শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাসভবনে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে শরৎচন্দ্রের নামে স্টেশন করার দাবী।

লুতুব আলি, নতুন গতি : অমর কথা শিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম ১৮ ৭৬ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর হুগলির দেবানন্দপুরে। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জীবনের অপরাহ্ণে গুরুত্বপূর্ণ লেখনীর বেশির ভাগই সময় কেটেছিল হাওড়ার রূপনারায়ণ নদের গা ঘেঁষে সামতাবের গ্রামে। রাজ্যের অগ্রগণ্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা স্বজন শরৎচন্দ্রের সামতাবের গ্রামের বাসভবনে মর্যাদার সঙ্গে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিনটি পালন করল। ১৫ সেপ্টেম্বর মূল অনুষ্ঠান শুরু করার আগে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়গপুর শাখায় দেউলটি স্টেশনে স্বজন স্টেশন মাস্টারকে স্মারকলিপি দেয়। স্বজনের সম্পাদক বলেন, দেউলটি স্টেশনের পাশেই শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতি বিজড়িত সামতাবের গ্রাম। এই স্টেশনে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের একটি ফলক লাগিয়েই ভারতীয় রেল তার দায়িত্ব সেরেছে। আমরা দীর্ঘ বছর ধরে এই দেউলটি স্টেশন কে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের নামে করার দাবি জানিয়ে আসছি। রেল কর্তৃপক্ষ আমাদের এই দাবিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। দেউলটি স্টেশনের নাম পরিবর্তন করে শরৎচন্দ্রের নামে করার দাবি জানালাম। আমাদের এই দাবি কার্যকরী না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নেমে রেল অবরোধের পথেও হাঁটবো। এদিন এই কর্মসূচির পরে সামতাবেড়ে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বর্ণাঢ্যভাবে জন্মদিনটিকে পালন করা হয়। দুই বাংলার বিশিষ্ট কবি আরণ্যক বসু কথা শিল্পীর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন। আরণ্যক বসু বলেন, অমর কথাসাহিত্যিক বাঙালির গর্ব ও আবেগ। সমগ্র পৃথিবীতে এই কথা সাহিত্যিক সমাদৃত। বিশিষ্ট কবি ও সমাজসেবী অগ্নিশিখা বলেন, সামতাবের গ্রামের এদিনের অনুষ্ঠান মন ছুঁয়ে যায়। শরৎচন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ বইগুলি এখানেই লেখা। এই পবিত্র ভূমিতে তাঁর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে পেরে কৃতার্থ হয়েছি। শিলিগুড়ি থেকে আগত বিশিষ্ট কবি ও সমাজসেবী দীপ্তি মুখার্জি বলেন, এই বর্ণময় অনুষ্ঠান আমাকে প্রানিত করেছে। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কে স্মরণ করে কবিতা লেখা প্রতিযোগিতা ও তাৎক্ষণিক কবিতা বলা অনুষ্ঠানের বৈচিত্র্য এনেছে। এই সামতাবের কে হেরিটেজ ঘোষণা করা হয়েছে। পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এদিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট কবি রঞ্জনা গুহ, সভাপতি ড. রঞ্জিত দাস, সহ-সভাপতি বিউটি বিউটি দাস, বিশিষ্ট সমাজসেবী তপন ঘোষ, শিব শঙ্কর বক্সী, হাওড়া জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মানস কুমার বসু, জেলা পরিষদ সদস্য মীনাক্ষী হাজরা, চন্দনা কুন্ডু, অনিন্দিতা পাল, অচিন্ত্য মন্ডল, প্রসেনজিৎ ঘোষ, চিত্রশিল্পী সৈকত খাড়া, বিশিষ্ট কবি অশোক মুখোপাধ্যায়, বিশিষ্ট কবি ও সাংবাদিক বরুণ চক্রবর্তী, বিশিষ্ট শিশু সাহিত্যিক আব্দুল করিম, মানবাধিকার কর্মী অতীন্দ্র ঘোষ প্রমুখ। উল্লেখ্য, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মরণে একটি সাহিত্য লোক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। এদিনের অনুষ্ঠানের লক্ষ্যণীয় ছিল বৃক্ষরোপণ। অনুষ্ঠানে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উত্তরসূরীরা উপস্থিত ছিলেন।