|
---|
সেখ মোহাম্মদ ইমরান,নতুন গতি:-
হ্যাঁ, এভাবেও জন্মদিন পালন করা যায়। কেক কাটা হবে না। বেলুন বাঁধা হবে না। মোমবাতি জ্বালানো হবে না। মায় চোব্য চষ্য লেহ্য পেয় খানাপিনাও হবে না। তালি দিয়ে কেউ বলবেও না ‘হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ’!
তবে কিসের জন্মদিন পালন? কেমনতর জন্মদিন পালন? তবুও রবিবার ১৭ মে জন্মদিন পালন হোলো জাহাঙ্গীর বাদশার। তিনি কোনো রাজনৈতিক নেতা নন। তবে সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে ভালোবাসেন। তিনি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অন্যতম জনপ্রিয় টেলিভিশন সাংবাদিক। যিনি পেশার তাগিদে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে খবর করে বেড়িয়েছেন। তিনিই জন্মদিন পালন করলেন ৬০ জন দুঃস্থ অসহায় ব্যক্তিকে এবং ৩০ টি ছাদহীন পথ কুকুরকে রান্না করা খাওয়ার খাইয়ে! অভূতপূর্ব এই উদ্যোগ তিনি নিয়েছেন এবার লক ডাউনের ঘরবন্দী অবস্থায়। এ এক বিরলতম জন্মদিন পালন।
শেষবার কবে নিজের জন্মদিন পালন করেছিলেন জানা নেই জাহাঙ্গীরের। তাঁর কথায়, কোনোদিনই ঘটা করে জন্মদিন পালনের রেওয়াজ নেই তাঁর। দুই মেয়ের জন্মদিন পালন করা হয়। কিন্তু নিজের হয়না।
কর্মব্যস্ত জীবন। ইতিউতি নিত্যদিন ছোটাছুটি আর খবর সংগ্রহের তাড়া। ফুরসতই জোটেনা জন্মদিন পালনের। তবে এবার করলেন। একটু অন্যভাবে, অন্য রূপে, অন্য চিন্তা ভাবনাকে জারিয়ে। তাঁর এই রসময় ভাবনাকে স্যালুট জানিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ সিরাজ খান, কোলাঘাট থানার ওসি রাজকুমার দেবনাথ সহ এলাকার বিশিষ্ট মানুষজন।
সম্প্রতি ‘অল ইণ্ডিয়া হিউম্যান রাইটস’ থেকে সমাজসেবার জন্য পেয়েছেন দুর্লভ সম্মান। লক ডাউন চলাকালীন মেছেদা সংলগ্ন এলাকায় ভবঘুরেদের লাগাতর খাইয়ে যাচ্ছে লক ডাউন উপলক্ষ্যে নব গঠিত সংগঠন’ আমরা বন্ধু’। বিশাল সাড়া মিলছে একাজে। ‘আমরা বন্ধু’ দলের সদস্য শান্তনু পাত্র বলেন, ‘জাহাঙ্গীর বাদশা একটা ব্র্যান্ড নেম। আর উনি উদার মন নিয়ে সবসময় মানুষের পাশে থাকেন। উনি আরো বেশি বেশি করে অসহায় মানুষের পাশে থাকুন’।
শুধু সাংবাদিকতা নয়, সমাজসেবার মহান ব্রত তিনি গ্রহণ করেছেন অনেক আগেই। এলাকার দুঃস্থদের নানা ত্রাণসামগ্রী বিলিবন্টনে তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এবারে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে পালন করলেন নিজের জন্মদিন। খাসির মাংস, পায়েস, মিস্টি, আম ও পাঁপড় সহযোগে দুঃস্থদের ভুরিভোজ করালেন নিজের হাতে।
কি বলছেন জাহাঙ্গীর ঘরণী গার্গী বাদশা? তিনি বলেন, ‘এই উদ্যোগ আমার কাছে অত্যন্ত গর্বের বিষয়। কি হবে দামী কেক কেটে? এই কঠিন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেয়ে আর কিছুই আনন্দের হয় না’। জাহাঙ্গীর জানান, ‘সারা বছর আমি বিভিন্ন সমাজসেবা মূলক কাজ করে থাকি। আমি চাইছি সবাই এভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ুক দুঃস্থদের পাশে। এই কঠিন পরিস্থিতিতে সরকারের একার সাধ্য নাই সমস্যার মোকাবিলা করার। তাই জনসাধারণের উচিত নিজেদের সাধ্যমতো চেষ্টায় একটু সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া’।