|
---|
জাহির হোসেন মণ্ডল, নতুন গতি : আজ ২৩শে জানুয়ারী দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী। বীর স্বাধীনতা সংগ্রামীকে তাঁর জন্মদিনে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে চারিদিকে। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু একজন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নায়ক। বাংলা থেকে নেতাজীর উত্থান ভারতীয় ইতিহাসে অতুলনীয়। তিনি দেশপ্রেম, সাহসিকতা, নেতৃত্ব, ঐক্য ও সৌভ্রাতৃত্বের প্রতীক।
নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু (অশ্বারোহী) মূর্তি যেটি
শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মােড়ে প্রতিষ্ঠিত সেটি ওনার ৭২তম জন্মদিবস উপলক্ষে,(২৩/০১/১৯৬৯) বোম্বাইয়ের ব্যাবসায়ী নরেশ ইয়াওয়ালকার ১৫ ফুট উঁচু চার টন ওজনের এই ব্রোজ্ঞ এর মূর্তি টি দেড় লাখ টাকা মূল্যে তৈরী করে দেন। মূর্তিটিকে স্থাপন করা হয় ১৬ ফিট উঁচু বেদীর উপর।এক বাঙালী শিল্পী সুনীল পাল বেদীর উপরের দিকে নেতাজীর জীবন থেকে চিত্রমালা ও বাণীর সারাংশ খচিত করেন।এই মূর্তিটি ময়দানে আউটরাম ধাঁচে ধাবমান ঘােড়ার পিঠে খানিকটা আড়াআড়ি ভাবে এবং ঘােড়ার লেজ ভূমির সমান্তরালে করা হয়েছে।
মূর্তিটি উদ্বোধন এর দিন ১১.৪৫ মিনিটে পুলিশ ব্যান্ড বন্দে মাতরম ও ইকবালের লেখা “সরে জাহান সে আচ্ছা” বাজনা বাজিয়ে শুরু হয়। এরপর কাজী সব্যসাচীর আবৃত্তি ,” দূর্গম গিরি কান্তার মরু দুস্তর পারাবার ” এবং কাজী অনিরুদ্ধ পরিচালনায় গাওয়া হয় আজাদ হিন্দ ফৌজের কুচকাওয়াজ এর গান “কদম কদম বাড়ায়ে যা, খুশীকা গীত গায়ে যা “।
এরপর আসেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র ও স্পীকার বিজয় ব্যানার্জি, মেয়র গােবিন্দ চন্দ্র দে ও মুখ্য অতিথি জাতীয় অধ্যাপক সত্যেন্দ্রনাথ বসু মহাশয়।
এরপর বাসন্তী দেবীর টেপ করা কন্ঠে সুভাষ চন্দ্র বসুর সম্পর্কে কিছু সুন্দর কথা এই অনুষ্ঠানে শােনানাে হয়। অনুষ্ঠান উপলক্ষে ভারতের রাষ্ট্রপতি জাকির হােসেন,প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও উপপ্রধানমন্ত্রী মােররাজী দেশাইের পাঠানো বাণী জনগণকে পড়ে শোনানো হয়।সবশেষে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কন্ঠে “তোমার আসন শূন্য আজি হে বীর পুণ্য কর” এইভাবেই জনগন ভারতবর্ষের বীরশ্রেষ্ঠ সন্তানকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এদিকে নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি যেমন হচ্ছে তেমনি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু-রও জন্মদিন ১২৫ বছরে পড়ছে। সেই জন্য রাজপথে বসানো হচ্ছে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তি।
ইন্ডিয়া গেটের কাছে রাজপথে অবশেষে বসছে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তি। রাজপথে যে ক্যানোপিতে পঞ্চম জর্জের মূর্তি ছিল এবং তা সরিয়ে দেওয়া হয়, সেখানেই এই মূর্তি বসছে। এমনটাই জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদ।
“আমি এমন এক সমাজ চাই যেখানে ব্যক্তি প্রবল বাধানিষেধের ভারে পীড়িত হবে না, যে সমাজে জাতিভেদ প্রথার কোনও স্থান হবে না, যে সমাজে নারী স্বাধীন হবে, পুরুষের সঙ্গে সমান অধিকার ভোগ করবে এবং নিজে সকল নাগরিক এবং রাজনৈতিক দায়িত্ব গ্রহণ করবে; যে সমাজ সকল বর্ণবৈষম্যরহিত হবে এবং যে সমাজে সকলে শিক্ষা এবং বিকাশের সমান সুযোগ পাবে। আমি সকল প্রকার বিদেশী আধিপত্যবর্জিত এক রাষ্ট্র চাই, যে রাষ্ট্র আমাদের সমাজের সঙ্গে একযোগে কাজ করবে। সর্বোপরি, আমি এমন এক সমাজ এবং এমন এক রাষ্ট্র চাই যা কেবলমাত্র ভারতীয়দের সব অভাবই দূর করবে না, স্বাধীন জগতের কাছে এক আদর্শরূপেও কাজ করবে। আমি এই সমাজ এবং রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখি।
আমার তরুণ বন্ধুগণ, এই স্বপ্ন ছাড়া আপনাদের দেবার মতো আমার আর কিছুই নেই। যে স্বপ্ন আমাকে সীমাহীন কর্মশক্তি এবং আনন্দ সরবরাহ করেছে এবং যে স্বপ্নের ভিতরে আমার জীবন আত্মসিদ্ধি লাভ করেছে, সেই স্বপ্ন আমি আপনাদের উপহার দিচ্ছি।”
নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু।