টাকার বদলে প্রশ্ন ইস্যুতে বিপাকে ও অস্বস্তিতে মহুয়া মৈত্র

দেবজিৎ মুখার্জি: টাকার বদলে প্রশ্ন ইস্যুতে আরও খানিকটা অস্বস্তিতে পড়লেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। এবার তাঁর করা মানহানির মামলার শুনানিও পিছিয়ে গেল দিল্লি হাই কোর্টে। কারণ, স্বার্থের সংঘাতে পড়ে মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন তাঁর আইনজীবী।

    মহুয়ার পক্ষে মামলা লড়ছিলেন প্রবীণ আইনজীবী গোপাল শংকরনারায়ণ। এদিন শুরুতেই জয় অনন্ত দেহাদরি দাবি করেন, মহুয়ার আইনজীবীর স্বার্থের সংঘাত রয়েছে। এর আগে মহুয়া মৈত্রর সঙ্গে অন্য একটি মামলায় তিনি মধ্যস্থতার চেষ্টা করেছিলেন। বিচারপতি বলেন, আইনজীবী গোপাল শংকরনারায়ণ যদি মহুয়া এবং জয় অনন্ত দেহাদরির মধ্যে মধ্যস্থতার চেষ্টা করে থাকেন, তাহলে তিনি এই মামলায় যুক্ত থাকতে পারবেন না। তার পরই গোপাল শংকরনারায়ণ এই মামলা থেকে সরে দাঁড়ান। ফলে মামলাটিও পিছিয়ে যায়। মামলার পরবর্তী শুনানি ৩১ অক্টোবর।

    মানহানির মামলায় ধাক্কা খেলেও মহুয়া এদিন বিজেপিকে পালটা আক্রমণ করেছেন। সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সংসদের এথিক্স কমিটি বা সিবিআই তাঁর কাছে কোনও প্রশ্ন করলে তিনি তার জবাব দেবেন। কিন্তু বিজেপির ট্রোল আর্মির কোনও প্রশ্নের জবাব তিনি দেবেন না। আদানির নিয়ন্ত্রণাধীন সংবাদমাধ্যমের কোনও প্রশ্নেরও জবাব তিনি দেবেন না।

    প্রসঙ্গত, সাদা কাগজে লেখা দর্শন হীরানন্দানির একটি বিবৃতি জাতীয় সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই বিবৃতিতে মহুয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক দাবি করেছেন দর্শন। যা কার্যত বিজেপি সাংসদের অভিযোগকে মান্যতা দেয়। যদিও ওই বিবৃতির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

    ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দর্শন হীরানন্দানি ব্যবসায়ীক সুবিধা পাওয়ার আশায় মহুয়াকে অতি দামি উপহার, বিদেশে ছুটি কাটানোর খরচ, দিল্লির বাংলো মেরামত করে দেওয়ার মতো বেশ কিছু অন্যায্য সুবিধা দিয়েছেন। সেই সঙ্গেই ওই বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, মহুয়া নাকি দর্শন হীরানন্দানিকে সংসদের ওয়েবসাইটের লগ ইন পাসওয়ার্ড পর্যন্ত দিয়েছেন। মহুয়ার হয়ে লোকসভার ওয়েবসাইটে তিনিই গৌতম আদানি ও আদানি শিল্পগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রশ্ন পোস্ট করেছেন। এই অভিযোগ রীতিমতো আপত্তিকর। সত্য প্রমাণিত হলে মহুয়ার সাংসদ পদ চলে যেতে পারে।

    যদিও তৃণমূল সাংসদ পালটা ওই বিবৃতির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলছেন, জাতীয় সংবাদমাধ্যমে যে বিবৃতি ছড়িয়ে পড়েছে সেটা সাদা কাগজে লেখা। হীরানন্দানি গ্রুপের লেটারহেডে লেখা নয়। মাথায় বন্দুক না ঠেকালে ভারতের অন্যতম সম্মানীয় ব্যবসায়ী এই ধরনের কোনও বিবৃতি লিখবেন না। তাছাড়া দর্শন হীরানন্দানিকে কোনও তদন্তকারী সংস্থা তলব করেনি। তাহলে এই বিবৃতি তিনি কাকেই বা জমা দিলেন, আর এটা এলই বা কোথা থেকে? তৃণমূল সাংসদের সরাসরি অভিযোগ, বিজেপি আইটি সেলের কোনও অর্ধশিক্ষিত কর্মী হীরানন্দানির নামে এই বিবৃতিটি লিখেছেন।