মালদহে বৃদ্ধকে খুন করে চেপে গিয়েছিল স্ত্রী ছেলে ও পুত্রবধূ ৪ মাস পর প্রকাশ্যে এল সেই রহস্য

নিজস্ব সংবাদদাতা : যেন ক্রাইম থ্রিলার! চমকে গিয়েছে মালদহ থানার পুলিসও। বৃদ্ধ বাবাকে খুন করে দিব্যি ছিলেন বাড়ির সদস্যরা। এক দুদিন নয়, টানা ৪ মাস। বৃদ্ধের স্ত্রীও স্বাভাবিক জীবন যাপন করছিলেন। কোনভাবেই বাড়ির কর্তা নিখোঁজের পরও একেবারের জন্য উদ্বিগ্ন দেখায়নি পরিবারের কোনও সদস্য। তবে শেষরক্ষা হল না।বৃদ্ধের এক ছেলে সৌজন্যে উদ্ধার হল প্রকৃত ঘটনা। তাও আবার ঘটনার ৪ মাস পর। চলতি বছর ২২ এপ্রিল মালদা থানার পুলিস মুচিয়ার সিন্ধিয়া এলাকার একটি কালভার্টের নীচ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় এক বৃদ্ধের মৃতদেহ উদ্ধার করে। কিন্তু তদন্তের পর এই বৃদ্ধের কোন পরিচয় পাওয়া যায়নি। তাই অজ্ঞাত পরিচয় হিসাবে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ঠাঁই হয় এই বৃদ্ধের মৃতদেহ। আজ এই বৃদ্ধের পরিচয় জানতে পারেন তদন্তকারী পুলিসকর্তারা। মৃত বৃদ্ধের নাম আজাহার শেখ (৫০। তাঁর এক ছেলে অহিদুল শেখ ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। সামাজিক মাধ্যমে অহিদুল অজ্ঞাত পরিচয় মৃতদেহ উদ্ধার সংক্রান্ত একটি খবর দেখতে পান। তাতে তাঁর বাবার ছবি ফুটে ওঠে। যা দেখে চমকে গিয়ে দিল্লি থেকে মালদায় ফিরে আসেন গতকাল। যোগাযোগ করেন মালদা থানার তদন্তকারী পুলিসকর্তাদের সঙ্গে।বুধবার মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে বাবার মৃতদেহ সনাক্ত করেন অহিদুল। এই ঘটনায় পরিবারের সদস্যরাই যুক্ত এমন অভিযোগ তুলে অহিদুল পুলিসকে জানায়। শুরু হয় তদন্ত। আর তাতেই তদন্তকারী পুলিসকর্তারা জানতে পারেন বৃদ্ধ খুনের নেপথ্যে রয়েছেন মৃতের স্ত্রী, এক পুত্রবধূ, ছোট ২ ছেলে-সহ চারজন। তাদের মধ্যে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতেরা পুলিসি জেরায় ওই বৃদ্ধকে খুনের কথা স্বীকার করেছে বলেও জানিয়েছে তদন্তকারী পুলিসকর্তারা।

     

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে অভিযুক্তদের নাম রুবি বিবি(মৃতের স্ত্রী) রাহেদুল শেখ,সহিদুর শেখ ,তসলিমা বিবি। এদের মধ্যে সহিদুর শেখ পলাতক। বুধবার সকালে মৃত বৃদ্ধের বড় ছেলে অহিদুল শেখ জানান মোবাইলে তার বাবার মৃত্যু সংবাদটি জানতে পারে। এরপরই তিনি থানায় ছুটে যান। সেখানেই পুলিসকে গিয়ে তার বাবাকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন । আর এই খুনের ঘটনায় মৃতের দুই ছেলে, পুত্রবধূ এবং স্ত্রী যুক্ত রয়েছে বলেও অহিদুলের অভিযোগ। তাঁর দাবি সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে তার বাবাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে তার ভাই এবং বৌদি। এই খুনের ঘটনায় তার মাও জড়িত।

     

    পুলিস জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখে ওই বৃদ্ধের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে বলা যাবে। তবে লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আপাতত ওই বৃদ্ধের পরিবারের ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুরাতন মালদা থানার পুলিস।