বঙ্গীয় সাহিত্যিক অনুসন্ধান সমিতির উদ্যোগে কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী পালন করা হলো

নিজস্ব সংবাদদাতা : বঙ্গীয় সাহিত্যিক অনুসন্ধান সমিতির উদ্যোগে ১১ই জ্যৈষ্ঠ google meet -এ কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪ তম জন্মজয়ন্তী পালন করা হলো। সমিতির সম্পাদক রুহুল আমিন সবাইকে মন ও মননে নজরুলের প্রতিকৃতিকে স্মরণ করার কথা বলেন। অনুষ্ঠানের সভামুখ ড. রমজান আলি সূচনায় বলেন যে নজরুলের ‘বিদ্রোহী’ কবিতা নিয়ে ন’দশটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। ধুমকেতু পত্রিকার শতবর্ষকে কেন্দ্র করে গ্রন্থ রচিত হয়েছে এবং হচ্ছে কিন্তু বড় বড় পত্রিকাগুলো বিশেষ করে লিটিল ম্যাগাজিনগুলো নজরুল কে নিয়ে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশের তেমন উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। এ বিষয়ে অবশ্যই আমরা মনে রাখব আজিজ আল আমান সাহেবের কাফেলার এবং এমদাদুল হক নূর সাহেবের নতুন গতি পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা গুলির কথা। নজরুল চর্চা বাড়ছে এবং সেই দায়িত্ব আমাদেরকে আরো ঘনিষ্ঠভাবে পালন করতে হবে। তবে জন্মজয়ন্তী পালন নিয়ে আর দ্বিধা নয়, ২৪ মে কেন ? ১১ই জ্যৈষ্ঠতেই তা পালিত হবে।
নজরুলকে নিয়ে লেখা কবিতায় মহ: মফিজুল তাকে ‘পূবের হাওয়া’ বলে উল্লেখ করেন। রউফ আলি তাঁর আবৃত্তিতে সবাইকে মনে করিয়ে দিলেন, হযরত মুহাম্মদ সা. এঁর পথ আমরা যথাযথ অনুসরণ করতে পারছি না সেই আক্ষেপে কাজী নজরুল লিখেছিলেন ‘ক্ষমা করো হযরত’। নজরুলের দুটি গান শোনালেন মনোয়ারা বেগম। আরেফার কথায় সর্বহার গান গেয়েই তিনি আমাদের জীবনে পাকাপাকি স্থান করে নিয়েছেন।
এই জন্মবর্ষ পালনে উপস্থিত ছিলেন নজরুল পরিবারের সদস্যা হামিদা কাজী। তিনি উল্লেখ করেন যে চুরুলিয়ায় সবাই ‘কবিজী’ শব্দটা উল্লেখ করেন। পরিবারের দিক থেকে তারা নজরুল জন্ম জয়ন্তীতে ঈদের মতোই আনন্দ উপভোগ করেন। সৃজিত মহন্ত তার স্বরচিত কবিতায় নজরুলকে হিন্দু ‘মুসলমানের প্রাণ’ বলে উল্লেখ করেন। মালদা থেকে উম্মে রুমান নজরুলের আত্ম প্রেমের দিকটি তার কবিতায় যেমন উল্লেখ করলেন তেমনি হাসনে আরা বেগম সবকিছু ভেঙ্গে খানখান করার প্রতীক হিসেবে নজরুলকে দেখেছেন। ঔপন্যাসিক ইসমাইল দরবেশ শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে নিবেদন করেন নজরুল ইসলামের সেই বিখ্যাত গান — মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিও ভাই। তার বিদ্রোহী কবিতার পাঠ শেষ করেন শরীর উচ্চারণে আনিসুর রহমান। কান্ডারীকে হুঁশিয়ার করার প্রয়োজন অনুভব করেছিলেন নজরুল। নজরুলকে নিয়ে স্বরচিত কবিতা শোনালেন এম.মতিন, এমদাদুল হক প্রমুখ মোহাম্মদ হাফিজের উচ্চারণে আজও তার প্রাসঙ্গিকতা থেকেই গেছে। আলো নয় আগুন কাব্যগ্রন্থের কবি শেখ রমজান আলী, আবার নজরুলকে ফিরে আসার কথা বলেছেন। সাবিনা সৈয়দ এর স্পষ্ট উচ্চারণ আয় বেহেশতে কে যাবি অধ্যাপিকা রাফিয়া সুলতানা নজরুলের কবিতা পাঠ করে বোঝাতে চাইলেন যে ধর্ম শুধু মন্দির মসজিদে সীমাবদ্ধ নেই। মানুষ হিসেবে মানুষের সেবার মধ্যেও আসল ধর্ম নিহিত আছে। আব্দুল গফফার হুগলি জেলার সংশোধনাগারের ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে থাকেন, তিনি হুগলি কারাগারের থাকা নজরুলকে নিয়ে স্বরঢিত একটি প্রবন্ধ পাঠ করেন। মহ. ইব্রাহিম মানুষ নজরুল মানুষের নজরুল প্রবন্ধ পাঠিয়ে জানালেন, মানবধর্মই তার আসল আরাধনা প্রবাহমান জাতিবিদ্বেষ চলছে, আর এখানেই নজরুলের প্রাসঙ্গিকতা।