পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ (পরিবেশ ভবন) -এ ডেপুটেশন ও প্রচারপত্র বিলি

সেখ আব্দুল আজিম হুগলি : দুর্গা পুজোর প্রাক্কালে গত ১৭ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ অনভিপ্রেত এক নির্দেশিকায় শব্দবাজির ন্যূনতম শব্দমাত্রা ৯০ ডেসিবেল থেকে বাড়িয়ে ১২৫ ডেসিবেল করার ছাড়পত্র দিয়েছে। প্রসঙ্গত ইতিপূর্বে গত ১৯৯৬ সাল থেকে শব্দবাজির সর্বোচ্চ মাত্রা ৯০ ডেসিবেল পর্যন্ত অনুমোদিত ছিল।শব্দসীমার এই বৃদ্ধি নাগরিকদের আতঙ্কিত এবং হতাশ করেছে। এমনিতেই গত ১৯৯৬ সালের পর থেকে সারা রাজ্যে, বিশেষত শহরাঞ্চলে শব্দের দাপট এবং বাজির উৎপাত বেড়েছে, এর উপর কোভিড সংক্রমণের পরবর্তী পর্যায়ে বাজিদূষণ মানুষের অন্যতম প্রধান স্বাস্থ্যসমস্যা হয়ে উঠেছে।
পশ্চিমবঙ্গে বিস্ফোরণস্থল থেকে ৫ মিটার দূরে, শব্দবাজির সর্বোচ্চ মাত্রা ৯০ ডেসিবেল পর্যন্ত নিয়ন্ত্রিত থাকা মানুষের কাছে একটা বড় স্বস্তির কারণ ছিল এবং সারা দেশের পরিপ্রেক্ষিতে, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে পশ্চিমবঙ্গের পথপ্রদর্শকের ভূমিকার কথা ভেবে নাগরিকরা ভরসা পেতেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এই সাম্প্রতিক নির্দেশনামায় নাগরিকরা সেই ভরসা হারিয়েছেন এবং এই সিদ্ধান্তকে হঠকারী, অনৈতিক এবং অদূরদর্শী বলে মনে করছেন।
এই বাস্তবতায় আগামী ৯ নভেম্বর ২০২৩ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কার্যালয় ( পরিবেশ ভবন) -এ পর্ষদের আধিকারিকের কাছে দাবিপত্র পেশ করা হবে। দাবি করা হবে এই নির্দেশনামা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা হোক এবং এতদিন ধরে চলে আসা বিস্ফোরণস্থল থেকে ৫ মিটার দূরে, শব্দবাজির সর্বোচ্চ মাত্রা ৯০ ডেসিবেলই বলবৎ থাকুক।
যদিও বাজি ও ডিজে বক্স বিরোধী মঞ্চ মনে করে,পশ্চিমবঙ্গ সরকারও দিল্লি সরকারের মতোই দূষণ নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগী হয়ে সমস্ত ধরনের বাজিই নিষিদ্ধ করুক। এমনিতেই প্রকৃতিকে প্রতি মুহূর্তে নানাবিধ দূষণ সহ্য করতে হয়। যাতে প্রকৃতির নাভিশ্বাস ওঠে। আবার আমোদ করে খানিক দূষণ নিমন্ত্রণ কাম্য নয়। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অজুহাতে শব্দসীমা বৃদ্ধি করা হল,কিন্তু সুপ্রিম কোর্টেরই নির্দেশ বছরে মাত্র কয়েকঘন্টা সবুজ বাজি জ্বালানো যাবে, তাকে মান্যতা দেওয়া হচ্ছে কই?
আর যাঁরা জীবিকার দোহাই দিচ্ছেন, তাঁরা কি ভেবে দেখেছেন, পরিবেশের কতবড় সর্বনাশ ডেকে আনছেন তাঁরা? এরপর তো সমস্ত নিষিদ্ধ জীবিকাকেই আইনসিদ্ধ করার দাবি উঠবে। দাবিপত্র পেশের পাশাপাশি অফিস ও অফিস সংলগ্ন এলাকায় লিফলেট বিলিও করা হবে। সকলের সহযোগিতা প্রার্থনীয়। সকলে আসুন।