বৃদ্ধ মা বাবার মুখে অন্ন তুলে দিতে পেট্রোল পাম্পে কাজ করেন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য নিমাই বাগদি

আজিজুর রহমান,গলসি : উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর থেকে রাজনীতিতে অনুপ্রাণিত হয়ে কাজ শুরু করেন গলসি ২ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য নিমাই বাগদি। ২০১৮ সালে তৃণমূলের টিকিটে গলসি ২ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। গ্রামবাসীদের থেকে জানতে পারা গেছে, ভুমিহীন গরীব পরিবার তাদের। দৈনিক শ্রমই ছিল তাদের পরিবারের উপার্জনের উৎস। তার বাবা বাদল বাগদি ও মা সান্তনা বাগদি শ্রমিকের কাজ করতেন। তারা এখন বৃদ্ধ হয়ে পরায় তাকেই সংসারের হাল ধরতে হয়। দিন চালাতে পড়াশোনা ছাড়ার পর থেকে শক্তিগড়ে একটি পেট্রোল পাম্পে নজেল ম্যানের কাজ শুরু করেন তিনি। নিমাই বাগ্দী জানিয়েছেন, খরচ বাঁচিয়ে সেখান থেকে উপার্জন হয় আড়াই তিন হাজার টাকা। সেই টাকা দিয়েই বৃদ্ধ মা বাবার স্ত্রী ও কন্যার মুখে অন্ন তুলে দেন। পাশাপাশি কাজের ফাঁকে কয়েক বছর ধরেই তিনি ভাগচাষ শুরু করেছেন। এবছর বোরোতে তিনি একবিঘা জমি ধান চাষ করেছেন। তার দাবী চাষে লাভ হয়না ঠিকই। কিন্তু চাষের প্রয়োজনীয় শ্রমিকের যোগান তার পরিবার দেয়। ফলে এক কালিন যেটুকু ধান হয় সেই ধানের চালে দিয়ে পরিবারের ভাতের যোগান দেন। নিমাই বলেন রাজনীতি করে তো আর টাকা পয়সা ইনকাম করা যায় না। তাই পেট চালাতে পাম্পে কাজ শুরু করেছি। তার দাবী, গ্রামের রাস্তাঘাট, নিকাশী নালা, পানীয়জল সহ সকল উন্নয়ন মুলক কাজে তিনি এলাকার মানুষের সহযোগিতা পান। আর তাদের ভালবাসায় জন্যই তিনি রাজনীতি করেন। বর্তমানে তিনি গলসি ২ ব্লক তৃণমূলের এস সি ওবিসি সেলের সভাপতি হয়েছেন। এদিকে পেট্রোল পাম্পে রাতদিন মিলে তিন সিফ্ট হয়। সেখানে তাকে একটি সিফ্টে করে পঁচিশ দিন তাকে ডিউটি করতে হয়। বাকি সময়টা চাষ ও রাজনীতি জন্য ব্যয় করেন। সংসারে বিরাট কিছু অভাব না হলেও খুব কষ্ট করে চলে। তার দাবী, মানুষ তাকে বিশ্বাস করে ভোট দিয়েছেন। সেই বিশ্বাস অক্ষুণ্ন রাখতে তিনি সবরকম চেষ্টা করেন। কাজের ফাঁকে তিনি মানুষের কাজ ও রাজনীতির জন্য মিছিল মিটিং করেন। আবার সময়ও দেন পঞ্চায়েত সমিতির সকল বৈঠকে। আর এই ভাবেই তিনি মানুষের দেওয়া দায়িত্বের কাজে বহাল রয়েছেন।