নারী অধিকার ও ইসলাম (তৃতীয় পর্ব)

আসিফ আলম, নতুন গতি, বহরমপুর: ৩. নারীর আইনগত অধিকারইসলামী শরিয়তের মতে নারী- পুরুষ এক সমান। ইহা নারী ও পুরুষের জান, মাল ও ইজ্জতের অধিকার সমানভবে দিয়ে থাকে। ফলে আইনের অধিকারও একই রূপ। ইজ্জতের ক্ষেত্রে নারীর অধিকারকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

    ইসলামী বিধিবিধানে শারীরিক ক্ষতির শাস্তি পুরুষ ও নারী নির্বিশেষে সম্পূর্ণ সমান। যেমনঃ ৪।সূরা মায়েদার ৩৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন “চোর পুরুষ হোক বা মহিলা হোক যখন চুরি করবে তখন তোমরা হাত কেটে দেবে।”
    অনুরূপভাবে ৫।সূরা নূরের ২ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, “ব্যাভিচারী পুরুষ ব্যাভিচারী নারী যেই হোক তাকে একশটি বেত্রাঘাত কর।” ইসলাম শারীরিক শাস্তির বিধান পুরুষ ও নারীর জন্য সমান করে দিয়েছে। তবে মহিলাদের চরিত্রকে পবিত্র পরিচ্ছন্ন রাখার লক্ষ্যে ইসলাম যুগান্তকারী বিধান কায়েম করেছে। যা পুরুষের জন্য করা হয়নি। যেমন আল্লাহতায়ালা বলেন, “যারা পবিত্র চরিত্রের নারীদের প্রতি অপবাদ দেবে তাদেরকে প্রমাণের জন্য ৪ জন সাক্ষী উপস্থিত করতে হবে। যদি তারা তা না করে তাহলে ৮০টি বেত্রাঘাত করো এবং ভবিষ্যতে তাদের কোন সাক্ষীই গ্রহণ করা হবে না।” ৬(সূরা আন নূর : ৪)

    ৪.নারীর উত্তরাধিকার অধিকার

    বর্তমানে নারীদের সমানাধিকারের নামে ইসলামবিরোধী নীতি প্রণয়ন করা হচ্ছে। বাহ্যিক দৃষ্টিতে ইহা নারীদের জন্য কল্যাণকর মনে হলেও বাস্তবে ইহা নারীদের জন্য বঞ্চিত হওয়ার মুখ্য কারণ হবে। উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে ইসলাম নারীদেরকে যে মর্যাদা দিয়েছে তাতে নারীদের ঠকায়নি বরং উচ্চ মর্যাদার আসনে সমাসীন করেছে।

    এ বিষয়ে আল্লাহতায়ালা বলেছেন, “তোমাদের সন্তানদের ব্যাপারে তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে একজন ছেলের অংশ দু’জন মেয়ের সমান। মৃতের সন্তান যদি শুধু মেয়েই হয় দুই বা দুয়ের অধিক। তাহলে কন্যারা পাবে দুই-তৃতীয়াংশ। যদি কন্যা একজন হয় তাহলে পাবে অর্ধেক। মৃত বক্তির সন্তানাদি থাকলে মৃতের পিতা-মাতা উভয়ের অংশ এক ষষ্ঠাংশ। আর যদি সন্তানাদি না থাকে আর পিতা-মাতাই শুধু ওয়ারিস হয় তাহলে মাতা পাবে এক-তৃতীয়াংশ। এগুলো বণ্টন হবে মৃতের ওসিয়ত এবং দেনা পরিশোধের পর। তোমাদের জানা নেই যে, তোমাদের বাবা দাদা এবং নিচের দিকে পুত্র-পৌত্র এর মধ্যে উপকারের দিক থেকে কারা বেশি আপনজন। এই বিধান খোদ আল্লাহর নির্ধারিত। আর আল্লাহতায়ালা সবকিছু মহাবিজ্ঞ বিচারপতি। ৭(সূরা আন নিসা ১১-১২)। ইসলামে উত্তরাধিকার নীতিতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে নারীর অংশ অর্ধেক বটে তবে সর্বক্ষেত্রে নয়। কোন কোন ক্ষেত্রে সমান পায় যেমন মৃতের কোন সন্তান না থাকলে মাতা-পিতা দু’জনেই এক- ষষ্ঠাংশ করে পায়। মৃত ব্যক্তি যদি নারী হয় আর তার কোন সন্তান না থাকে তাহলে স্বামী পাবে অর্ধেক। মাতা এক-তৃতীয়াংশ এবং পিতা এক-ষষ্ঠাংশ পাবে। তাহলে দেখা যাচ্ছে যে, কোন কোন ক্ষেত্রে নারীরা পুরুষের দ্বিগুণও পেয়ে থাকে।