বামফ্রন্টের ব্রিগেড সমাবেশের সারাংশ

নবাব মল্লিক, নতুন গতি, কলকাতা :
লোকসভা ভোটের আগে ভাঙা সংগঠন পুনরুজ্জীবনের বার্তা দিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। শুরুতেই তাঁর পরামর্শ, ব্রিগেডের জন্য যেভাবে প্রস্তুতি সভা হয়েছে, সেভাবেই এলাকায় এলাকায় সভা করুন। তাঁর বার্তা,   বিজেপি-তৃণমূল এক বৃন্তে দুটি ফুল। আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে বুথভিত্তিক সংগঠন তৈরি করে এলাকায় এলাকায় সভা করুন

    ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা দেবব্রত বিশ্বাস বলেন, ”আমরা অনুদান চাই না। খেটে খাওয়া মানুষের অধিকার লড়াই। গোটা দেশজুড়ে মানুষের জোট তৈরি হচ্ছে। ঘৃণা ও বিদ্বেষের রাজনীতি করছে বিজেপি”।

    আরএসপি নেতা ক্ষিতি গোস্বামী বলেন, ”পুঁজিবাদী ব্যবস্থার পক্ষে নয় বাংলা। বাংলা বামপন্থার পথ দেখিয়েছে। সীমাহীন ঔদ্ধত্য শাসক দলের। শুধু মিথ্যা কথা বলে রাজ্য সরকার। দেশে টাকা লুঠে বিদেশে পালিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের টাকার উপরেও নজর পড়েছে মোদী সরকারের। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ওনার পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিজেপি। তাতে কপালে ভাঁজ পড়েছে মমতার। বিজেপি একটি সাম্প্রদায়িক শক্তি। যুদ্ধাস্ত্র কিনে ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করছে। হাজার হাজার কোটি টাকা আত্সাতের অভিযোগ উঠেছে মোদীর বিরুদ্ধে”।

    সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির কথায়, ”জনসমুদ্র দেখে ভরসা পাচ্ছি, দিল্লি থেকে মোদীকে হঠাবেন জনতা। বাংলা থেকে হঠাবেন দিদিকে। ভোট দিতে না দিলে জনসমুদ্র নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। দেশের অন্নদাতারা আত্মহত্যা করেছেন। যুবকরা চাকরি খুঁজছেন। নোটবন্দির কারণে ব্যবসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কাজ হারিয়েছেন মানুষ। দেশের সম্পত্তি বেচে দিচ্ছেন মোদী। মোদীর বন্ধু ১৫ হাজার কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন। সেই ভুল শোধরাতে ব্যাঙ্কগুলির বিলয় শুরু হয়ে গিয়েছে। লুঠের জন্য আইনও বদলে দিচ্ছে বিজেপি। ইলেকটোলার বন্ডের টাকা যাচ্ছে বিজেপির তহবিলে”।

    ব্রিগেডের ভিড় দেখে সূর্যকান্ত মিশ্রের মন্তব্য, ”আমাদের বক্তা মাত্র ৯ জন। অথচ শোনার লোক ওদের দ্বিগুণ। মুখ্যমন্ত্রীর ব্রিগে়ডে ৪ জন বিজেপির লোক ছিলেন। যাঁকে (পড়ুন অটলবিহারী বাজপেয়ী) বাড়িতে ডেকে মালপোয়া খাইয়েছিলেন, তাঁর মন্ত্রিসভায় যিনি অর্থমন্ত্রী ছিলেন সেই যশবন্ত সিনহা ব্রিগেডে ছিলেন। শত্রুঘ্ন সিনহা, অরুণ শৌরিরাও এসেছিলেন। এরা কেউ বিজেপি ছাড়েননি। এরা মোদীকে হঠাতে চান কারণ মন্ত্রী হননি। নীতি বিসর্জন দেননি। মনে করুন, এই ব্রিগেড থেকে বামপন্থীরা বলেছিলেন, বিজেপি হঠাও দেশ বাঁচাও

    মহম্মদ সেলিম বলেন, ”কেউ পার পাবে না। আমরা শপথ নিতে এসেছি। এটা লাল ঝান্ডার দম্ভ নয়। বাংলার বুকে নতুন করে শুরু করব। তার শপথ নিতে এসেছি। এটা কাউকে প্রধানমন্ত্রী করার জন্য নয়। এটা দেশ বাঁচানোর লড়াই। সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে এই লড়াই। দিদি টিকে আছেন, কারণ দাদার সঙ্গে সেটিং করেছেন। পাঁচবছর ধরে দেশের মানুষকে ভাঁওতা দেওয়া হয়েছে। যেতে যেতে বাজেটের নামে আবার জুমলা উপহার দিয়েছে মোদী সরকার। ৫ বছর সুযোগ পেয়েছিলেন। এখন কৃষকের কথা মনে পড়ল। নাসিক, দিল্লি ও তামিলনাড়ুতে কৃষকরা মিছিল করেছিলেন, তখন দেখেননি। ধান চাষিরা ফসলের দাম পাচ্ছেন না। কৃষকরা ভিক্ষা চায় না, অধিকার চায়”