা ফের দখলে আসবে তাঁর৷’’

    তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলের এই জয়, ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে তাদের অনেকটাই এগিয়ে দিল। এবং উল্টোদিকে বেশ কিছুটা ব্যাকফুটে ঠেলে দিল বিজেপিকে।

    ৩৩ আসনের ভাটপাড়া পুরসভায় ১৭ টি ভোট পেলেই পুরবোর্ড অর্জুন সিংয়ের দখলে যেত, সেখানে অর্জুন সিং হারলেন ১১-২২ ভোটে।
    এরপরই ভাটপাড়া পুরসভার পুর প্রধানের পদ থেকে অপসারিত হন অর্জুন সিং। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেই তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে শাসকদল। ফলে এদিনের এই আস্থা ভোট তৃণমূল ও বিজেপি দুই শিবিরের কাছেই ছিল সম্মানের লড়াই। গতসপ্তাহে হাইকোর্টের রায়ে যে লড়াইয়ে প্রথম হাসি হেসেছিল তৃনমূল, আজ সেই লড়াইয়েও শেষ হাসি হাসলো ঘাসফুল শিবির।