বছরের কিশোরীকে ধর্ষণ ও তার জেরে অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকার গর্ভপাত করানোর ঘটনায় দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে

নিজস্ব সংবাদদাতা : বন্ধুর কিশোরী মেয়েকে দেখাশোনার নামে লাগাতার ধর্ষণের অভিযোগ। নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে স্ত্রীর সাহায্যে গর্ভপাত করানো। একের পর এক অভিযোগে দিল্লির নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রকের ডেপুটি ডিরেক্টরকে (Delhi officer) বরখাস্ত করেছিল কেজরিওয়াল সরকার। সাসপেন্ড হওয়ার পরে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন সরকারি অফিসার। তাঁকে হন্যে হয়ে খুঁজছিল পুলিশ। সোমবার স্ত্রীকে নিয়ে চুপিচুপি দিল্লি থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেই ধরা পড়লেন পুলিশের জালে। সস্ত্রীক পদস্থ সরকারি কর্তাকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ।

    পুলিশ জানায়, ১৪ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণ ও তার জেরে অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকার গর্ভপাত করানোর ঘটনায় দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতরা হল দিল্লির নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরে ডেপুটি অধিকর্তা (Delhi officer) ৫১ বছর বয়সি প্রেমোদয় খাখা এবং তাঁর স্ত্রী ৫০ বছর বয়সি সীমা রানি। দিল্লি পুলিশের শীর্ষ আধিকারিক সাগর সিং খালসি বলেছেন, “নির্যাতিতার স্থানীয় অভিভাবক ছিলেন অভিযুক্তরা। কিশোরীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত প্রেমোদয় খাখা এবং ধর্ষণের পর নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তার গর্ভপাত করানোর ঘটনায় অভিযুক্ত সীমা রানি।”জানা গেছে, ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ মাস ধরে ১৪ বছর কিশোরীকে ধর্ষণ করেছিলেন অভিযুক্ত প্রেমোদয় খাখার। নাবালিকা ছিল খাখার বন্ধুর মেয়ে। অভিযুক্তকে মামা বলে ডাকত মেয়েটি। লাগাতার ধর্ষণের জেরে গর্ভবতী হয়ে পড়ে নাবালিকা। বিষয়টা জানাজানি হওয়ার ভয়ে অভিযুক্তের স্ত্রী সীমা রানি নাবালিকাকে ওষুধ খাইয়ে গর্ভপাত করান। সেই কাজে অভিযুক্তের ছেলেও সঙ্গ দেয়।

    জানাজানি হওয়ার ভয়ে অভিযুক্তের স্ত্রী সীমা রানি নাবালিকাকে ওষুধ খাইয়ে গর্ভপাত করান। সেই কাজে অভিযুক্তের ছেলেও সঙ্গ দেয়।

     

    মেয়েটিকে মুখ বন্ধ রাখার হুমকি দেওয়া হয়। কিন্তু গর্ভপাতের পর কিশোরী মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। তাকে তাড়া করে আতঙ্ক। নাবালিকার পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, বাড়ি নিয়ে আসার পরেও ভয়ে গুটিয়ে থাকত কিশোরী। কারও সঙ্গে কথা বলত না। মাঝে মধ্যেই প্যানিক অ্যাটাক হত তার। কয়েকদিন আগে অসুস্থ হয়ে পড়ায় দিল্লির একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে মেন্টাল থেরাপি শুরু হয়। তখনই মনোবিদকে আসল সত্যিটা জানায় কিশোরী। পরিবারের তরফে তখন দিল্লি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়।

    নাবালিকাকে ধর্ষণের ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পরই মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল দিল্লির নারী ও শিশু সুরক্ষা দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টরের পদ থেকে প্রেমোদয় খাখাকে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দেন এবং এই ঘটনায় মুখ্যসচিবের কাছে রিপোর্ট তলব করেন। দিল্লি পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না করায় ক্ষোভ প্রকাশও করে আপ সরকার। আবার দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিওয়াল ঘটনার তীব্র নিন্দা টুইট পোস্ট করেন। টুইটারে তিনি লেখেন, “মেয়েদের রক্ষা করা যার কাজ, সে যদি শিকারিতে পরিণত হয়, তাহলে মেয়েরা যাবে কোথায়! শীঘ্রই তাকে গ্রেফতার করা উচিত।”

    কিশোরী যে হাসপাতালে ভর্তি সেখানে এখন ধর্নায় দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান। স্বাতীর বক্তব্য, তাঁকে মেয়েটির সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। সবটাই আড়াল করার চেষ্টা করছে পুলিশ। হাসপাতালের ফ্লোরেই শুয়ে থাকতে দেখা গেছে স্বাতীকে। তিনি বলেছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না কিশোরীর সঙ্গে তিনি কথা বলবেন, ততক্ষণ হাসপাতালেই এইভাবে ধর্নায় থাকবেন তিনি।