|
---|
নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক: এ যেন যেমন কথা, তেমন কাজ। বাস্তবেই কথা রাখতে শুরু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের দিন কোচবিহারের শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার জনের মৃত্যুর ঘটনায় শুরু থেকেই নাছোড় মনোভাব ছিল মমতার। জানিয়ে দিয়েছিলেন, ক্ষমতায় আসা মাত্রই শীতলকুচি নিয়ে তদন্ত করাবেন তিনি। হুঁশিয়ারির সুরে বলেছিলেন, ‘যত বড়ই মাথা হোক, আমি শেষ দেখে ছাড়ব।’ আর রাজ্যে বিপুল আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসা মাত্রই শীতলকুচি কাণ্ডের তদন্তে সিট গঠন করেছেন তিনি। ইতিমধ্যেই ঘটনার সময় দায়িত্বে থাকা পুলিশ অফিসার-কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব শুরু করেছে সিট। এবার শীতলকুচিও যাচ্ছেন তাঁরা।
জানা গিয়েছে, সোমবারই শীতলকুচি পৌঁছচ্ছে সিআইডির বিশেষ তদন্তকারী দল। ডিআইজি সিআইডি-র নেতৃত্বে ওই দলটি শীতলকুচি গিয়ে ঘটনার দিনের পুনর্নির্মাণ করবেন বলে জানা গিয়েছে। হবে। ইতিমধ্যেই মাথাভাঙা থানার পুলিশ অফিসারদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিট। সেই জিজ্ঞাসাবাদের সূত্রে উঠে আসা তথ্য যাচাই করে দেখবে বিশেষ তদন্তকারী দল। স্থানীয় বাসিন্দাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ওই ঘটনায় ইতিমধ্যেই সিআরপিএফ-এর ৬ জওয়ানকে ডেকে পাঠিয়েছিল সিট। কিন্তু তাঁরা হাজিরা দেননি। জানিয়েছেন, ভিডিও কলে করা হোক জিজ্ঞাসাবাদ।
রাজ্যে নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরপরই পুলিশ এবং প্রশাসনে বড়সড় রদবদল করেছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী পদে তৃতীয়বার শপথ নেওয়ার পরে সেই পুরনোদেরই দায়িত্বে ফিরিয়ে এনেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য পুলিশের ডিজি পদে ফিরে এসেছেন বীরেন্দ্র। এডিজি আইনশৃঙ্খলা পদে পুনরায় এসেছেন জাভেদ শামিম। একইসঙ্গে কোচবিহারের পুলিশ সুপার দেবাশিস ধরকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে সাসপেন্ড করেছেন মমতা। শীতলকুচি কাণ্ডের জেরেই এই শাস্তি বলে অনুমান ওয়াকিবহল মহলের।
শীতলকুচি কাণ্ডে নিহতদের পরিবারের পাশেও রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের সরকারি চাকরির ব্যবস্থাও করেছে। একইসঙ্গে তদন্তে গতি আনতে, ডিআইজি সিআইডি কল্যাণ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সিট গঠন করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনের আগে কোচবিহারের পুলিশ সুপার পদে ছিলেন কান্নান। কিন্তু নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মধ্যেই বিজেপির অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে সরিয়ে দেবাশিস ধরকে দায়িত্বে এনেছিল নির্বাচন কমিশন। যদিও দেবাশিস ধর দায়িত্বে আসা মাত্রই তিনি বিজেপির হয়ে কাজ করছেন বলে অভিযোগ করেছিল তৃণমূল। সেই সময়ই ঘটে শীতলকুচির ঘটনা। যা নিয়ে পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন মমতা। আর এবার শীতলকুচি কাণ্ডের জট ছাড়াতে ঘটনাস্থলেই পৌঁছে যাচ্ছেন সিটের অফিসাররা।