অপুষ্টি, কম ওজনই ফাটল ধরাল শীলার সুখের সংসারে

নিজস্ব প্রতিবেদক:- অপুষ্টি, কম ওজনই ফাটল ধরাল শীলার সুখের সংসারে। অতি যত্নেই রাখা হয়েছিল তাকে, কিন্তু শেষে তার একটি শাবক চলে গেল না ফেরার দেশে। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ শীলার সবচেয়ে ছোট শাবকটির মৃত্যু হয়েছে বলে জানায় পার্ক কর্তৃপক্ষ। ময়নাতদন্তের পর সাফারি পার্কেই তার শেষকৃত সম্পন্ন হয় (Siliguri Bengali Safari)। এদিন বেঙ্গল সাফারির আধিকারিক ডি শেরপা বলেন, ‘জন্মের পর থেকেই ঠিকভাবে খেতে না পারায় অপুষ্টির শিকার হয়েছিল শীলার শিশু। শাবকটি ডিহাইড্রেশনের কারণে আরও দুর্বল হয়ে পড়েছিল। শাবকটির চোখের উপরে কাটা একটি দাগ ছিল। শাবকটি কোনওভাবে আঘাত পায়।’বাঘিনী শীলা তৃতীয়বারের জন্য গর্ভবতী হওয়ায় যত্নে কোনও খামতি রাখা হয়নি। এদিকে সাফারি পার্ক মারফত জানা গিয়েছে, শীলা নিজেই শাবকটিকে নিয়ে আসত খাওয়ানোর জন্য। কিন্তু সে এতটাই দুর্বল ছিল যে ঠিকভাবে হাঁটাচলা করতে পারত না। শাবকটিকে বের করে পশু চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়। দেওয়া হয় স্যালাইন (saline)। এমনকি শেষমেশ চামচ দিয়েও দুধ খাওয়ানো হয়। কিন্তু শেষরক্ষা আর হল না।সাফারি কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ১০ মার্চ রাতে সাফারি পার্কের এনক্লোজারে সুস্থভাবেই শীলা জন্ম দেয় পাঁচ সন্তানের। বর্তমানে সন্তান-সহ সুস্থই রয়েছে রয়াল বেঙ্গল টাইগার মা শীলা ও বাবা বিভান। শীলা ও বিভানের বয়স আট বছর। এই নিয়ে বেঙ্গল সাফারি পার্কে তিন দফায় সন্তান প্রসব করল শীলা। নতুন অতিথির আগমনে আনন্দে মশগুল সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ। চলছে শীলা ও তার নবজাতকদের ওপর দিনরাত নজরদারি।বেঙ্গল সাফারির আধিকারিক ডি শেরপা বলেন, ‘‘শীলাকে নিয়ে আমরা অনেকটাই সতর্কতার সঙ্গে ধীরে ধীরে এগোচ্ছিলাম। শীলার অন্তঃসত্ত্বা থেকে প্রজনন পর্যন্ত কাজটা যেমন সোজা ছিল না, তেমনই শাবকদের সঠিক ভাবে বেড়ে ওঠা আমাদের কাছে কঠিন পরীক্ষা। সিসিটিভির মাধ্যমে তাদের উপর নজর রাখা হচ্ছে। বাকি চার সন্তান সুস্থ রয়েছে। আমরা ক্রমাগত নজরদারি চালাচ্ছি। ২৪ ঘণ্টা সিসিটিভি ক্যামেরার তত্ত্বাবধানে রাখা হচ্ছে। বাকিদের দিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে।’’জানা গিয়েছে, শাবকটি দুর্বল হওয়ার কারণে ঠিকঠাকভাবে মায়ের দুধ খেতে পারছিল না। ধীরে ধীরে ওজনও কমছিল শাবকটির। ইমিউনিটি কম থাকার কারণে দুর্বল হয়ে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ে শাবকটি।(Siliguri Bengali Safari) সাফারি কর্তৃপক্ষের হিসেব অনুযায়ী, ১০টি সন্তানের মা শীলা। যাদের প্রত্যেকেরই জন্ম শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কে। সাফারি পার্কের পাশাপাশি প্রজনন কেন্দ্র হিসেবেও সুখ্যাতি অর্জন করে সাফারি পার্ক। শীলার প্রথম সন্তান প্রসবের পরই পর্যটকদের ভিড় জমতে শুরু করে পার্কে। আপাতত সাফারি পার্কে বাঘের সংখ্যা ১১।