জল অপচয় নিয়ে সরব ভবানীপুর গ্রামবাসী

মোঃ নাজিম আক্তার, হরিশ্চন্দ্রপুর, মালদা: পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগ ব্লক, হাসপাতাল,পঞ্চায়েত ও সরকারি নানান দপ্তরে এক পক্ষ কাল ধরে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি ও অভিযান চলছে। ১৫ জুলাই থেকে কর্মসূচি গুলি শুরু হয়েছে চলবে আগামী ২৮ জুলাই পর্যন্ত। কর্মসূচি গুলির মধ্যে একটি অন্যতম হল ‘জল বাঁচান, জীবন বাঁচান’, ও ‘ জল ধরো, জল ভরো।  কিন্তু মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় তা উলটো ছবি ধরা পড়েছে।
দৈনন্দিন জীবনে জল নষ্টই যেন স্বাভাবিক। তবে কিছু ক্ষেত্রে সরব হচ্ছেন এলাকার মানুষ। যেমন হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের মহেন্দ্রপুর জিপির ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দারা। রাস্তার ধারে টেপকল গুলি থেকে অনবরত জল নষ্টের দৃশ্য দেখে তাঁরা চুপ থাকেননি। তাই জল অপচয় বন্ধের দাবিতে হরিশ্চন্দ্রপুর ব্লক প্রশাসনকে লিখিত ভাবে জানাবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

    এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, যেখানে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে জলসঙ্কট তৈরি হয়েছে, সেখানে প্রতিদিন পিএইচই থেকে বসানো টাইম কলগুলো থেকে যথেচ্ছ ভাবে জল নষ্ট হচ্ছে। অবিলম্বে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে তাঁরা বিডিওর কাছে অনুরোধ করবেন ।

    এদিন সকালে গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ভবানীপুর গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় টাইম কলগুলি থেকে অনবরত জল পড়ছে। অনেকে জল নিয়ে চলে যাচ্ছেন, কিন্তু কল কেউই বন্ধ করছেন না। বলা ভালো, জল বন্ধ করার কোনও ব্যবস্থাই নেই। কোনও কলের মুখেই ট্যাপ নেই। ফলে কম বেশি সমস্ত কল থেকেই জল নষ্ট হচ্ছে। যেখানে চেন্নাই, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র-সহ দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে ইতিমধ্যেই জলসঙ্কট দেখা দিয়েছে, সেখানে এভাবে জল নষ্ট হওয়ার বিষয়টি গ্রামের মানুষকেও ভাবিয়ে তুলেছে।
    এদিন ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা সামসুল, কবির, মালেক, রবিউল, রাজা ও জামশেদরা বলেন, বেশ কয়েকটি রাজ্যে জলের জন্য লোকেরা হাহাকার করছে।এদিকে আমাদের গ্রামে পিএইচই-র কলগুলি থেকে যথেচ্ছ হারে পানীয় জলের অপচয় হচ্ছে। পানীয় জলের অপচয় বন্ধ করার জন্য ব্লক প্রশাসন যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়, সেই কারণেই আমরা গ্রামের লোকেরা লিখিত ভাবে বিডিওকে বিষয়টি জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

    মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ভবানীপুর গ্রাম ছাড়া আরও বেশ কয়েকটি এলাকাতেও একই ভাবে জল নষ্ট হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন অনেকেই।আরও এক গ্রামবাসী রনজিম আলি বলেন, এটা শুধু ভবানীপুর গ্রামের সমস্যা, তা নয়। খোঁজ নিয়ে দেখুন, অন্যত্রও একই ভাবে জলের অপচয় হচ্ছে।

    মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান জয়নব নেশা বলেন, আমার পঞ্চায়েত এলাকায় ২০০-র বেশি টাইমকল আছে। সেখানে পিএইচই থেকে জল সাপ্লাই হয়। সব জায়গাতেই কম বেশি জলের অপচয় হচ্ছে, এটা ঠিক। কলের মুখে কোনও ট্যাপ লাগানো নেই। কোনও রিজার্ভারও করা নেই। তাই সমস্যা হচ্ছে। পিএইচই-কে রিজার্ভার করে জল সরবরাহ করার পাশাপাশি প্রতিটি কলের মুখে ট্যাপ লাগানোর আবেদন জানাব।
    বিডিওকেও বিষয়টি সম্পর্কে জানাব। যদিও বিডিও অনির্বাণ বসু বলেন, আমি এখনও প্রধানের কাছ থেকে চিঠি পাইনি। তবে বিষয়টি আমারও নজরে এসেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।