|
---|
নতুন গতি নিউজ ডেস্ক
রাফাল নিয়ে আরও আক্রমণাত্মক হলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। বোন প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে লক্ষ্ণৌয়ে সফল রোড শো করে দিল্লি ফিরে আজ মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, অনিল আম্বানিদের হয়ে দালালি করেছেন মোদি। রাফাল সাধারণ কোনো দুর্নীতি নয়, এটি দেশদ্রোহের সমতুল্য।
রাহুল এবার নতুন যে আক্রমণ শানান, মঙ্গলবার সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন তার ভিত্তি। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, রাফাল চুক্তির কথা ঘোষণার দুই সপ্তাহ আগে ফ্রান্সের তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জঁ ইয়েভস লে দ্রিয়ঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন ভারতীয় শিল্পপতি অনিল আম্বানি। সেটা ছিল ২০১৫ সালের মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্তারা। বৈঠকের পর প্রতিরক্ষামন্ত্রীর শিল্প উপদেষ্টা ক্রিস্তাফে সালোমন এয়ারবাস হেলিকপ্টার্স সংস্থাকে ই-মেইল করে সব জানিয়ে চুক্তি যে হচ্ছে সে বিষয়ে আশ্বস্ত করেছিলেন। ই-মেইল-এ লেখা হয়েছিল, ‘অল্প নোটিশে গুরুত্বপূর্ণ গোপনীয় ওই বৈঠক হয়েছে। সব বিষয়ে সবিস্তারে কথা হয়েছে।’ তাতে আরও বলা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী খুব শিগগিরই ফ্রান্স সফরে আসছেন। সেখানে এই সংক্রান্ত একটা অনুচুক্তি সই হবে।
ওই বৈঠকের দু-এক দিনের মধ্যেই অনিল আম্বানির ‘রিলায়েন্স ডিফেন্স’ সংস্থার জন্ম। বৈঠক শেষ হলেও অনিল ফ্রান্সে থেকে যান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ফ্রান্স সফরের সঙ্গী হন তিনি। ৯ থেকে ১১ এপ্রিলের সেই সফরেই মোদি ৩৮টি রাফাল বিমান কেনার কথা ঘোষণা করেন।
রাহুল সংবাদ সম্মেলনে ওই ই-মেইলের প্রতিলিপি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করে বলেন, মোদি যে অনিল আম্বানির হয়ে দালালি করেছেন সেটাই প্রমাণিত হলো। তিনি সরকারি গোপনীয়তা আইন ভেঙেছেন। চুক্তির কথা প্রধানমন্ত্রী ছাড়া আর কারও জানার কথা নয়। গুপ্তচরেরা এমন আচরণ করে থাকে। ওই বৈঠকের পরেই আম্বানির কোম্পানি তৈরি হয়েছিল।
আম্বানির পক্ষে অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলা হয়েছে, ইচ্ছাকৃতভাবে তথ্য বিকৃত করা হচ্ছে। তাঁর সংস্থার এক মুখপাত্র বলেছেন, ওই সফরে রাফাল নিয়ে আলোচনা হয়নি। কথা হয়েছিল নৌবাহিনীর হেলিকপ্টার তৈরি নিয়ে।
ভোটের দিন যত এগোচ্ছে, ততই প্রকাশ্যে আসছে রাফাল চুক্তির বিভিন্ন খুঁটিনাটি। দুই দিন আগে ‘দ্য হিন্দু’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল রাফায়েল নিয়ে তৎকালীন প্রতিরক্ষা সচিবের তীব্র আপত্তির কথা। সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করেছিলেন। এদিকে রাফাল নিয়ে ভারতের কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের (সিএজি) রিপোর্ট আজ মঙ্গলবার সংসদে পেশ করার কথা ছিল। কিন্তু তা করা হয়নি। কাল বুধবার এই সংক্ষিপ্ত শীতকালীন অধিবেশনের শেষ দিন। ফলে সিএজি রিপোর্ট পেশ হলেও সেখানে তা নিয়ে আলোচনার কোনো অবকাশ থাকবে না।