পিংলার নয়াতে পটচিত্র মেলার শুভারম্ভ হল

শুভ চক্রবর্তী,পশ্চিম মেদিনীপুর: দীর্ঘ দু’বছর করোনা আবহের কারণে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলার নয়ার জগৎজোড়া পট মেলা কিছুটা ফিকে হয়েছিল। কিন্তু এ বছর সেই পট মেলার জৌলুস যেনো ফিরে এলো। অবশেষে হাসি ফুটেছে, এই গ্রামে বসবাসকারী পটুয়াদের। ২০০৯ সাল থেকে এই গ্রামে পটমেলা শুরু হয়, কখনও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আবার কখনও বেসরকারি সংস্থার তরফে এই মেলায় পট শিল্পীরা তাদের পট শিল্প , কারুকার্য সম্ভার,ফুল-পাতা থেকে প্রাকৃতিক রং তৈরী ও পটচিত্র আঁকার পদ্ধতি প্রদর্শন করেন।

    এ বছর রাজ্য সরকারের উদ্যোগে এবং জেলা পর্যটন দফতরের সহযোগিতায় এই পটচিত্র মেলা চলবে আগামী ২৮শে ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই গ্রামে বসবাসকারী দেড়শোরও অধিক বসবাসকারী পট চিত্র শিল্পীরা একসময় পৌরাণিক কাহিনীর বড় পট চিত্র এঁকে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে গান শুনিয়ে দিন গুজরাণ করতেন। এখন সময় পাল্টেছে, তাই শিল্পমনেও পরিবর্তনে এসেছে। এখন শিল্পীরা শুধু কাগজের পট চিত্র এঁকেই ক্ষান্ত নন, নানান সামাজিক ঘটনাবলীর বিষয়বস্তু তাদের তুলির কলম ফুটে ওঠার সাথে সাথেই নিত্য প্রয়োজনীয় নানা জিনিসের ওপর তাদের শিল্পকলার ছোঁয়া লেগেছে। শাড়ি,জামা,পাখা, বাতি নানা জিনিসের ওপর নানা রঙের বাহারি চিত্র এখন ফুটিয়ে তুলছেন তাঁরা। রাজ্য সহ বাইরেও এ সকল জিনিসের কদর বাড়ছে তরতর করে।
    কেনা বেচা ছাড়াও বাংলার নানা প্রান্তের শিল্পীদের লোকসাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এই মেলার অন্যতম আকর্ষণ। স্থানীয় ব্যক্তিরাই শুধু নন, রাজ্য,জেলা সহ রাজ্যের বাইরের বাসিন্দাদের মধ্যেও অনেকেও অধীর আগ্রহে এই উৎসবের জন্য অপেক্ষা করেন। বিদেশ থেকেও অতিথিরা গ্রামে আসেন এই সময়।
    বৃহস্পতিবার বিকেলে পিংলা ব্লকের নয়া পটচিত্র মেলার সরকারি ভাবে উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মন্ত্রী তথা সবং এর বিধায়ক ডক্টর মানস রঞ্জন ভূঁঞ্যা এবং জেলাশাসক আয়েসা রানী। এছাড়াও এদিন উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনের অন্যান্য আধিকারিকগন।শুক্রবার থেকেই পিংলার নয়ার পট শিল্প গ্রামে ভিড় জমিয়েছেন উৎসুক অতিথিরা।তাঁরা পট শিল্পীদের কারুকার্য চাক্ষুষ করছেন।এদিকে পটের গান শোনানোর জন্য সম্ভার সাজিয়ে অপেক্ষারত পট শিল্পীরা।