|
---|
পারিজাত মোল্লা : কলকাতা, ২৮ নভেম্বর ২০২৩: কলকাতায় ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অফ কনসারভেটিভ ডেন্টিস্ট্রি অ্যান্ড এন্ডোডন্টিকস-এর ৩৮তম জাতীয় সম্মেলন আয়োজিত হতে চলেছে। আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত সায়েন্স সিটি কনভেনশন সেন্টার অ্যান্ড কমপ্লেক্সে প্রায় ২০০০ প্রতিনিধি নিয়ে এই সম্মেলন আয়োজিত হবে। সম্মেলনের প্রাথমিক পর্বে দন্ত চিকিৎসার স্নাতকোত্তর স্তরের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়েও বেশ কিছু প্রি-কনফারেন্স কোর্স পরিচালিত হবে।
আইএসিডিই কনসারভেটিভ ডেন্টিস্ট্রি শাখার দেশের অগ্রনী চিকিৎসকদের সংগঠন। কনসারভেটিভ ডেন্টিস্ট্রি ও এন্ডোডন্টিকস হচ্ছে দন্ত চিকিৎসার অন্যতম শাখা যেখানে দাঁত উপড়ে না ফেলে দাঁতের অসুখ নিরাময় করার রক্ষনাত্মক পদ্ধতি প্রয়োগ করে। দাঁতের শক্ত টিস্যুর নিরাময়ের জন্য, দাঁতের ব্যথা কম করার জন্য এবং কসমেটিক কারেকশনের জন্য এন্ডোডন্টিক্স কার্যকরি। ডেন্টাল কেরিস এন্ডোডন্টিকদের জন্য যথেষ্ট চিন্তার বিষয়, তাই এই সম্মেলনে কেমন করে ডেন্টাল কেরিস প্রতিরোধ করা যায় তা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হবে। রক্ষনাত্মক দন্ত চিকিৎসার অন্যতম অঙ্গ রুট ক্যানাল ট্রিটমেন্ট (আরসিটি) -এর গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে সম্মেলনে। তাই এই সম্মেলন জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন উদ্ভাবিত চিকিৎসা পদ্ধতি ও রক্ষনাত্মক দন্ত চিকিৎসার সুফল প্রসারেও ব্রতী হবে।
মুখ গহ্বরের সুস্বাসটথ্য নিয়ে আমরা খুব একটা সচেতন কোনোদিনই না। তাই ডেন্টাল কেরিজ, পেরিওডন্টাল অসুখ বা মাড়ির রোগ এবং ওরাল ক্যানসার ভারতে যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করছে। ডেন্টাল কেরিজ বা দাঁতের ক্ষয় হওয়া শিশু ও প্রাপ্ত বয়স্ক উভয়ের মধ্যেই ক্রম বর্ধমান। যদিও সময়ে চিকিৎসা শুরু করলে এর প্রতিরোধ সম্ভব। আর দাঁতের ক্ষয় শুরু হলে কনজারভেটিভ ডেন্টিস্ট্রির সহায়তায় নিরাময় লাভ সম্ভব, কারন এখন আর দাঁত উপড়ে ফেলে চিকিৎসা করা হয় না। পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে ভারতে ৫৪.১৬% মানুষ ডেন্টাল কেরিজের সমস্যায় ভুগছেন। আর ডেন্টাল কেরিজ ১৮ বছরের উপরের ভারতীয়দের মধ্যে ৬২% হচ্ছে। তবে ৩ থেকে ১৮ বছরের শিশু-কিশোররাও দাঁতের ক্ষয় নিয়ে ভুগে চলেছে। পরিসংখ্যান চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখাচ্ছে পশ্চিম ভারতে ৭২% মানুষ ডেন্টাল কেরিজে আক্রান্ত হন। উত্তর ভারতে ৫৭%, মধ্য ভারতে ৫৬%, দক্ষিণ ভারতে ৫১% মানুষ ডেন্টাল কেরিজ আক্রান্ত। তবে পূর্ব ভারতে এর প্রাদুর্ভাব তুলনামূলক কম সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে ৩৬%। কিন্তু এখানেও ডেন্টাল কেরিজ আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান।
এই সম্মেলন এই ধরনের আরও নানা বিষয়ের উপর আলোকপাত করবে। সম্মেলনের আয়োজক সম্পাদক ডা: দেবাশীষ ব্যানার্জী জানান, “এবারের সম্মেলনে আমরা ৮ জন আন্তর্জাতিক বক্তা ও ১৬ জন জাতীয় স্তরের বক্তার কাছ থেকে ৩০টিরও বেশি সায়েন্টিফিক লেকচার, সিম্পোসিয়া ও প্যানেল ডিসকাশনে আলোচনা শুনে ঋদ্ধ হব। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, ও নানা নতুন পদ্ধতি প্রয়োগে কনজারভেটিভ ডেন্টিস্ট্রি কতটা আধুনিক করে তোলা যায় তা নিয়ে বেশ কিছু গবেষণাপত্রও পঠিত হবে এই সম্মেলনে। স্নাতকোত্তর স্তরের ছাত্র-ছাত্রীরা এক সহস্রাধিক গবেষণাপত্র ও পোস্টার প্রেজেন্টেশানের মাধ্যমে তাদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেবে। ফলে কনজারভেটিভ ডেন্টিস্ট্রি ও এন্ডোডন্টিস্ট্রি উপকৃত হবে ও সমৃদ্ধ হবেন চিকিৎসকরা, সেই সঙ্গে দাঁতের যন্ত্রণায় ভুগছেন এমন অসংখ্য রোগীর বেদনা নিরাময়ে সহায়ক হবে এই সম্মেলন। এই সম্মেলন ভবিষ্যতের রক্ষণাত্মক দন্ত চিকিৎসকদের মনেও নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবনের স্পৃহা জাগ্রত করবে বলে আমাদের আশা।”