|
---|
নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: ধাপে ধাপে নয়, বরং একসঙ্গে করতে হবে রাজ্যে সব পুরসভার ভোট। সোমবার বিকেলে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে এই হুঁশিয়ারি দিল বিজেপি। এদিন দুপুরে দলের ঘোষিত কর্মসূচি পুলিশি ব্যারিকেডে ভেস্তে গিয়েছে। তারপরেই রাজ্য দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করেন বঙ্গ বিজেপির প্রধান সুকান্ত মজুমদার। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ, শমীক ভট্টাচার্যরা। এঁদের উপস্থিতিতেই পুরভোট আয়োজনে রাজ্যকে চরম হুঁশিয়ারি দেন বালুরঘাটের সাংসদ।
তিনি বলেন, ‘আগে কলকাতা এবং হাওড়ার ভোট কেন আয়োজিত হবে? রাজ্যের ঝুলে থাকা সব পুরসভার ভোট একসঙ্গে করতে হবে। নয়তো হাইকোর্টে মামলা ঠোকা হবে। নিরাপত্তার কারণে সব ভোট একসঙ্গে করানো না গেলে অন্ততপক্ষে ফল ঘোষণা একসঙ্গে করতেই হবে। ভোট একসঙ্গে হলে বিজেপির লড়াইয়ের ক্ষমতা রয়েছে।‘
ইতিমধ্যে শুধুমাত্র কলকাতা এবং হাওড়া পুরনিগমের ভোট প্রস্তুতি কেন? এই প্রশ্নের জবাব চেয়ে হাইকোর্টে পৃথক জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। এবার সেই পথে হাঁটবে বিজেপিও এদিন হুঁশিয়ারি রাজ্য সভাপতির। পুজোর আগেই মুখ্যমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছিলেন উৎসব মিটলেই রাজ্যে বকেয়া পুর ভোট আয়োজন করা হবে। ইতিমধ্যে দুর্গাপুজো এবং কালী পুজোর মাঝের সময়ে চার বিধানসভা আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। যার ফল ঘোষণা হয়েছে ২ নভেম্বর।
তারপরেই নবান্ন থেকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনে পুর ভোট নিয়ে সবুজ সঙ্কেত গিয়েছে। সেই সবুজ সঙ্কেত পেয়েই কলকাতা এবং হাওড়া পুরনিগমের প্রাথমিক ভোট প্রস্তুতি শুরু করেছে কমিশন। এবার দেখার বিজেপির হুঁশিয়ারির পর কোন সিদ্ধান্ত নেয় মমতা সরকার। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য রাজ্যের ১১৬টি পুরসভার ভোটগ্রহণ বকেয়া পড়ে। এদিকে, জ্বালানির উপর ভ্যাট কমানোর দাবিতে বিজেপির মিছিল। পুলিশি অনুমতি ছাড়াই এই মিছিলের আয়োজন। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে গার্ড রেল দিয়ে বিজেপির সদর দফতর আটকালো পুলিশ। তারপরেও মিছিলের প্রস্তুতি তুঙ্গে। পুলিশি এই সক্রিয়তাকে তোপ দাগেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। মিছিল আয়োজনের পুরোভাগে বিজেপির দুই সাংসদ জগন্নাথ সরকার এবং দেবশ্রী চৌধুরী।
বিজেপির রাজ্য অফিসের সামনে দলের নেতৃত্বের সঙ্গে পুলিশ কর্তাদের একপ্রস্থ বচসার দৃশ্য চোখে পড়েছে। পুলিশের মন্তব্য, ‘এই অতিমারি পরিবেশে কোনওভাবেই তারা মিছিল বের হতে দেবে না।’ বিজেপি নেতৃত্বের পাল্টা, ‘দরকার হলে পুলিশ আইনি পথে ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু মিছিল তারা করবেই।’ বিজেপি দফতরের বাইরে মিছিলে যোগদানে উপস্থিত দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী, জয়প্রকাশ মজুমদার-সহ অন্য রাজ্য নেতৃত্ব।
নিজের বক্তব্যে শুভেন্দু বলেন, ‘জ্বালানির দাম আরও কমাতে আমরা পথে নেমেছি। বিজেপি শাসিত সব রাজ্য ভাগের ভ্যাট কমিয়েছে। কিন্তু জ্বালানির দাম কমাতে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী রাস্তায় হাঁটলেও, এখন ভাগের কর কমাচ্ছেন না। বাংলার মেয়ে এখনও ঘুমাচ্ছেন। আমরা আইন ভাঙতে আসিনি, আমরা পেট্রোল- ডিজেলের দাম কমানোর দাবি নিয়ে এসেছি।’
বিজেপিকে যত মারবে, বিজেপি তত বাড়বে। এভাবেও সরব হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তার বার্তা, ‘মাননীয়া আপনি ঘুম ভাঙুন। কেন্দ্রের মতো, আপনিও জ্বালানির উপর থাকা কর কমান।’
শুভেন্দু আরও বলেন, ‘বিদ্যুতের দাম বাড়ছে, তার প্রতিবাদ। উৎসব-পুজোগুলো বাদ দিয়ে পথে নামবে দল।’ এই মিছিলে বক্তব্য রাখেন দিলীপ ঘোষ। তার প্রশ্ন, ‘কেন রাজ্য দাম কমাচ্ছে না। আমরা আজ পথে নেমেছি দিদিমনির ঘুম ভাঙাতে। কীভাবে প্রশাসন চালাতে হয় মোদিজির থেকে শিখুন মুখ্যমন্ত্রী। দিদিমনি বলেছিলেন আজীবন বাংলার মানুষকে ফ্রি রেশন দেবেন। যেই কেন্দ্র আপদকালীন রেশন ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নিয়েছে, দিদির দল থেকে চিঠি লিখে সেই রেশন আরও ৬ মাস বাড়ানোর আবেদন করেছে।’
দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘দিদিমনির কানে যে পর্দা পড়েছে, সেই পর্দা ভেদ করে আমাদের আওয়াজ পৌঁছতে এই কর্মসুচি।’ তিনি বলেন, ‘আপনি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে পেট্রোল – ডিজেলের দাম কমাতে বলেছিলেন। উনি কমিয়েছে, এবার আপনি কমান! আপনি কথায় কথায় বলেন এগিয়ে বাংলা। রাজ্যের অন্য সব রাজ্য ভাগের কর কমিয়ে দিয়েছে। আপনি কমাচ্ছেন না কেন? আসলে কাটমানিতে এগিয়ে বাংলা।’