বন্যপ্রাণ শিকার-বিরোধী জন সচেতনতা অভিযান : বর্ধমান রেঞ্জ

সংবাদদাতা : রেকর্ডেড তথ্য অনুযায়ী সারাবছরে পূর্ব-বর্ধমানের দামোদর পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রায় ২০০ প্রজাতির পাখি দেখতে পাওয়া যায়, তাদের মধ্যে স্থানীয় পাখি ছাড়াও অনেক প্রজাতির পাখি হল পরিযায়ী। বছরের নির্দিষ্ট কিছু সময়ে তাদের দেখা মেলে। এছাড়া আছে বিভিন্ন প্রজাতির সাপ, শিয়াল, গন্ধগোকুল, গোসাপ, বেজি, বনবিড়াল, সজারু ইত্যাদি জীবজন্তু। সংখ্যায় এরা কমছে কারণ দামোদরের ধারের বনাঞ্চল ক্রমশঃ কমে চলেছে মানুষের তথা সরকারের পরিবেশ সম্পর্কে অসচেতনতা ও মাত্রারিক্ত চাহিদার দরুণ। আর সাথে রয়েছে কিছু অবিবেচক মানুষের দ্বারা এই পশুপাখি শিকার ও হত্যার প্রবনতা। এতে পরিবেশের ভারসাম্য ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। যেটা যথেষ্ট চিন্তার কারণ।

    এই এলাকায় মূলতঃ দেখা যায় চাষী, মৎস্যজীবি, বালিখাদ ও ইটভাটার শ্রমিকদের। চোরাগোপ্তা শিকার দামোদরে বহু বছর ধরেই হয়ে আসছে (জাল ফেলে, গুলতির প্র্য়োগ করে আবার কখনো বা লাঠিসোঁটা নিয়ে দল বেঁধে পিছনে ধাওয়া করে…); তবে আগের থেকে কিছুটা কমেছে। কারণটা হলো স্থানীয় চাষী ও জেলেদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি। আর এটার পিছনে সার্বিক শিক্ষার হার বাড়ার সাথে সাথে উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে কিছু পরিবেশ প্রেমীদের উদ্যোগ, যারা এই এলাকায় সারাবছর ঘুরে ঘুরে ছবি তোলেন ও স্থানীয় মানুষদের বন্যপ্রাণ ও পরিবেশের ভারসাম্যের ব্যপারে সচেতন করেন। তবে সরকারি উদ্যোগ ছাড়া সব সম্প্রদায়ের স্থানীয় মানুষদের এবং প্রতিবেশি রাজ্যগুলি থেকে থেকে আসা শ্রমিকদের পরিবেশ বিষয়ে সচেতন করে তোলা একপ্রকার প্রায় অসম্ভব। সাম্প্রতিক কিছু শিকারের ঘটনা এই ধারণাকে আরো পোক্ত করেছে।

    গত ২রা মার্চ পশ্চিমবঙ্গ বন-বিভাগকে (বর্ধমান রেঞ্জ) সাম্প্রতিক শিকারের বিষয়টি জানানো হয়, অনুরোধ করা হয় উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবার জন্য। তাদের পক্ষ থেকে আজ ০৬-মার্চ-২০২২ তারিখে বর্ধমান শহরের নিকটবর্তী দামোদর লাগোয়া শ্রীরামপুর, চৈত্রপুর, আমীরপুর ও বড়শুল এলাকায় চলে “বন্যপ্রাণ শিকার বিরোধী জন-সচেতনতা অভিযান”। বন-বিভাগের পক্ষ থেকে জায়গায় জায়গায় হ্যান্ডবিল বিলি ও পোষ্টারিং করা হয়, সাথে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও প্রচার অভিযান। বন-বিভাগ কর্মীদের সাথে বর্ধমানের আশেপাশের অনেক পরিবেশ-প্রেমীদের স্বতঃস্ফুর্ত যোগদান উল্লেখযোগ্য। আশাকরা যায় আগামীদিনে এইধরণের যুগ্ম অভিযান আরো অনেক হবে ও স্থানীয় মানুষজন আরো বেশি করে সচেতন হবে