স্থানীয় ও প্রশাসনের সহযোগিতায় মেমারিতে প্রাণ ফিরে পেলো অসহায় ভবঘুরে

নূর আহমেদ : ১৯ জানুয়ারি, মেমারি,তাঁর নাম জানে না কেউ, পরিচয় ভবঘুরে! রাস্তার ধারে এ কী কাণ্ড করলেন? হতবাক সকলে!!!! কনকনে ঠান্ডা সাথে মুষলধারে বৃষ্টি আর এরই মধ্যে রাস্তার পাশে খড়ের পালুই এর উপর খড় মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকা মানুষটি মধ্যবয়স পেরুনো অচেনা একজন ভবঘুরে। এই প্রবল শীতে অনেক মানুষ তাকে দেখেও, না দেখার ভান করে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে। বেশ কিছুদিন ধরে মেমারির শহরের আশেপাশে এই ভবঘুরের মানুষটিকে অনেকেই দেখেছে । বৃহস্পতিবার রাতে দেখা গেল মেমারি তাতারপুরে জি টি রোডে পীরবাবার আস্তানার পাশে। কে এই মানুষ, কি তার পরিচয়, তার অতীত কি, কেমন ছিল, সংসার সন্তান সব কিছুই অজানা। আগ বাড়িয়ে কথা বলে না,বললেও উত্তর মেলে না। যা বলে তার কিছু বোঝা যায় কিছু বোঝার উপায় নেই। বিধাতা কি তাকে সুখে রেখেছেন,নাকি নরকে একমাত্র তিনিই জানেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে কনকনে শীত সাথে বৃষ্টি, তার রাতটা এই খড় মুড়ি দিয়ে কাটবে কি করে! স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রয়াসের সামাজিক কর্মী শাহাজাদা আলমের ফেসবুক পোষ্টের মাধ্যমে খবর পেয়ে যোগাযোগ করেন জিরো পয়েন্ট এর সম্পাদক আনোয়ার আলি। আর তারপরেই মেমারি ১ ব্লকের জয়েন্ট বিডিও অংশুমান ঘোষ, মেমারি পৌরভার চেয়ারম্যান স্বপন বিষয়ী, মেমারি থানার ওসি দেবাশীষ নাগ, মেমারি গ্রামীন হাসপাতালের বিএমএইচও ডা. দেবাশীষ বালার দিশা নির্দেশে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে এস আই প্রকাশ অঙ্কুরিয়া ও স্থানীয় সুকান্ত হাজরা, প্রসূণ দাসের সাহায্যে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

    হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসা করে ভর্তি করে নেন। ভবঘুরের জন্য কম্বল, শীতের জামাকাপড়, গরম দুধ নিয়ে পৌঁছায় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরশপাথরে অপূর্ব সু ও প্রয়াসের অজয় সাহানী, স্থানী. চক্ষু ডাক্তার সুমন মুখার্জী। শুক্রবার সকালে অনেকটা স্বাভাবিক অবস্থায় মেমারি গ্রামীন হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছেন অজ্ঞাত পরিচয় ভবঘুরে। আসলে অজ্ঞাত নয়, পরিচয়টা এখন অতীত। শেষে বলি, রাস্তার পাশে শুয়ে থাকা মানুষ গুলো জানে শীত কাকে বলে। ভাঙ্গা ঘরে উত্তরের শীতল বাতাস আটকাতে না পারা পরিবারটা জানে শীত কেমন । অতএব আসুন না আমরা যে যার মত সাহায্য করি এইসব অসহায় দুস্থ মানুষগুলোকে।