|
---|
বাবলু হাসান লস্কর, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা : দক্ষিণ ২৪ পরগনা সুন্দরবন লাগোয়া গোসাবা থানার ছোট্ট মোল্লাখালির কুমিরমারি দ্বীপের বুধবারের বাজারের পশ্চিম পাশবর্তী এলাকায় বছর পঞ্চাশের তরতাজা যুবক ভোম্বল বৈষ্ণব। সুন্দরবনে গিয়েছিলেন মধু সংগ্রহ করতে। আর এই মধু সংগ্রহ করতে গিয়েই ঘটে বিপত্তি। বাঘ মামা তার উপর ঝাপিয়ে পড়ে,পরবর্তীতে তার জীবন কেড়ে নেয়। সঙ্গীদের সহযোগিতায় নিথর দেহটি নিয়ে আসা হয়। সুন্দরবন লাগোয়া ব্লক গুলির মানুষ জনের আর্থসামাজিক দিক জানতে আমাদের প্রতিনিধির কাছে উঠে এলো সেই চিত্র । দীর্ঘদিন চলা লকডাউন তারমধ্যে আম্ফান নামক ঘূর্ণিঝড়ে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা ধুলিস্যাৎ করে দিয়েছিল। আর তার ক্ষত না মিটতে না মিটতে লকডাউন।
আর এই লকডাউনে নুন আনতে পান্তা ফুরানো পরিবারের যে করুণ দুর্দশা সেই চিত্র সন্ধানে আমাদের প্রতিনিধি দল । সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকার অধিকাংশ মানুষদের কেবলমাত্র একটি কুঁড়েঘর । সুন্দরবনের মধু কাঁকড়া মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন আর তাদের এই করুন শোচনীয় অবস্থায় আমাদের সামনে উঠে আসায়। জলে কুমির ডাঙায় বাঘ তার উপরে লোকালয় হায়না রূপে মানুষের থাবা যেকোনো মুহূর্তে তাদের বিপদ আর এই বিপদকে পাথেয় করে জীবন জীবিকার সন্ধানে নদীতে মাছ কাঁকড়া ধরতে যান আর এই মাছ কাঁকড়া ধরার মুহূর্তেই বাঘের হানায় আহত নিহত হন এমনই পরিবার কুলতলির বিস্তীর্ণ এলাকায় কয়েক শ যাদের পরিবারের কর্তা ব্যক্তি বলতে নেই যেখান পরিবারের কর্তা তিনি সংসার পরিচালনা করেন এই সমস্ত পরিবারের সদস্যদের ঠিকমতো মেলেনা সুস্বাস্থ্য শিক্ষা ও বাসস্থানের আর তার উপরে দারিদ্রতার যে করুন ছবি উঠে আসছে। বিগত দিনে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে কুলতলির বিস্তীর্ণ এলাকার কয়েকটি পরিবারের সদস্য তারা বাঘের আক্রমণে নিহত হয়েছেন । তারপর আমফানে সুন্দরবন এলাকায় একেবারে তছনছ করে দিয়ে গিয়েছে । তাদের রুজি রোজগার এই মূহুর্তে এ বছরের মিলেছে মধু সংগ্রহ করার পাশ । সুন্দরবন লাগোয়া অফিস থেকে বৈধ কাগজপত্র দেখিয়ে পাস নিয়ে সুন্দরবনের মধু সংগ্রহ করতে যাচ্ছে। এবছরের লক্ষ্যমাত্রা আট মেট্রিক টন আর এই কোটা পূরণ করতে পারবে কি। যে সমস্ত মৌলেরা সুন্দরবন লাগোয়া জঙ্গলে মধু সংগ্রহ করতে গিয়েছেন এখনো তাদের ভাঁড়ে মধু মিলছে না তারা ভাবছে আরো কয়েকদিন গভীর অরণ্যে গেলে মিলতে পারে মধু তবে এ বছরের অফিসের কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের সম্মুখীন হয়ে জানালেন যে তেমন মৌমাছি দেখা যাচ্ছে না আর মৌমাছি না দেখা মেলায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এই মূহুর্তে তাদের বাসায় ফেরা সময়ের অপেক্ষা ।ঠিক মতো মিলছে না মধু ,আর এই মুহূর্তে মধু সংগ্রহ না করতে পারলে পরিবারের সদস্যদের মুখে দুই মুঠো অন্য তুলে দেওয়ার জন্য কোন উপায় নেই আর তাদের । মিলছে না পর্যাপ্ত মধু , তাই তারা গভীর অরণ্যে গিয়ে জীবন জীবিকার স্বার্থে এই মধু সংগ্রহ করছে।
এই মধু সংগ্রহ করার পরে তাদেরকে দিতে হয় ফরেস্ট অফিসে ২০১৯-২০ বছরের হিসাব অনুযায়ী প্রতিটি সদস্যকে ২৫ কিলোগ্রাম করে মধু দিতে হয়েছিল । আর একটি নৌকায় পাঁচ ব্যক্তি থাকে যাদের এক কুইন্টাল ২৫ কেজি মধু ফরেস্ট অফিস কে দিতে হয়। বিশাল অঙ্কের টাকা মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে নিয়েই তারা নদীতে নামে কয়েক দিনের খাবার পত্র পর্যাপ্ত পরিমাণে জল নিয়ে এই নদীতে নামে। আর এই নদীতে গেলেই ঘটে বিপত্তি কোন কোন পরিবার এই মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে বাঘের দ্বারা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন। তাদের পরিবারে না আছে কোন অর্থনৈতিক কাঠামো। নুন আনতে পান্তা ফুরায় এই সমস্ত পরিবারের গৃহকর্ত্রীরা আমাদেরকে জানান দিল ।