বিহারে দলিত মহিলাকে নগ্ন করে মারধর, পান করানো হল প্রস্রাব

নিজস্ব সংবাদদাতা : লজ্জার সমস্ত সীমা পার করে দিল বিহারের ঘটনা। আর কতদিন সীমাহীন বর্বরতার সাক্ষী থাকবে সমাজ! ‘অচ্ছে দিন’, ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’, ‘আত্মনির্ভর ভারতে’র মতো স্তোকবাক্যের জালে আর কতদিন চুপ থাকবে প্রশাসন?

     

    বার বার দলিতদের উপরে নেমে আসছে একের পর এক নারকীয় ঘটনা। ফের এক দলিত মহিলাকে নগ্ন করে মারধর, পান করানো হল প্রস্রাব। ন্যক্কারজনক এই ঘটনাটি ঘটেছে বিহারের পটনায়। জানা গিয়েছে, নিতান্ত অভাবের তাড়নায় এক পরিচিতের কাছ থেকে ১৫০০ টাকা ধার নিয়েছিলেন নির্যাতিতা দলিত মহিলা। প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সুদ সমেত তিনি সেই টাকা ফেরৎ দেবেন। মাস খানেকের মধ্যে সেই টাকা পরিশোধ করেন। শোধ করার পরেও ধার মিটছিল না। বার বার ধারের টাকা ফেরৎ দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয় ওই মহিলাকে। কিন্তু সেই টাকা দিতে অস্বীকার করতেই মহিলার ওপর চরম নির্যাতন নেমে আসে। সকলের সামনে দলিত মহিলাকে নগ্ন করে মারধর চালানো হয়। অভিযুক্ত বাবার আদেশে ছেলে মহিলার মুখে প্রস্রাব করে দেয়।পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত বাবার নাম প্রমোদ সিং ও তার ছেলের নাম অংশু। শনিবার রাত ১০টা নাগাদ ওই দলিত মহিলার বাড়িতে চড়াও হয় তারা। তাদের সঙ্গে আসে আরও চারজন। অভিযুক্তরা জোর করে ওই মহিলা টানতে টানতে বাড়িতে বাইরে গিয়ে টিউবওয়েল থেকে জল নিয়ে আসতে বলে। বাড়ির বাইরে আসতেই জোর করে পোশাক খুলতে বাধ্য করা হয় দলিত মহিলাকে। লাঠি দিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। প্রমোদ সিং তাঁর ছেলে অংশুকে নির্দেশ দেন ওই মহিলার মুখে প্রস্রাব করার জন্য। পরে ওই মহিলা কোনওমতে সেখান থেকে পালিয়ে আসেন বাড়িতে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানান।

    পটনার সিনিয়র পুলিশ সুপার রাজীব মিশ্র জানিয়েছেন, মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।পুলিশ সূত্রে খবর, নির্যাতিতা মহিলাকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা সংকটজনক। মাথায় আঘাত গুরুতর। ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে। দলিত মহিলার প্রতি নির্যাতনের সুবিচার চেয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্তরা। তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।

     

    নির্যাতিতা পুলিশে জানিয়েছেন, কয়েক মাস আগে প্রমোদের কাছ থেকে তিনি ১৫০০ টাকা ধার নিয়েছিলেন। সুদ সমেত সেই টাকা শোধও করে দেন। কিন্তু ধার বাকি আছে বলে যেতে থাকে অভিযুক্তরা। নির্যাতিতা আর টাকা দিতে অস্বীকার করায়, তাঁকে নগ্ন করে গ্রামে ঘোরানোর হুমকিও তারা। দলিত মহিলার আরও অভিযোগ, তিনি আগেই পুলিশকে তাকে হেনস্থার অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।