বাঙালিকে ধোঁকা দিচ্ছে গুজরাটের ইলিশ!

নিজস্ব সংবাদদাতা : ইলিশ কিনতে বাজারে যাচ্ছেন? খুব সাবধান। কারণ বাংলার ইলিশ ভেবে গুজরাটের ইলিশ নিয়ে বাড়িতে চলে আসতে পারেন। তাতে ইলিশ খেলেও ছিটেফোঁটাও ইলিশের স্বাদ মিলবে না। উলটে মেজাজটাই বিগড়ে যেতে পারে।
বাঙালিকে ধোঁকা দিচ্ছে গুজরাটের ইলিশ। কলকাতার একাধিক বাজারে সেরকমই ঘটছে। বাংলার ইলিশের তুলনায় সস্তায় সেই গুজরাটের ইলিশ মিললেও তাতে কোনও স্বাদ নেই। নামেই পাতে ইলিশ পড়ছে। কিন্তু সেই যে ইলিশ-ইলিশ অভিজ্যতের ব্যাপারটাই থাকছে না। স্রেফ ইলিশ থাকলে এক থালা গরম ভাত সাবাড় করে দিতে অভ্যস্ত বাঙালিরা কোনওক্রমে গলা দিয়ে নামাচ্ছেন গুজরাটের ইলিশ। তবে ব্যবসায়ীদের আশা, খুব শীঘ্রই সেই বিস্বাদের ইলিশ থেকে মুক্তি মিলবে। আগামী কয়েক সপ্তাহে বাঙালির থালায় পড়তে পারে বাংলার ইলিশ। যে ইলিশের দাম একটু বেশিও হলে তাতে থাকবে রাজকীয়তা।এমনিতে প্রতি বছর বর্ষার সময় উপকূলবর্তী এলাকায় যে ইলিশ ধরা হয়, তা পশ্চিমবঙ্গের চাহিদা পূরণ করে। কিন্তু গত দেড়-দু’সপ্তাহে উপকূলবর্তী জেলার মৎস্যজীবীদের জালে বড় মাপের ইলিশ ধরা পড়েনি। তার ফলে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার বাজারে এক কিলোগ্রামের ইলিশ কার্যত অমিল। যেটুকু ইলিশ আছে, সেগুলি খোকা ইলিশ। খোকা ইলিশ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও নিয়মের ফাঁক গলে যে ছোট-ছোট ইলিশ ধরা হয়েছে, তা বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। জোগানের অভাবে মেরেকেটে ৫০০ গ্রামের ইলিশের দাম ১,০০০ টাকাও ছাড়িয়ে গিয়েছে।আর বাংলার ইলিশের সেই আকালের মধ্যে কলকাতার বাজারে এসে গিয়েছে ‘বহিরাগত’ ইলিশ। কলকাতায় একাধিক বাজারে সেই ইলিশ বিক্রিও হচ্ছে। পেল্লাই সাইজের ইলিশের দামও সাধ্যের মধ্যে থাকছে। আর তাতেই ধোঁকা খেয়ে যাচ্ছে বাঙালি। বড় এবং সস্তা ইলিশ ভেবে বাড়ি নিয়ে গিয়ে পুরো মেজাজটাই বিগড়ে যাচ্ছে। মাছ বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গুজরাট থেকে আসা এক কিলোগ্রাম ইলিশের দাম সাধারণত ১,১০০ টাকা থেকে ১,৫০০ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করে। দু’কেজি ইলিশ কিনতে মেরেকেটে ২,০০০ টাকার মতো খরচ হয়। কিন্তু সেখানে ১.৫ কেজি বাংলার ইলিশ কিনতেই ২,০০০ টাকার বেশি বেরিয়ে যাচ্ছে। যা কিনতে হাত জ্বলছে। সেই পরিস্থিতিতে অনেক ক্ষেত্রেই গুজরাটের ইলিশ বাজারে আসছে। তাতে কেনার সময় বাঙালির মন থাকলেও বাড়িতে রান্না করে খাওয়ার সময় মনে হচ্ছে যে এটা ইলিশ?

    কিন্তু বাংলার এবং গুজরাটের ইলিশের মধ্যে কী পার্থক্য? বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, প্রতি বছর বর্ষার সময় বঙ্গোপসাগরের নোনা জল থেকে মিষ্টি জলের দিকে ঝাঁকে-ঝাঁকে ইলিশ এসে থাকে। নোনা জল থেকে মিষ্টি জলে আসার ফলে ইলিশের কিছু পরিবর্তন হয়। তার ফলে এতটা সুস্বাদু হয় বাংলার ইলিশ। কিন্তু গুজরাট থেকে যে ইলিশ আসছে, সেটা নোনা জলের হয়। ফলে ওই যে রাজকীয় স্বাদ আছে বাংলার ইলিশের, সেটার ধারেকাছেও আসছে না।